সোমবার, ১৪ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩০শে আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** ১০০ গজ দূরেই ক্যাম্প, তবু সোহাগকে বাঁচাতে কেন এল না কেউ—যা বললেন আনসারপ্রধান *** গণভবনকে বাস্তিল দুর্গের সঙ্গে 'তুলনা' করলেন ফরাসি রাষ্ট্রদূত *** শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে সমতায় ফিরল বাংলাদেশ *** বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ম্যুরাল ভেঙে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতিসৌধ’ নির্মাণকাজের উদ্বোধন কাল *** শেষ মুহূর্তের নাটকীয়তায় নেপালকে হারাল বাংলাদেশ *** মোসাদের হয়ে কাজ করতেন যৌন অপরাধী এপস্টেইন: কার্লসন *** মিয়ানমারে উলফার ক্যাম্পে ভারতের ড্রোন হামলার অভিযোগ, প্রতিশোধের হুমকি সংগঠনটির *** যশোরে কেন্দ্রের ভুলে বিজ্ঞানের ৪৮ জন ফেল, সংশোধনে জিপিএ-৫ পেল সবাই *** নিবন্ধন স্থগিত হলেও ‘নৌকা’ আওয়ামী লীগেরই *** ইসরায়েলের হামলায় আহত হন ইরানের প্রেসিডেন্টও, বেঁচে যান অল্পের জন্য

১০০ গজ দূরেই ক্যাম্প, তবু সোহাগকে বাঁচাতে কেন এল না কেউ—যা বললেন আনসারপ্রধান

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ১১:৫৯ অপরাহ্ন, ১৩ই জুলাই ২০২৫

#

মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর পুরান ঢাকায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের (মিটফোর্ড হাসপাতাল) ৩ নম্বর গেটের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে মো. সোহাগকে (৩৯) নৃশংসভাবে হত্যার সময় ১০০ গজ দূরে আনসার ক্যাম্পের অবস্থান থাকলেও বাহিনীর কেউ তাকে বাঁচাতে এগিয়ে না আসা নিয়ে আলোচনা–সমালোচনা চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং রাজনৈতিক পরিসরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তথা সরকারের ব্যর্থতার কথা বলা হচ্ছে।

আজ রোববার (১৩ই জুলাই) জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী রংপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে সোহাগকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। সেখানে থেকে ১০০ গজের মধ্যে আনসার ক্যাম্প ছিল; আনসারদের হাতে অস্ত্রও ছিল। কিন্তু কেউ তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি। অর্থাৎ বর্তমান সরকার পুলিশ প্রশাসনের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারছে না। সরকারের সঙ্গে প্রশাসনের সমন্বয় দেখা যাচ্ছে না, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয় দেখা যাচ্ছে না।

তবে এ ঘটনায় আনসার সদস্যদের দায়িত্ব পালনে অবহেলা বা দায় ছিল না বলে মনে করেন বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ঘটনার দিন আনসার সদস্যরা হাসপাতালের নির্ধারিত রোস্টার অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করেছেন। রোস্টারের বাইরে হাসপাতালের গেটের বাইরে স্বপ্রণোদিত হয়ে আনসার সদস্যদের দায়িত্ব পালনের সুযোগ ছিল না।

আজ বিকেলে রাজধানীর খিলগাঁওয়ে বাহিনীর সদরদপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে আনসার সদস্যদের দায়িত্ব পালনের পরিধি ও রোস্টার তুলে ধরে মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ জানান, সোহাগ হত্যার ঘটনা হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটে। সেদিন সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ৩ নম্বর গেটে রোস্টার অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করেছেন ১ জন আনসার সদস্য। এরপর সেখানে আনসার সদস্যের উপস্থিতি ছিল না। হাসপাতালে মোট নিয়োজিত আনসার সদস্যের সংখ্যা ৮০ জন। এর মধ্যে রোস্টার অনুযায়ী, সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ২৪ স্পটে দায়িত্ব পালন করেন ২৫ আনসার সদস্য।

আনসার ডিজি বলেন, ‘হাসপাতালের কোথায় কীভাবে আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন, সেটা নির্ধারণ করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তথা ডিরেক্টর ও ডিডি (প্রশাসন)। সোহাগ হত্যার ঘটনা বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে। তখন ঘটনাস্থল ৩ নম্বর গেটে দায়িত্ব পালন অবস্থায় কোনো আনসার সদস্যকে রাখেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সুতরাং, সোহাগ হত্যার ঘটনায় আনসার সদস্যদের অবহেলা বা ব্যত্যয় দেখার কোনো সুযোগ নেই।’

গত ৯ই জুলাই স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩ নম্বর গেট সংলগ্ন এলাকায় এক হৃদয়বিদারক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। লালচাঁদ ওরফে সোহাগ নামে এক ব্যবসায়ী স্থানীয় একদল সন্ত্রাসীর নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। তার শরীরের ওপর ভারী পাথর ফেলে তাকে হত্যা করা হয়।

মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ বলেন, ‘'ঘটনার সময় শ’য়ে শ’য়ে লোক সেখানে উপস্থিত ছিলেন, তাদের কেউ কেউ ভিডিও করছিলেন, কেউ নিকটস্থ আনসার ক্যাম্পে খবর দেননি, কল করেননি। কেউ ক্যাম্পে গিয়ে ঘটনা সম্পর্কে বলেননি। শুধু তাই নয়, হাসপাতালের আনসারের প্লাটুন কমান্ডারকেও জানাননি। যখন প্লাটুন কমান্ডার খবর পেয়েছেন, তখন তিনি ঘটনাস্থলে দৌড়ে আসেন, তখন ভুক্তভোগীর বুকের ওপরে উন্মত্ততা চলছিল। তখন তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে খবর দেন, বলা হয়, গেটের বাইরে এ রকম একটা ঘটনা ঘটছে। এরপরই ভিকটিমকে টেনে গেটের ভেতরে নেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। হাসপাতালের বাইরের ঘটনা বলে আনসারকে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।’

মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন