বুধবার, ৯ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৪শে আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** বাংলাদেশি পণ্যে ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ নিয়ে আজ দুই দেশের প্রতিনিধিদের বৈঠক *** সামরিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র, স্বীকার করল ইসরায়েল *** হাইকোর্টের ক্ষমতা দেশবাসী জেনেছে ল রিপোর্টিংয়ের মাধ্যমে: অ্যাটর্নি জেনারেল *** তবে কী শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাচ্ছেন ট্রাম্প *** ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ প্রসঙ্গে যা বলছে বিজিএমইএ *** সাবেক ৮ সচিবসহ ১২ জনের ফ্ল্যাট বাতিল *** তীব্র গরমে গ্রিসে বন্ধ হলো অ্যাক্রোপলিস, সতর্কতা ইউরোপজুড়ে *** কুশলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য ২৮৬ *** এক কার্গো এলএনজি ও ৩০ হাজার মেট্রিক টন সার কিনবে সরকার *** ইরান থেকে দ্বিতীয় দফায় দেশে ফিরলেন ৩২ নাগরিক

নারীর প্রতি সহিংসতাকে প্রশ্রয় দিচ্ছে কিছু আইনের পরিবর্তন: ফওজিয়া মোসলেম

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ১০:৫৬ অপরাহ্ন, ৮ই জুলাই ২০২৫

#

মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। ছবি: সংগৃহীত

লৈঙ্গিক বৈষম্যের ধারণা, চেতনা ও কাঠামো যতদিন সমাজে থাকবে, ততদিন নারীর প্রতি সহিংসতা চলবে বলে মন্তব্য করেছেন মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। তিনি বলেন, বর্তমানে কিছু আইনের পরিবর্তন নারীর প্রতি সহিংসতাকে আরও প্রশ্রয় দিচ্ছে। যেমন যৌতুকসংক্রান্ত মামলায় এখন নারীকে আইনগত সহায়তা কমিটির অনুমতি নিতে হচ্ছে, যা বিচারপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে বড় বাধা।

আজ মঙ্গলবার (৮ই জুলাই) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মহিলা পরিষদের আনোয়ারা বেগম-মুনিরা খান মিলনায়তনে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘নারীর প্রতি সহিংসতা: নারী সাংবাদিকদের ভাবনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে মহিলা পরিষদ।

সভায় আলোচনায় অংশ নেন মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত নারী সাংবাদিকরা। সভায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত নারী সাংবাদিকরা পেশাগত জীবন ও সমাজজীবনে সহিংসতা, বৈষম্য ও হয়রানির বাস্তব অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।

ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক রাফিয়া চৌধুরী বলেন, নারীদের শিক্ষার হার বাড়লেও তারা এখনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হয়ে অবস্থান নিতে পারছেন না। কিছু ক্ষেত্রে অবস্থান নিলেও তা দীর্ঘ মেয়াদে ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। সমাজের কাঠামোগত বাধা নারীর প্রতিবাদী কণ্ঠকে চাপা দিতে সক্ষম হচ্ছে।

গণমাধ্যমকর্মী শাহনাজ পারভীন এলিস বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনকারীরা নারীর ওপর সহিংসতার ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিচ্ছে না। গণমাধ্যমেও এসব নির্যাতনের খবর যথাযথভাবে উঠে আসে না এবং অনেক ক্ষেত্রেই সংবেদনশীলতা বিবেচনায় রাখা হয় না।

সাংবাদিক নাদিরা কিরণ বলেন, বর্তমান সময় নারীদের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক। অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা মূলধারার গণমাধ্যমে আসে না। আইনের প্রয়োগ না থাকায় অপরাধীরা শাস্তি পায় না। তিনি নিজের কর্মক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে বলেন, গণমাধ্যমে সংস্কার হলেও তা অযোগ্য ব্যক্তির হাতে। নারী সাংবাদিকেরা কোনো ইস্যু নিয়ে কাজ করতে গেলেও বাধার সম্মুখীন হন।

কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তাহীনতা ও লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য নিয়ে শাহনাজ মুন্নী অভিযোগ করেন বলেন, গণমাধ্যমে নীতিনির্ধারক পর্যায়ে নারীদের অবস্থান নেই। অনেক প্রতিষ্ঠান নীতিগতভাবেই নারী কর্মী নিয়োগে অনাগ্রহী। এ ধারা অব্যাহত থাকলে নিউজরুমগুলো নারীবিহীন হয়ে পড়বে। তিনি আরও বলেন, নিউজরুমের এমন পরিবেশ তৈরি হয়েছে, যেখানে অনেক নারী বাধ্য হয়ে চাকরি ছেড়ে দিচ্ছেন।

সভায় সংখ্যালঘু নারীদের বিষয়ে কথা বলেন দেশ রূপান্তরের প্রধান প্রতিবেদক উম্মুল ওয়ারা সুইটি। তিনি বলেন, সংখ্যালঘু নারীদের ওপর সহিংসতার ঘটনা প্রায়ই গণমাধ্যমে উপেক্ষিত থাকে। তিনি মহিলা পরিষদকে এ বিষয়ে সক্রিয় অ্যাডভোকেসি গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

ভোরের কাগজের সেবিকা দেবনাথ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সহিংসতার প্রভাব তুলে ধরে বলেন, দেশে ৩৭ শতাংশ মানুষ ফেসবুকে বিশ্বাস করেন। ভিউ বাড়ানোর ব্যবসার কারণে ভুক্তভোগীরা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তিনি এসব ইস্যু তদারকির ওপর জোর দেন।

ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের জান্নাতুল রুহি বলেন, নারীদের সংস্কৃতিগতভাবে কাঠামোবদ্ধ করে রাখা হয়, যা সমাজে তাদের স্বাধীন চলার পথে অন্তরায়। কালবেলার রীতা ভৌমিক জানান, তিনি ৯টি ট্রাইব্যুনাল ঘুরে দেখেছেন, যেখানে অনেক মামলাই সঠিকভাবে করা হয়নি। ভুক্তভোগীরা তাদের অভিজ্ঞতা আদালতে সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারেন না, যা বিচারপ্রক্রিয়ায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

মুক্ত আলোচনায় আরও অংশ নেন সংবাদের নাসরিন গীতি, সমকালের দ্রোহী তারা ও আজকের পত্রিকার সাংবাদিক সেলিনা আক্তার।

জে.এস/

মহিলা পরিষদ নারী সাংবাদিক

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন