বুধবার, ৩০শে জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৫ই শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে অংশ নেবেন খালেদা জিয়া: আবদুল আউয়াল মিন্টু *** ৩৯ সংসদীয় আসনের সীমানায় পরিবর্তন আসছে, খসড়া চূড়ান্ত *** সাংবাদিক মিলন ত্রিপুরার ওপর হামলার অভিযোগ তদন্তের আহ্বান সিপিজের *** সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে পারে ব্রিটেনও *** একাত্তর নিয়ে বক্তব্য, সমালোচনার মুখে আসিফ নজরুলের দুঃখ প্রকাশ *** জুলাই সনদের খসড়ার সঙ্গে ‘মোটামুটি’ একমত বিএনপি *** বিনা অনুমতিতে নূরুল কবীরকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য করা হয়েছে, প্রত্যাহারের অনুরোধ *** জনসংখ্যা বাড়াতে প্রত্যেক শিশুকে বছরে ৬২ হাজার টাকা করে দেবে চীন *** প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হলেন মাহফুজ আনাম, নূরুল কবীরসহ ১২ জন *** ইসরায়েলি দুই মন্ত্রীকে নেদারল্যান্ডসে ঢুকতে দেবে না দেশটির সরকার

এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চল

অভিবাসীদের জন্য বিশ্বের সেরা ৫ শহর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১০:০৭ পূর্বাহ্ন, ২৩শে ডিসেম্বর ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

ভাবছেন নতুন বছরে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে স্থায়ী হবেন। যারা এমন ভাবছেন তাদের জন্য ভালো খবর দিয়েছে ব্লুমবার্গ । বেতন, জীবনযাপন ব্যয় এবং বিভিন্ন পরিষেবা, কর প্রভৃতির নিরিখে অভিবাসীদের জন্য সম্প্রতি সেরা ৫টি শহরের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। 

১. টোকিও 

প্রতিবেদন অনুসারে অভিবাসীদের বসবাসের জন্য এই অঞ্চলের শীর্ষ সেরা শহর টোকিও। বেতন, আবাসন ব্যয়, ব্যক্তিগত কর, শিক্ষা ব্যয়সহ ১০টি সূচকের সবগুলোতেই অন্য শহরগুলোরে চেয়ে এগিয়ে টোকিও। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের অন্যতম অর্থনৈতিক কেন্দ্র টোকিওর আবাসন ব্যয়, কর, পরিষেবা ব্যয়, শিক্ষা এই অঞ্চলের অন্যান্য বড় শহরের তুলনায় অনেক কম। পাশাপাশি, জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বেতন কাঠামো এবং নিয়মিত বেতনবৃদ্ধির সূচকে অনেক এগিয়ে রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সরকার উচ্চশিক্ষিত ও দক্ষ অভিবাসীদের স্বাগত জানাতে সবসময়ই প্রস্তুত। যে কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শহরটিতে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অভিবাসীদের সংখ্যাও বাড়ছে।

স্বামীর চাকরিসূত্রে দুই বছর আগে নিজেদের দুই শিশুসন্তান নিয়ে টোকিও এসেছেন জার্মান নাগরিক জোহানা শোমেল। তিনি বলেন, ‘টোকিও তো বটেই, পুরো জাপানই খুব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন একটি দেশ। এখানে দূষণের মাত্রা অনেক কম। আমি এখানে আসার আগে বাচ্চাদের নিয়ে ভয়ে ছিলাম পরিবেশগত অবস্থা নিয়ে। কিন্তু টোকিওতে আসার অল্প সময়ের মধ্যেই সেই ভয় কেটে গেছে।’

‘তাছাড়া টোকিওর লোকজনও যথেষ্ট ভদ্র এবং সহৃদয়। শিশুদের আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য এ শহর খুবই চমৎকার।’ তবে টোকিওর একটি বড় সমস্যা হলো ভাষা। জাপানি ভাষা না শিখলে কোনো অভিবাসীর জন্য এখানে কাজ পাওয়া প্রায় অসম্ভব। তা তিনি যতই উচ্চশিক্ষিত বা দক্ষ হোন না কেন।’   

২. হংকং

টোকিওর মতো সাশ্রয়ী আবাসন ও শিক্ষা ব্যবস্থা এবং প্রায় দূষণমুক্ত পরিবেশ না থাকলেও হংকংয়ে বর্তমানে কর্মসংস্থানের সুযোগ এশিয়ার অন্যান্য শহরগুলোর তুলনায় অনেক বেশি। এর প্রধান কারণ অবশ্য করোনা মহামারি। করোনা মহামারির প্রথম দিকে হংকং থেকে নিজ দেশে ফিরে গিয়েছিলেন বিপুল সংখ্যক বিদেশি শ্রমিক। পরে চীনের কঠোর করোনাবিধির কারণে টানা আড়াই বছর নতুন অভিবাসী শ্রমিক প্রবেশ করতে পারেনি হংকংয়ে, ফলে বিভিন্ন খাতে শুরু হয়েছে ব্যাপক জনবল সংকট। মহামারির ধাক্কা পেরিয়ে গেলেও এই সংকট এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি চীনের শাসনাধীনে থাকা স্বায়ত্বশাসিত এই দ্বীপভূখণ্ড।

হংকংয়ে ব্যক্তিগত আয়করের হার এশিয়ার অন্যান্য শহরের তুলনায় বেশ কম। পাশাপাশি, প্রধানমন্ত্রী জন লি হংকংয়ে বিদেশিদের বাড়ি কেনা সহজ করতে করের হার হ্রাস করেছেন এবং উচ্চ আয়ের অভিবাসীদের জন্য বিশেষ ভিসা পরিকল্পনাও গ্রহণ করেছেন। এছাড়া বিভিন্ন খাতে শ্রমিক পর্যায়ে যে বেতন দেওয়া হয়, তাও বর্তমানে সন্তোষজনক।

৩. সাংহাই

চীনের বৃহত্তম শহর ও প্রধান অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত সাংহাই শিক্ষিত ও উচ্চ আয়ের অভিবাসীদের জন্যও চমৎকার শহর। করোনা মহামারির আগ পর্যন্ত শহরটিতে চীনা নাগরিকদের পাশাপাশি প্রচুর বিদেশি নাগরিক বসবাস করতেন। এই নাগরিকদের মধ্যে সাধারণ শ্রমিক থেকে কোটিপতি সবাই ছিলেন। তবে হংকংয়ের মতো চীনের কঠোর করোনাবিধির ধাক্কা এখনো পুরোপুরি সামলে উঠতে পারেনি সাংহাই। মহামারিপূর্ব সময়ের তুলনায় বর্তমানে সেখানে অভিবাসীদের সংখ্যা কম।

সাবেক আমেরিকান মুষ্টিযোদ্ধা মাইকেল অ্যাবোরো গত বেশ কয়েক বছর ধরে সাংহাইয়ে রয়েছেন। এখানে একটি ব্যয়ামাগারের চালান তিনি। অ্যাবোরো বলেন, ‘করোনা মহামারি দুই বছরের জন্য সাংহাইয়ের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা থামিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু সাংহাইয়ের বাসিন্দারা খুবই গতিশীল এবং উদার মানুষ। তারা সবসময়েই আমাদের পাশে ছিলেন এবং শেষ পর্যন্ত আমরা আবার স্বাভাবিক জীবনে ফেরত আসছি।

একই কথা বলেছেন চায়না ক্রসরোড নামের একটি কনসাল্টিং ফার্মের কর্মকর্তা ফ্রাংক সাইও। ‘করোনা মহামারির আগ পর্যন্ত হংকং ছিল সর্তিকার অর্থেই একটি সুন্দর, আকর্ষণীয় এবং বৈশ্বিক শহর। এখন যদিও অভিবাসীর সংখ্যা কম, কিন্তু এই শহরের আকর্ষণ তাতে এতটুকুও কমেনি। 

৪. সিডনি

প্রতিবেদনে এশিয়ার বাইরের একমাত্র শহর হিসেবে স্থান পেয়েছে অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ নিউ সাউথ ওয়েলসের রাজধানী সিডনি। এই শহরটি একদিকে যেমন অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে জনবহুল শহর তেমনি দক্ষ, শিক্ষিত এবং উচ্চ আয়ের অভিবাসীদেরও একটি কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য।

এশিয়া প্যাসিফিকের অন্যান্য শহরের তুলনায় সিডনির জীবনযাত্রার ব্যয় এবং আবাসন ব্যয় বেশি হলেও শহরটিতে শিক্ষাব্যয় বেশ কম। এছাড়া সিডনির আরো একটি সুবিধা হলো ভাষা। অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রভাষা ইংরেজি এবং দেশটির অন্যান্য শহরের মতো সিডনির ভাষাও ইংরেজি। ফলে ইংরেজি জানা দক্ষ ও শিক্ষিত অভিবাসীদের কাছে প্রিয় একটি গন্তব্য সিডনি।

যুক্তরাজ্য থেকে সিডনিতে গিয়ে স্থায়ী হওয়া কর্ন ফেরি বলেন, ‘এখানে জীবনযাত্রার ব্যয় বেশি, তবে সরকারি স্কুলপর্যায়ে শিক্ষার ব্যয় অনেক কম এবং অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষা ব্যবস্থাও খুব উন্নত।’ আর এখানে বিনোদন কেন্দ্রগুলোও খুব আকর্ষনীয়। আপনার কাছে অর্থ থাকলে ছুটি কাটানোর জন্য সিডনির মতো উপযোগী শহর খুব বেশি নেই,’। 

৫. সিঙ্গাপুর

তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছে নগররাষ্ট্র সিঙ্গাপুরের রাজধানী সিঙ্গাপুর সিটি। এই শহরের সবচেয়ে বড় ইতিবাচক দিক হলো করের নিম্ন হার এবং নিরাপত্তা। সিঙ্গাপুর সিটি বিশ্বের শীর্ষ অপরাধমুক্ত শহরগুলোর মধ্যে একটি। করোনা মহামারির আগ পর্যন্ত সিঙ্গপুরে আবাসন ব্যয় কম ছিল। কিন্তু মহামারির সময়ে এশিয়ার অনেক ধনী ব্যক্তি সিঙ্গাপুরে সম্পত্তি কেনার পর থেকে বর্তমানে সেখানে খানিকটা বেড়েছে অ্যাপার্টমেন্টের দাম।

এইচআ/ আই.কে.জে


শহর অভিবাসী এশিয়া প্যাসিফিক ২০২৪ ব্লুমাবার্গ

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন