ছবি: সংগৃহীত
মারাঠি ভাষার পরিবর্তে হিন্দিতে কথা বলায় এক অটোরিকশাচালককে প্রকাশ্যে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন শিবসেনা ও মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার সমর্থকরা। ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যটির পালঘর জেলায় গতকাল শনিবার (১২ই জুলাই) এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, কিছুদিন আগে পালঘরের বিরার রেলওয়ে স্টেশনে ওই চালকের সঙ্গে উত্তর প্রদেশ থেকে আসা ভবেশ পাদোলিয়া নামের এক ব্যক্তির ভাষাকে কেন্দ্র করে বাগ্বিতণ্ডা হয়, যার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, চালককে মারাঠি ভাষায় কথা বলার অনুরোধ করা হলে তিনি বারবার বলছিলেন, ‘আমি হিন্দিতেই কথা বলব।’
ভবেশের দাবি, জনপরিসরে মারাঠি ভাষায় কথা না বলায় ওই চালককে তিনি প্রশ্ন করেছিলেন। জবাবে ওই চালক বলেন, তিনি হিন্দি এবং ভোজপুরি ভাষায় কথা বলতেই স্বচ্ছন্দ বোধ করেন। এই ভিডিও দেখে গতকাল বিরার রেলওয়ে স্টেশনের কাছে উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা (ইউবিটি) ও রাজ ঠাকরের নেতৃত্বাধীন মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার (এমএনএস) একদল সমর্থক ওই অটোরিকশাচালককে ঘিরে ধরেন।
এরপর চালকের গালে তারা একের পর এক চড় মারতে থাকেন। হামলাকারীদের মধ্যে ওই দুই কট্টর ডানপন্থী দলের নারী সদস্যরাও ছিলেন। পরে চালককে ভবেশ, তার বোন ও মহারাষ্ট্র রাজ্যের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়।
হামলাকারীদের অভিযোগ, কিছুদিন আগে ভাইরাল হওয়া চালকের সেই বক্তব্য মারাঠি ভাষা ও মহারাষ্ট্রের সাংস্কৃতিক প্রতীকের প্রতি ‘অপমানজনক’ ছিল। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন শিবসেনার বিরার শহরপ্রধান উদয় যাদব। তিনি পরে সংবাদমাধ্যমকে জানান, দলীয় সমর্থকরা ‘শিবসেনার কায়দায়’ চালককে জবাব দিয়েছেন।
উদয় বলেন, ‘মারাঠি ভাষা, মহারাষ্ট্র বা মারাঠিদের অপমান করার দুঃসাহস কেউ যদি দেখায়, তাহলে তাকে শিবসেনার কায়দায় জবাব দেওয়া হবে। আমরা চুপ করে বসে থাকব না।’
‘ওই চালক মারাঠি ও মহারাষ্ট্রকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করার ধৃষ্টতা দেখিয়েছিলেন। তাকে উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। আমরা তাকে রাজ্যবাসীর কাছে এবং যাদের তিনি অসন্তুষ্ট করেছেন, তাদের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেছি।’ যোগ করেন তিনি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।
পালঘর জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা পিটিআইকে বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমরা ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি দেখেছি এবং ঘটনার সত্যতা যাচাই করছি। এখন পর্যন্ত উভয় পক্ষের কেউই কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি।’
খবরটি শেয়ার করুন