ফাইল ছবি (সংগৃহীত)
তিন বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যসচিব পর্যায়ের বৈঠক হচ্ছে না। ২০২২ সালের মার্চে নয়াদিল্লিতে শেষ বৈঠকটি হয়েছিল। বাংলাদেশ এ বৈঠক আয়োজনের ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়ে এলেও সাড়া দিচ্ছে না ভারত। প্রথা অনুযায়ী এ দফার বৈঠক ঢাকায় হওয়ার কথা।
স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পণ্য আমদানিতে ১৭ই মে ভারত বিধিনিষেধ আরোপ করায় উভয় দেশের বাণিজ্যসচিব পর্যায়ের বৈঠকের তাগিদ বেশি করে অনুভব করছে বাংলাদেশ। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে এ বৈঠক আয়োজনের ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তা পাঠানোর কথা নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনে। এরপর হাইকমিশন চিঠিটি ভারত সরকারের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা।
সচিবালয়ে আজ মঙ্গলবার (২০শে মে) বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বৈঠক শেষে বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, ভারতের জবাব এলে বোঝা যাবে কবে বৈঠক হতে পারে।
আজকের বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআইসহ বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নেতারা বৈঠকে অংশ নেন।
মাহবুবুর রহমান বলেন, যদি উভয় দেশের বাণিজ্যসচিব পর্যায়ের বৈঠক হয় তাহলে ভারতের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ নিয়ে দর-কষাকষি করা হবে।
তিনি বলেন, ‘অংশীজনদের মতামত নিলাম, ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও শুনলাম। পরিস্থিতির আর যাতে অবনতি না হয়, সে জন্য আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে। এ নিয়ে পরে সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টাদের সঙ্গেও আলোচনা করব। তবে স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য প্রবেশে ভারতের বিধিনিষেধ এলেও এ ব্যাপারে পাল্টা কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে না।’
ভারতের বিধিনিষেধ দুই দেশের ব্যবসায়ীদের জন্যই ক্ষতিকর বলে মন্তব্য করেন বাণিজ্যসচিব। তিনি বলেন, সচিব পর্যায়ের একটা ফোরাম আছে। সমস্যা সমাধানে এখন সে ফোরামে বৈঠক হবে।
স্থলপথে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানিতে ১৭ই মে বিধিনিষেধ আরোপ করে ভারত। এ সংক্রান্ত আদেশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরামে ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন (এলসিএস)/ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট (আইসিপি) দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমলপানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানি করা যাবে না। পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন বা এলসিএসের জন্যও তা প্রযোজ্য হবে।
ভারত সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, স্থলপথের বদলে দেশটির নভো সেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে তাদের আমদানিকারকরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন।
বাণিজ্যসচিব আরও বলেন, ‘ভারতের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। আমরা তাদের বলতে চাই, আসুন বসি এবং একটা সুরাহার পথ বের করি।’
এইচ.এস/
খবরটি শেয়ার করুন