শুক্রবার, ১লা আগস্ট ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৬ই শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** থানা হোক ন্যায়বিচারের প্রথম ঠিকানা: আইজিপি *** জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের প্রথম জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ ‘অদম্য-২৪’ উদ্বোধন *** বিশ্ব রেকর্ড গড়ার পর সোনাও জিতলেন ‘ম্যাজিক’ মারশাঁ *** নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ-আ.লীগ নেতাকর্মীদের ‘গোপন বৈঠক’ ঘিরে গ্রেপ্তার ২২, সেনা হেফাজতে এক মেজর *** জুলাই সনদ আইনের ঊর্ধ্বে: সালাহউদ্দিন আহমদ *** ইসিতে আয়-ব্যয়ের হিসাব দিল বিএনপি-জামায়াতসহ ২৯ দল *** সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে পর্তুগাল *** রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হবে উভয় কক্ষের সদস্যদের গোপন ভোটে *** ১৮৫ বছরের পুরোনো বুনো মহিষের শিং পাহাড়পুর জাদুঘরে হস্তান্তর *** প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের ৩৬তম সভা অনুষ্ঠিত

নিরাপদ মাতৃত্ব নারীর অধিকার

উপ-সম্পাদকীয়

🕒 প্রকাশ: ০৬:০০ অপরাহ্ন, ২৮শে মে ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

রবি হক

২৮শে মে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস। বাংলাদেশ ১৯৯৭ সাল থেকে দিনটি পালন করে আসছে। ২০১৫ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ উদ্যোগকে টেকসই উন্নয়নে অন্তর্ভুক্ত করে। সরকারের পাশাপাশি উন্নয়ন সহযোগী সংগঠনগুলো নিরাপদ মাতৃত্বের জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

গর্ভকালীন যত্নের লক্ষ্য হলো মা ও শিশুর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা এবং গর্ভজনিত জটিলতা প্রতিরোধ বা সেগুলোর চিকিৎসা করা। নিরাপদ মাতৃত্ব হলো—গর্ভ, প্রসবকালীন ও প্রসব-পরবর্তী সময়ে একজন নারীর জন্য নিরাপদ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা।

নিরাপদ মাতৃত্বের জন্য বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। যেমন- গর্ভধারণের ৪ থেকে ৮ মাসের মধ্যে মাকে দুই ডোজ টিকা নেওয়া, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি পুষ্টিকর ও সুষম খাবার খাওয়া, দিনের বেলায় কমপক্ষে ২ ঘণ্টা বিশ্রাম নেওয়া, গর্ভকালীন ভারী কাজ করা থেকে বিরত থাকা, দীর্ঘ সময় ক্লান্তিকর ভ্রমণ ও ধূমপান না করা এবং ছোঁয়াচে রোগে আক্রান্ত কোনো রোগীর সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকা।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গর্ভধারণ ও প্রসবজনিত জটিলতার কারণে প্রতি বছর পৃথিবীতে প্রায় ৩ লাখ ৩০ হাজার নারীর মৃত্যু হয় এবং ২৬ লাখ শিশু মৃত জন্ম নেওয়াসহ ৩০ লাখ নবজাতক অকালে মারা যায়। বিশ্বব্যাপী প্রতিদিন ৮৩০ জন মা মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশে প্রতি বছর ৫ হাজার ৪৭৫ জন মা এবং প্রতিদিন প্রায় ১৫ জন মা মৃত্যুবরণ করেন। 

বর্তমানে দেশে প্রতি ১ লাখ জীবিত সন্তান জন্ম দিয়ে ১৭২ জন মা মৃত্যুবরণ করেন। মোট মাতৃমৃত্যুর ৭৩ শতাংশই প্রসব-পরবর্তী সময়ে ঘটে। যাদের ৫৬ শতাংশ প্রসবের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মারা যায়। এসব মাতৃমৃত্যুর ৩১ শতাংশই রক্তক্ষরণের কারণে ঘটে। ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি লাখ নবজাতকের জন্মে মাতৃমৃত্যু ৭০ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে সরকার।

দেশে মাতৃমৃত্যুর হার কমা ছাড়া নিরাপদ মাতৃত্বের আর কোনো সূচকে উন্নতি হয়নি। এখনো ৩৩ শতাংশ নারীর অদক্ষ ধাত্রীদের হাতে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বাড়িতে প্রসব হয়। ৬১ শতাংশ অন্তঃসত্ত্বা চারবার প্রসব-পূর্ব সেবা পান না। মাত্র ৪৯ শতাংশ মায়ের স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসব হচ্ছে। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ৫১ শতাংশ মায়ের প্রসব হচ্ছে। 

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিকস ২০২৩ এর তথ্য অনুযায়ী, প্রসব-পূর্ব চারবারের বেশি সেবা পান ৩৯ শতাংশ গর্ভবতী নারী। অর্থাৎ, ৬১ শতাংশ গর্ভবতী এখনো এ সেবা পান না। এ সেবার ক্ষেত্রে শহরাঞ্চলের চেয়ে গ্রামের নারীরা পিছিয়ে রয়েছেন। 

গ্রামে গর্ভবতীকালীন স্বাস্থ্যসেবা পান না ৬৪ শতাংশ ও শহরে ৪৩ শতাংশ। তবে ২ শতাংশ নারী এখনো একবারের জন্যও এ সেবা পায়নি। ১৫ বছরের কম বয়সী মেয়েদের মধ্যে বিয়ের হার ৮ দশমিক ২ শতাংশ। একইভাবে কমেনি ১৫-১৯ বছর বয়সী কিশোরীদের গর্ভধারণের হার। এখনও এ হার ৪৪ শতাংশ।

বাস্তবে নারীরা মাতৃত্বের অধিকার থেকে বঞ্চিত। দেশে এখনো মাতৃত্বের সিদ্ধান্ত বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্বামী অথবা শ্বশুর-শাশুড়ি নিয়ে থাকেন, যার ফলে অপরিকল্পিত গর্ভধারণ অথবা অনিরাপদ গর্ভপাতের স্বীকার হচ্ছে। গর্ভকালীন সেবা ও সন্তান জন্মের ব্যাপারে নারীর স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে পারলেই নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস সার্থক হবে।

এইচ.এস/


নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন