বৃহস্পতিবার, ২৬শে জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১২ই আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘নিখোঁজ’ আয়াতুল্লাহ খামেনি এখন কোথায়, উৎকণ্ঠিত ইরানিরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০২:৩৬ অপরাহ্ন, ২৬শে জুন ২০২৫

#

ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। ছবি: খামেনির কার্যালয়

ইরানজুড়ে গুঞ্জন। দেশটির রাজধানী তেহরানের ক্যাফে থেকে শুরু করে পার্লামেন্ট ভবনের করিডর—সর্বত্র সবার মুখে একটাই প্রশ্ন—‘সর্বোচ্চ নেতা কোথায়?’ গত এক সপ্তাহে দেশজুড়ে যুদ্ধ, হামলা, প্রতিশোধ, যুদ্ধবিরতি—সবই ঘটেছে। অথচ আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির দেখা নেই। নেই কোনো বার্তা। নেই কোনো ছবি। খবর নিউইয়র্ক টাইমসের।

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের সরাসরি সম্প্রচারে উপস্থাপক মুখোমুখি হয়েছিলেন খামেনির দপ্তরের কর্মকর্তা মেহদি ফাজায়েলির। তার কাছে উপস্থাপক সোজা প্রশ্ন করলেন, ‘মানুষ খুব উদ্বিগ্ন। সর্বোচ্চ নেতার অবস্থা কী?’ 

ফাজায়েলির উত্তর রহস্যে মোড়া, ‘আমার কাছেও অনেক প্রশ্ন এসেছে। আমাদের সবার দোয়া করা উচিত। যারা তার নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন, তারা ঠিকঠাক কাজ করছেন। ইনশা আল্লাহ, আমাদের মানুষ বিজয় উদ্‌যাপন করবে তাদের নেতার পাশে দাঁড়িয়ে।’

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে খামেনিই দেশের সব বড় সিদ্ধান্তের শেষ কথা বলেন। অথচ গত এক সপ্তাহে দেশের বড় বড় সংকটের মধ্যেও তিনি প্রকাশ্যে দেখা দেননি বা কোনো বক্তব্য দেননি। কয়েক দিন আগেই আমেরিকা ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালায়।

এর জবাবে ইরান কাতারে অবস্থিত আমেরিকার একটি ঘাঁটিতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এরপর ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির চুক্তি হয়, যা মঙ্গলবার (২৪শে জুন) সকালের দিকে কার্যকর হয়েছে।

এসব ঘটনার মধ্যেও খামেনি নিখোঁজ। সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, নিরাপত্তার কারণে তিনি বাংকারে অবস্থান করছেন এবং ইলেকট্রনিক যোগাযোগ এড়িয়ে চলছেন, যাতে তাকে টার্গেট করে হত্যা করা না যায়। কিন্তু তার এ অনুপস্থিতি সবাইকে বিস্মিত ও আতঙ্কিত করে তুলেছে।

রাজনীতি ও সামরিক অঙ্গনে চাপা গুঞ্জন—তিনি কি বেঁচে আছেন? আহত? নাকি...! ইরানের ‘খানেমান’ নামে একটি রিয়েল এস্টেটভিত্তিক দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক মোহসেন খালিফে বলেন, ‘তার কয়েক দিনের অনুপস্থিতি আমাদের মতো যারা তাকে ভালোবাসি, তাদের গভীরভাবে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।’ 

তিনি বলেন, ‘যদি খামেনি মারা যান—যা দুই সপ্তাহ আগেও অকল্পনীয় ছিল—তবে তার জানাজা হবে সবচেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ ও ঐতিহাসিক।’

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে খামেনির অনুমতি ছাড়া দেশ এমন বড় কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। আমেরিকার ঘাঁটিতে হামলা বা ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির মতো সিদ্ধান্তের পেছনে তার মতামত ছিল কী না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। 

কারণ, সেনা কর্মকর্তারা এবং সরকারের উচ্চপর্যায়ের অনেকেই নিশ্চিতভাবে বলতে পারছেন না, তারা সাম্প্রতিক সময়ে খামেনির সঙ্গে সরাসরি দেখা করেছেন কী না বা কথা বলেছেন কী না।

আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন