ছবি: সংগৃহীত
মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-কে কটূক্তির অভিযোগে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ১৪টি বসতঘরে হামলা–ভাঙচুর–লুটপাটের ঘটনায় উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), মহিলা পরিষদ ও উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। সোমবার (২৮শে জুলাই) আলাদা তিনটি বিবৃতিতে তারা এ ঘটনায় উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছে।
গঙ্গাচড়া উপজেলার বেতগাড়ী ইউনিয়নে দুই দফায় হিন্দুদের বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বাসদ। দলটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ১৭ বছর বয়সের এক কিশোরের ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিত এই হামলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তাহীনতার চিত্র ফুটে উঠেছে।
পুলিশ সেই কিশোরকে গ্রেপ্তার করার পরেও উত্তেজনা সৃষ্টি করা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সাম্প্রদায়িক উন্মাদনা বলে মন্তব্য করেছে বাসদ। এ ঘটনায় দায়ীদের আইনের আওতায় আনা, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের নিরাপত্তা বিধান করা এবং উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে বাসদের বিবৃতিতে।
মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানুর দেওয়া বিবৃতিতে গঙ্গাচড়ায় ধর্ম অবমাননার অজুহাতে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার ঘটনায় উদ্বেগ ও শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। মহিলা পরিষদ বিবৃতিতে বলেছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও অরাজকতা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে লালমনিরহাটে ধর্ম অবমাননার অজুহাতে বাবা-ছেলেকে প্রকাশ্যে মারধর, রাজধানীর খিলক্ষেতে প্রকাশ্যে বুলডোজার দিয়ে মন্দির ভেঙে দেওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে মহিলা পরিষদ বিবৃতিতে বলেছে, এসব অপতৎপরতা দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক। এ ছাড়া এ ধরনের ঘটনায় আইনের প্রয়োগ না হওয়ায় জনমনে ঘৃণা, বিদ্বেষ ও বিভক্তি বিস্তারের সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
সব সাম্প্রদায়িক বিভেদ সৃষ্টির ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করে মহিলা পরিষদ বলেছে, এসব ঘটনায় দোষীদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেপ্তার ও উপযুক্ত শাস্তির দাবি নিশ্চিত করতে হবে। কারণ, বিচার বা শাস্তি হয় না বলে প্রায়ই এ ধরনের ঘটনা সমাজের মধ্যে ঘটে চলেছে। সব ধর্ম, বর্ণ, সম্প্রদায়ের মানুষের নিরাপত্তা ও মানবাধিকার নিশ্চিত করতেও সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে মহিলা পরিষদ।
উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী এক বিবৃতিতে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে গঙ্গাচড়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে ভাঙচুর, লুটপাট ও মারধরের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। উদীচীর সহসভাপতি মাহমুদ সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বিবৃতিতে এ হামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন