ছবি: সংগৃহীত
পাশ্চাত্য ঘরনার সংগীত হিপহপ বা র্যাপ সং। ১৯৭০ এর দশকে আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে ডিজে কুল হার্ক এর হাত ধরে প্রথম এ সংগীতের সূচনা হয়। ডিজে নাচ, গ্রাফিতি, ভিন্নধর্মী গানের লিরিক আর আধুনিক উপস্থাপন এর সংমিশ্রণের র্যাপ সংগীত বয়স্ক শ্রোতাদের কাছে হয়তো খুব বোধগম্য ছিল না। তবে সারা বিশ্বে এখন তরুণদের কাছে ক্রমেই জনপ্রিয়তার শিখরে উঠছে র্যাপ সংগীত।
দেশে র্যাপ সংগীতের সর্বপ্রথম উত্থান হয় ১৯৯৪ সালে। পাশ্চাত্যে তখন পুরোদস্তর জায়গা করে নিয়েছে হিপহপ। এমন সময় পার্থ বড়ুয়া, আশরাফ বাবু ও আব্দুল ওয়াজেদ চারু ‘ত্রিরত্ন ক্ষ্যাপা’ নামে প্রকাশ করেন বাংলা র্যাপ গানের প্রথম অ্যালবাম। সে সময় অ্যালবামটি দর্শক মহলে বেশ উত্তেজনা তৈরি করেছিল।
র্যাপ সংগীত এর প্রসার বাড়ানোর মতো অবস্থা তখনো দেশীয় অঙ্গনে তৈরি হয়। এরপর ২০০৬ সালে আমেরিকা নিবাসী বাংলাদেশি তরুণ শিল্পীদের দল ‘স্টোইক ব্লিস’ প্রকাশ করে তাদের প্রথম অ্যালবাম ‘লাইট ইয়ারস অ্যাহেড।’ একই সময় দেশি এমসিস নামে গড়ে উঠে আরেকটি বাংলা র্যাপ গানের দল।
মূলত তাদের হাত ধরেই শুরু হয় বাংলা র্যাপ সংগীতের অন্তহীন যাত্রা। দেশি এমসিস এর শিল্পী সৈয়দ মোহাম্মদ সোহেল পরবর্তীতে আলাদাভাবে প্রতিষ্ঠা করেন বাংলা র্যাপের সবচেয়ে সফল দল ‘জালালি সেট’। এ দলের বাকি তিন সদস্য শাফায়াত, ডাবল এস ও সাধু।
তাদের ‘ঢাকা সিটি’, ‘সুরা টার্গেট’, ‘বনবাসের সাধন’, ‘পাঙ্খা’, ‘পারলে ঠেকা’ গানগুলো বাংলা র্যাপেই নয়। বরং সংগীত অঙ্গনে বিস্তর প্রভাব সৃষ্টি করে। দলটি ভেঙে যাওয়ার পর সর্বশেষ ২০২২ সালে তাদের একসঙ্গে পাওয়া গেছে কোক স্টুডিও বাংলার ‘ভবের পাগল’ গানে।
দেড় দশকের বেশি সময় ধরে পুরোদমে বাংলা হিপহপ করে চলছেন আসিফুল ইসলাম সোহান। । বাংলা র্যাপ সংগীত নিয়ে আন্তর্জাতিক মাধ্যমেও সাড়া ফেলেছেন এ শিল্পী। কামরাঙ্গীর চরের শিশু রানাকে নিয়ে তবীব মাহমুদের গানও বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
‘ব্যবসার পরিস্থিতি’ বয়ান করে জনপ্রিয়তা পান আলী হাসান। অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় ভাষায় র্যাপ করে শারা জাগিয়েছেন সেজান ও হান্নান। ‘কথা কন ঠিক না বেঠিক’, ‘মাদুলি’, ‘কোড ৩৬’সহ বেশ কিছু গান দিয়ে পরিচিতি পেয়েছেন সিফু ৩৬ তথা সাইফ খান।
এভাবে একসময়ের স্বল্প গণ্ডির বাংলা র্যাপ সংগীত এখন হয়ে উঠছে গণমানুষের ভাষার গান। সেই সঙ্গে নাটক, সিনেমা, ওয়েব-সিরিজসহ সংস্কৃতির বিভিন্ন ধারার গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
এইচ.এস/
খবরটি শেয়ার করুন