ছবি: সংগৃহীত
শীতকালীন আগাম সবজি চাষের মাধ্যমে কৃষকরা এখন নিজেদের ভাগ্য বদলাতে সক্ষম হচ্ছেন। দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা এখন এক নতুন কৃষি সম্ভাবনার কেন্দ্রবিন্দু।
ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউসহ বিভিন্ন শাক-সবজি চাষ করে তারা শুধু স্থানীয় বাজারেই নয়, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করে ভাল দাম পাচ্ছেন। কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ এবং আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহার তাদেরকে সফলতা এনে দিয়েছে। এবছর অনেক কৃষকই আগাম সবজি চাষ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। আর তাদের সফলতার গল্প এখন অন্যদের জন্যও প্রেরণার উৎস।
এ উপজেলায় আগাম শীতকালীন সবজি চাষ করে আর্থিকভাবে যারা স্বাবলম্বী হয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম দুজন কৃষক বীরগঞ্জ উপজেলার শিবরামপুর ইউনিয়নের মাহানপুর গ্রামের কৃষক আব্দুর রশিদ ও মরিচা ইউনিয়নের পলাশবাড়ী গ্রামের কৃষক রমানাথ রায়।
আব্দুর রশিদ জানান, তিনি এক একর জমিতে স্থানীয় কৃষি অফিসের পরামর্শে ফুলকপি, বাঁধাকপি ও লাউ চাষ করেছেন। তিনি বলেন, ‘বীজ রোপণের ৪৫ দিনের মধ্যে ফুলকপি ও বাঁধাকপি বাজারজাত করার উপযুক্ত হয়ে গেছে। একই সঙ্গে লাউয়ের মাচাতেও ফল ধরেছে। আমি প্রতিবারের মতো এবারও ঢাকার কাওরান বাজার এবং গাজীপুরে পাঠাচ্ছি। আগাম সবজি উৎপাদন হওয়ায় দামও ভালো পাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ বছর আমার এক একর জমিতে ফুলকপি, বাঁধাকপি ও লাউয়ের চাষে প্রায় দেড় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে এক লাখ ৩০ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করেছি। এখনও ৩-৪ মাস পর্যন্ত এই তিন ধরনের সবজি বিক্রি চলবে। আশা করছি, আমার উৎপাদিত সবজি ৫ লাখ টাকার অধিক বিক্রি করতে পারব।’
বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘দিনাজপুর খাদ্যের জেলা হিসেবে সারা দেশে পরিচিত। গত কয়েক বছর ধরে বীরগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে শীতকালীন আগাম জাতের শাক-সবজি, ফুলকপি, বাঁধাকপি, আলু, লাউ, ঝিঙ্গা, বটবটি ও অন্যান্য শাক-সবজি চাষে কৃষকরা সফলতা অর্জন করেছেন’।ক
আরও পড়ুন: মিষ্টিপান চাষে উদাহরণ সৃষ্টি করলেন টাঙ্গাইলের জহুরুল
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. নুরুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘দিনাজপুর একটি কৃষি সমৃদ্ধ জেলা, যেখানে ধানসহ সব ধরনের রবি শস্য ব্যাপক হারে উৎপাদিত হয়। কৃষকদের ফসলের ভালো দাম নিশ্চিত করতে, কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীরা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছে।’
এভাবে আগাম সবজি চাষের মাধ্যমে বীরগঞ্জ উপজেলার কৃষকরা নিজেদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন, যা অন্যান্যের জন্য এক উদাহরণ।
এসি/ আইকেজে