নবজাতকদের যকৃৎ (লিভার) পূর্ণ বিকশিত হয় না, ফলে তারা বড়দের ওষুধ যথাযথভাবে হজম করতে পারে না। প্রতীকী ছবি
ছোট শিশু ও নবজাতকদের জন্য উপযোগী ম্যালেরিয়ার ওষুধ এখন আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন পেয়েছে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই আফ্রিকার দেশগুলোতে এ ওষুধ ব্যবহার করার সম্ভাবনা রয়েছে। খবর বিবিসি ও ইউরো নিউজের।
এতদিন পর্যন্ত শিশুদের জন্য ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা থাকলেও ওজন ৪ দশমিক ৫ কেজি বা ১০ পাউন্ডের নিচে থাকা নবজাতক ও একদম ছোট শিশুদের জন্য কোনো অনুমোদিত ওষুধ ছিল না। ফলে এ শিশুরা বড় শিশুদের জন্য তৈরি ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা পেত, যা মাত্রাতিরিক্ত ডোজের ঝুঁকি তৈরি করত।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নবজাতক ও ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় বড় শিশুদের জন্য তৈরি ওষুধ ব্যবহার করলে জটিলতা দেখা দিতে পারে। এর প্রধান কারণ হলো—নবজাতকদের যকৃৎ (লিভার) পূর্ণ বিকশিত হয় না, ফলে তারা বড়দের ওষুধ যথাযথভাবে হজম করতে পারে না।
সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী ম্যালেরিয়াজনিত কারণে প্রায় ৫ লাখ ৯৭ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৭৬ শতাংশই ছিল পাঁচ বছরের নিচে শিশু এবং অধিকাংশ মৃত্যুই আফ্রিকা মহাদেশে ঘটেছে।
এমন পরিস্থিতিতে সুইস কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি অনুমোদন দিয়েছে ‘কোআরটেম বেবি’ বা ‘রিয়ামেট বেবি’ নামে পরিচিত একটি নতুন ওষুধকে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান নোভারটিস ওষুধটি তৈরি করেছে, সহযোগিতায় রয়েছে মেডিসিনস ফর ম্যালেরিয়া ভেঞ্চার (এমএমভি) নামের একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। সংস্থাটি বর্তমানে ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর ওষুধ উদ্ভাবনে কাজ করে যাচ্ছে। শুরুতে ব্রিটিশ, সুইস, ডাচ সরকার, বিশ্বব্যাংক ও রকফেলার ফাউন্ডেশনের সহায়তায় সংস্থাটি কাজ শুরু করে।
নতুন ওষুধটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ও মূল্যায়নে আফ্রিকার আটটি দেশ অংশ নিচ্ছে এবং তারা প্রথম পর্যায়ে এ ওষুধ পাবে বলেও জানানো হয়েছে।
নভারটিসের প্রধান নির্বাহী ভাস নারাসিমহান বলেন, ‘আমরা তিন দশকের বেশি সময় ধরে ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছি। এবার এমন এক ওষুধ নিয়ে এসেছি, যা সবচেয়ে ছোট এবং দুর্বল শিশুদের জীবন রক্ষায় সহায়তা করবে।’
তিনি আরও জানান, ওষুধটি মূলত অলাভজনকভাবে সরবরাহ করা হবে, যাতে দরিদ্র অঞ্চলের শিশুরাও চিকিৎসার আওতায় আসতে পারে।
খবরটি শেয়ার করুন