ছবি: সংগৃহীত
মানবাধিকার আইনজীবী ও বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) অবৈতনিক নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন’ হিসেবে অভিহিত করে বলেছেন, 'এটি কোটা প্রথা বাতিলের আন্দোলন ছিল না।' তিনি বলেন, 'কোটাব্যবস্থা থাকা উচিত এবং এর পেছনে যৌক্তিক কারণ রয়েছে। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সমতা অর্জনের জন্য আন্তর্জাতিকভাবেও এটি স্বীকৃত। তাই দলিত ও হরিজনদের জন্য অবশ্যই কোটা পদ্ধতি থাকা প্রয়োজন।'
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন সুখবর ডটকমকে বলেন, 'পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় কোটা পদ্ধতি রাখা উচিত। এটি সরকারি ও বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানেই হতে পারে, এর মধ্য দিয়ে দলিত-হরিজনসহ পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় এটি করা উচিত।'
অন্যদিকে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের গত আট মাসে বিভিন্ন সময়ে বিতর্কিত বিশেষ ক্ষমতা আইনের আটকাদেশে অন্তত ৩৭ জন কারাবন্দী হয়েছেন বলে জানা গেছে। চলতি বছর ১৮ই এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচজনকে ওই আইনে আটকাদেশ দেওয়ার বিষয়ে দায়িত্বশীল সূত্র থেকে নিশ্চিত হয়েছে বিবিসি বাংলা।
তবে আটকের ক্ষেত্রে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনটির অপপ্রয়োগ এবং এর মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি মডেল মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তার ও কারাবাস দেওয়ার ঘটনায় ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের প্রয়োগ নিয়ে বিতর্কের বিষয়টি আবার সামনে আসে। গত আট মাসে বিশেষ ক্ষমতা আইনে কারাবন্দী ৩৭ জনের মধ্যে মেঘনা আলমসহ চারজন নারী রয়েছেন।
বিতর্কিত বিশেষ ক্ষমতা আইনে মডেল মেঘনাকে আটক এবং তাকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনাটি নানা আলোচনা-সমালোচনা ও প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে দেশের মানুষ যখন গণতান্ত্রিক রূপান্তরের আকাঙ্ক্ষা করছে, তখন বিশেষ ক্ষমতা আইনের এ প্রয়োগ একটি 'উদ্বেগজনক বিষয়' বলে মানবাধিকার কর্মীদের অভিযোগ।
বিশেষ ক্ষমতা আইনটির অপব্যবহার নিয়ে সোচ্চার মানবাধিকার আইনজীবী সারা হোসেন। মডেল মেঘনা আলমের আটকাদেশের বিরুদ্ধে রিটের মামলায় আইনজীবী ছিলেন তিনি। বিতর্কিত এ আইন কেন বিলুপ্ত হচ্ছে না, সে প্রশ্ন তোলেন সারা হোসেন। তিনি বলেন, 'আইনটির মাধ্যমে সরকার চাইলে যে কাউকে আটকাদেশ দিতে পারে।'
তিনি বলেন, 'আটকাদেশে দেওয়া মানে কোনো কারণ না জানিয়ে কাউকে তুলে নেওয়া হয় এবং আটকের পর তাকে কোনো ধরনের আইনি পরামর্শের সুযোগ দেওয়া হয় না। তাকে ৩০ দিনের জন্য একদম আটক অবস্থায় রাখা যায়। সেটা এক্সটেন্ড করে করে ছয় মাস পর্যন্ত রাখা যায় কোনো একটা রিভিয়েরও আগে। সেই ধরনের একটি আইন কেন বাংলাদেশে এ মুহূর্তে থাকবে, সেটা একটা বড় প্রশ্ন আমাদের সবার জন্য। আর কেন এটা এ মুহূর্তে বাতিল করা যাচ্ছে না, সেটাও বোঝা যাচ্ছে না।'
এইচ.এস/