ছবি: সংগৃহীত
প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়ি ভেঙে ফেলছে বাংলাদেশ সরকার। আজ মঙ্গলবার (১৫ই জুলাই) এই ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ময়মনসিংহের হরিকিশোর রায় চৌধুরী রোডে অবস্থিত শতবর্ষী এই বাড়ি সত্যজিৎ রায়ের দাদা বিখ্যাত সাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীর সম্পত্তি ছিল। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
বাড়িটি ভেঙে ফেলার বিষয়ে এক্স মাধ্যমে এক পোস্টে মমতা লিখেছেন, ‘এই সংবাদ অত্যন্ত দুঃখের। রায় পরিবার বাংলার সংস্কৃতির অন্যতম ধারক ও বাহক। উপেন্দ্রকিশোর বাংলার নবজাগরণের একজন স্তম্ভ। তাই আমি মনে করি, এই বাড়ি বাংলার সাংস্কৃতিক ইতিহাসের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি বাংলাদেশ সরকার ও ওই দেশের সমস্ত শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাছে আবেদন করব, এই ঐতিহ্যশালী বাড়িটিকে রক্ষা করার জন্য। ভারত সরকার বিষয়টিতে নজর দিন।’
আনন্দবাজার পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে প্রচারিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলায় সত্যজিৎ রায়ের পারিবারিক বাড়ি ভেঙে ফেলার কাজ শুরু করল মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। সে দেশের সংবাদপত্র ‘দ্য ডেলি স্টার’ এবং ‘প্রথম আলো’ এই খবর প্রচার করার পরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে, দেশের জাতীয় সংবাদমাধ্যমে সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষের স্মৃতিজড়িত বাড়িটি ভেঙে ফেলার বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ময়মনসিংহ শিশু একাডেমি হিসেবে ব্যবহৃত এই বাড়ি বহু বছর ধরে অবহেলিত থাকায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। এই অবস্থায় আধা-পাকা একটি নতুন ভবন নির্মাণের জন্য বাড়িটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে।
বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বাড়িটি শত বছরেরও বেশি পুরোনো। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর এটি সরকারি মালিকানায় আসে।
দেশের গণমাধ্যমকে ময়মনসিংহ শিশু একাডেমির জেলা শিশুবিষয়ক কর্মকর্তা মো. মেহেদী জামান বলেন, ১০ বছর ধরে এই বাড়ি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। আর শিশু একাডেমির কার্যক্রম চলছে ভাড়া করা একটি স্থানে।
মেহেদী জানান, কয়েকটি কক্ষবিশিষ্ট আধা-পাকা ভবন নির্মাণ করে সেখানে একাডেমির কার্যক্রম চালানো হবে। কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়েই এই ভাঙার কাজ চলছে।
তবে ঐতিহাসিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ এমন একটি ভবন কেন ভেঙে ফেলা হচ্ছে—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ভবনটি শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। কারণ, তারা প্রায়ই ওই চত্বরে একত্র হয়।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সত্যজিৎ রায় সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষের স্মৃতিজড়িত বাড়ি
খবরটি শেয়ার করুন