অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টে প্রথম হিজাবি সিনেটর ফাতেমা পায়মান। ছবি: দ্য ইনডিপেনডেন্ট
অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টের ইতিহাসে প্রথম হিজাব পরা নারী সিনেটর ফাতেমা পায়মান তার এক সহকর্মীর বিরুদ্ধে যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ ও বর্ণবৈষম্যমূলক মন্তব্যের অভিযোগ এনেছেন। ফাতেমার অভিযোগ, একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে ওই পুরুষ সহকর্মী মদ্যপ অবস্থায় তাকে বলেছিলেন—‘চলো, তোমাকে কিছু ওয়াইন খাওয়াই, তারপর তুমি টেবিলের ওপর ওঠে নাচো দেখি।’ খবর ইনডিপেনডেন্টের।
আজ বুধবার (২৮শে মে) ব্রিটেন-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে—ফাতেমা পায়মান মুসলমান এবং তিনি মদ্যপান করেন না। তিনি দাবি করেছেন, পুরুষ সহকর্মীর ওই মন্তব্য তার ধর্মীয় পরিচয়কে লক্ষ্য করেই করা হয়েছিল এবং এটি ছিল অত্যন্ত অনুচিত।
এবিসি রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফাতেমা বলেছেন, “আমি মদ্যপান করি না। আমি ওই সহকর্মীকে বলেছিলাম—‘এই যে ভাই, একটা সীমা টানছি।’ তারপর আমি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করি।” ৩০ বছর বয়সী ফাতেমা জানান, তিনি ও তার প্রজন্মের জেনারেশন জেড সদস্যরা এ ধরনের অনুচিত আচরণকে চুপচাপ মেনে নেন না।
২০২২ সালে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া থেকে লেবার পার্টির টিকিটে নির্বাচিত হয়ে সিনেটর হন ফাতেমা। মাত্র ২৮ বছর বয়সে নির্বাচিত হয়ে তিনি ইতিহাস গড়েন। ২০২৪ সালেই তিনি লেবার পার্টি ত্যাগ করেন এবং একটি গ্রিনস প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়ে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে অবস্থান নেন। এরপর স্বতন্ত্র সিনেটর হিসেবে কিছুদিন থাকার পর তিনি ‘অস্ট্রেলিয়ান ভয়েস’ নামে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন।
ফাতেমা জানান, পার্লামেন্ট হাউসে সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে। আর এর পেছনে তরুণ রাজনীতিকদের সাহসী অবস্থান ও দৃশ্যমান উপস্থিতি বড় ভূমিকা রাখছে।
সিনেটর হয়ে পার্লামেন্টে আসার আগে ফাতেমা ফার্মেসি সহকারী ও শ্রমিক ইউনিয়নের সংগঠক হিসেবে কাজ করতেন। তার জন্ম আফগানিস্তানে, যেখানে এখন তালেবান শাসকগোষ্ঠী নারীদের স্কুল-কলেজে পড়াশোনা নিষিদ্ধ করেছে। ২০২২ সালে ‘অস্ট্রেলিয়ান মুসলিম রোল মডেল অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত হয়েছিলেন ফাতেমা।
এইচ.এস/