ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েলের একজন কট্টর ডানপন্থী মন্ত্রী নিউইয়র্কের ইহুদি বাসিন্দাদের শহর ছেড়ে ইসরায়েলে বসতি স্থাপন করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ, তিনি নিউইয়র্ক সিটি মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির বিজয়কে ‘হামাস সমর্থকের’ হাতে শহরের চাবি তুলে দেওয়া বলে আখ্যায়িত করেছেন।
ইসরায়েলের ডায়াস্পোরা ও ইহুদিবিদ্বেষ মোকাবেলা মন্ত্রী আমিচাই চিকলি এক্সে লিখেছেন, ‘যে শহর একসময় বিশ্ব স্বাধীনতার প্রতীক ছিল, তা আজ একজন হামাস সমর্থকের হাতে তার চাবি তুলে দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘নিউইয়র্ক আর কখনোই আগের মতো থাকবে না, বিশেষ করে এর ইহুদি সম্প্রদায়ের জন্য নয়। আমি নিউইয়র্কের ইহুদিদের ইসরায়েলের ভূখণ্ডে তাদের নতুন বাড়ি বানানোর বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’ তথ্যসূত্র: টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
৩৪ বছর বয়সী ডেমোক্রেটিক ‘সোশ্যালিস্ট’ মামদানির ইসরায়েল সম্পর্কিত অবস্থান—যেখানে তিনি ইসরায়েলকে একটি ‘বর্ণবৈষম্যমূলক শাসন’ এবং গাজায় এর যুদ্ধকে ‘গণহত্যা’ বলে বর্ণনা করেছেন—তা বেশ কয়েকজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা এবং ইহুদি সম্প্রদায়ের জায়নবাদী ব্যক্তিত্বদের তীব্র ক্ষোভের কারণ হয়েছে।
ফিলিস্তিনিদের প্রতি দীর্ঘদিনের সমর্থক মামদানি সম্প্রতি মাসগুলোতে প্রকাশ্যে ইহুদিবিদ্বেষ ও একইসঙ্গে তিনি নিজে ইসরায়েলপন্থী ব্যক্তিত্বদের কাছ থেকে যে ইসলামবিদ্বেষের শিকার হয়েছেন, তার নিন্দা করেছেন।
ইসরায়েলের উগ্রপন্থী মন্ত্রী ইতামার বেন গাভিরও চিকলির মন্তব্যের প্রতিধ্বনি করে বলেছেন, ‘ইহুদিবিদ্বেষ সাধারণ বিচারবুদ্ধির ওপর জয়লাভ করেছে। মামদানি হামাসের সমর্থক, ইসরায়েলের শত্রু এবং একজন স্বীকৃত ইহুদিবিদ্বেষী।’
অন্যদিকে কট্টরপন্থী ইয়েসরায়েল বেইতেইনু পার্টির নেতা আভিগডর লিবারম্যান এক্সে লিখেছেন, ‘নিউইয়র্ক তার মেয়র হিসেবে একজন বর্ণবাদী, একজন জনতুষ্টিবাদী এবং একজন স্বীকৃত শিয়া ইসলামপন্থীকে বেছে নিয়েছে।’
ব্যবসায়িক অভিজাত, রক্ষণশীল মিডিয়ার ভাষ্যকার এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তীব্র আক্রমণ সত্ত্বেও মামদানি নির্বাচনে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করেছেন। ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে মামদানিকে ‘ইহুদিদের ঘৃণাকারী’ আখ্যা দিয়ে একেবারে শেষ মুহূর্তে হস্তক্ষেপ করেছিলেন।
তবে প্রচারণার সময় মামদানিকে লক্ষ্য করে যে মুসলিমবিদ্বেষ ছড়ানো হয়েছিল, তা নিউইয়র্কের ভোটারদের তাকে ভোট দেওয়া থেকে বিরত করতে পারেনি বলে নিউইয়র্কের অনেকেই স্বস্তি ও গর্ব প্রকাশ করেছেন।
আনন্দের আতিশয্যে লাফিয়ে উঠে বাবাকে ফোন করে উদযাপন করা বুখতাওয়ার ওয়াকাস নামের একজন বলেন, ‘অনেক দিন পর, আমি একজন মুসলিম, একজন ডেমোক্র্যাট, একজন আমেরিকান, একজন অভিবাসী হিসেবে আশা অনুভব করছি।‘
তিনি জানান, তিনি মামদানির বিজয়ী ভাষণ শুনতে গিয়েছিলেন এবং আশেপাশে নিউইয়র্কবাসীর যে বৈচিত্র্য দেখেছেন, সামনে যতই চ্যালেঞ্জ আসুক না কেন, তিনি তাতে আশ্বস্ত হয়েছেন।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন