বুধবার, ৩০শে জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৫ই শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** সাংবাদিক মিলন ত্রিপুরার ওপর হামলার অভিযোগ তদন্তের আহ্বান সিপিজের *** সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে পারে ব্রিটেনও *** একাত্তর নিয়ে বক্তব্য, সমালোচনার মুখে আসিফ নজরুলের দুঃখ প্রকাশ *** জুলাই সনদের খসড়ার সঙ্গে ‘মোটামুটি’ একমত বিএনপি *** বিনা অনুমতিতে নূরুল কবীরকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য করা হয়েছে, প্রত্যাহারের অনুরোধ *** জনসংখ্যা বাড়াতে প্রত্যেক শিশুকে বছরে ৬২ হাজার টাকা করে দেবে চীন *** প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হলেন মাহফুজ আনাম, নূরুল কবীরসহ ১২ জন *** ইসরায়েলি দুই মন্ত্রীকে নেদারল্যান্ডসে ঢুকতে দেবে না দেশটির সরকার *** ডাকসু নির্বাচন ৯ই সেপ্টেম্বর *** আর কাউকে প্রতীকী মূল্যে জমি দেবে না সরকার: অর্থ উপদেষ্টা

বড় চ্যালেঞ্জের মুখে এখন আয়াতুল্লাহ খামেনি, কী করবেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১১:১৬ অপরাহ্ন, ৩০শে জুন ২০২৫

#

ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। ছবি: সিএনএন

চার দশকের বেশি সময় ধরে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি রাজনৈতিক সংকট, অর্থনৈতিক বিপর্যয় ও যুদ্ধ সামাল দিয়েছেন। কিন্তু সম্প্রতি ইসরায়েল ও আমেরিকার একযোগে চালানো সামরিক হামলা তাকে সবচেয়ে বড় পরীক্ষার সামনে দাঁড় করিয়েছে। ৮৬ বছর বয়সী এ নেতা বর্তমানে অসুস্থ এবং তার উত্তরসূরি এখনো নির্ধারিত নয়—এ অবস্থায় তার সামনে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পথও সংকুচিত হয়ে পড়েছে।

আজ সোমবার (৩০শে জুন) এ বিষয়ে এক নিবন্ধে সিএনএন বলেছে, ইসরায়েলি হামলায় বিপর্যস্ত হয়েছে ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি); যা দেশটির ইসলামি বিপ্লবের রক্ষাকবচ হিসেবে বিবেচিত। সাম্প্রতিক সংঘাতে ইরানের বহু অভিজ্ঞ কমান্ডার নিহত হয়েছেন, পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে এবং শীর্ষ পরমাণুবিজ্ঞানীদের হত্যা করা হয়েছে। ১২ দিনের মধ্যে কয়েক বিলিয়ন ডলারের পারমাণবিক বিনিয়োগ ধ্বংস হয়ে গেছে। আর এসবই ঘটেছে এমন এক সময়, যখন ইরান কঠোর নিষেধাজ্ঞা ও দুর্বিষহ মুদ্রাস্ফীতির কবলে।

সাম্প্রতিক হামলার সময় কোনো প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না খামেনি। বক্তৃতাও দিয়েছেন অজ্ঞাতনামা স্থান থেকে। যুদ্ধবিরতির পর কয়েক দিন পেরিয়ে গেলে তিনি একটি ভিডিও বার্তা দেন। এ বার্তায় তিনি আমেরিকা ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘বিজয়ের’ দাবি করেন। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য তার এ বক্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, ‘আপনি মার খেয়েছেন, ভয়াবহভাবে।’

বিশ্লেষকরা বলছেন, একসময়ে কূটনীতিক হিসেবে আয়াতুল্লাহ খামেনি রাজনীতি ও অর্থনীতির মাঝে ভারসাম্য রেখে দেশ শাসন করেছেন। কিন্তু এখন তিনি একটি শক্তিহীন রাষ্ট্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন—যেখানে পারমাণবিক কর্মসূচি স্থবির, আঞ্চলিক মিত্রগোষ্ঠীগুলো ভেঙে পড়েছে এবং উত্তরাধিকারীর সংকটে পড়েছে।

১৯৮৯ সালে ইরানের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে যুদ্ধবিধ্বস্ত অবস্থার ভেতর দিয়েই তিনি দেশকে গড়ে তুলেছেন। সাম্প্রতিক নারী অধিকার আন্দোলন, ২০০৯ সালের নির্বাচন-পরবর্তী গণবিক্ষোভ, অর্থনৈতিক দুরবস্থা ও ইসরায়েলের গুপ্তচরবৃত্তির মুখেও তিনি ক্ষমতায় থেকেছেন। কিন্তু এ প্রথম তার দেশ সরাসরি আমেরিকা ও ইসরায়েলের আক্রমণের শিকার হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, একজন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট তার সম্ভাব্য হত্যার কথা প্রকাশ্যে উচ্চারণ করেছেন।

বিশেষজ্ঞরা আরও বলেছেন, ইরানের প্রথাগত রণনীতি, বিশেষ করে আঞ্চলিক শক্তি প্রদর্শন ও প্রতিপক্ষকে ভয় দেখানো—এখন ব্যর্থ। তবু খামেনির নেতৃত্বাধীন শাসন এখনো টিকে রয়েছে, যদিও এখন তা অনেক বেশি দুর্বল মনে হচ্ছে।

এ সংকটপূর্ণ সময়েও একমাত্র খামেনিই হয়তো পারেন তার দেশকে আবারও পারমাণবিক অস্ত্র উন্নয়নের দিকে নিয়ে যেতে। আবার তিনি চাইলে এখন জাতীয় ঐক্যের এ মুহূর্তকে ব্যবহার করে কিছু সংস্কারমূলক পদক্ষেপও নিতে পারেন। কিন্তু বিশ্লেষকরা মনে করেন, তার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির সীমাবদ্ধতা এসব সম্ভাবনার পথ রুদ্ধ করে রেখেছে।

আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন