নিশান মাদুশকাকে ফিরিয়ে তানভীর ইসলামের উচ্ছ্বাস। ছবি: এএফপি
‘জিততেই হবে’—এমন ম্যাচে জিতেছে বাংলাদেশ। তবে এ জয়ের নায়ক যে তানভীর ইসলাম হয়ে উঠবেন, সেটা বোধ হয় ম্যাচপূর্ব কেউ ভাবতে পারেননি।
ভাববেন কী করে! পেটের পীড়া থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা রিশাদ হোসেনকে না খেলিয়ে তাকে যে খেলানো হবে, সেটা তো সুস্পষ্টভাবে বোঝাও যায়নি। তানভীর সফল না হলে হয়তো প্রশ্নও উঠে যেত—রিশাদকে রেখে কোন যুক্তিতে তাকে খেলানো? কিন্তু দলের কাঙ্ক্ষিত জয়ে এমনই ভূমিকা রাখলেন বাঁহাতি এ স্পিনার যে, সেই প্রশ্ন ওঠার ফুরসতই রাখেননি। ৩৯ রানে নিয়েছেন ৫ উইকেট।
ওয়ানডে ক্রিকেটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এটিই বাংলাদেশের কোনো বোলারের সেরা বোলিং। আগের সেরা ছিল আব্দুর রাজ্জাকের। ২০১৩ সালে পাল্লেকেলেতে তিনি ৬২ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। অথচ এটিই ছিল তার ক্যারিয়ারের মাত্রই দ্বিতীয় ওয়ানডে।
নিজের প্রথম দুই ওভারে ২২ রান দিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে গিয়েছিলেন তানভীর। এমন অবস্থায় অনেক বোলারই ধরে রাখা আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন। কিন্তু তানভীর যে সেই দলে থাকা বোলার নন! পরের আট ওভারে দিলেন মাত্র ১৭ রান, শিকার ৫ উইকেট।
তানভীরের বোলিং যেন ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রেরণার এক উৎস। তানভীর তার তৃতীয় ওভারে ১ রান, চতুর্থ ওভারে দিয়েছেন ২ রান। পঞ্চম ওভারে ২ রানে একটি উইকেট নিয়েছেন। ষষ্ঠ ওভারে ১ রান দিয়েছেন। সপ্তম ওভারে ২ রানে নিয়েছেন ১ উইকেট। অষ্টম ওভারে মেডেন, নবম ওভারে ৯ রান, আর দশম ওভারে উইকেট-মেডেন। শেষ ৮ ওভারে তিনি ৪১টি ডট বল করেন, দুটি মেডেন ওভার। তুলে নিয়েছেন শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং লাইনের গুরুত্বপূর্ণ ৫ উইকেট।
কখনো কুইকার করেন তানভীর। ক্রস সিমে সোজা বলও করতে পারেন। ভালো লেন্থে সঠিক জায়গায়ও বল করতে পারেন। এ বৈচিত্র্যের কারণেই নির্বাচকরা দলে নিয়েছেন তাকে। দলকে জিতিয়েই নির্বাচকদের আস্থার প্রতিদান দিলেন তিনি। তার ৫ উইকেট পাওয়ার পরই ম্যাচের ধারাভাষ্যকাররা মনে করিয়ে দিচ্ছিলেন, ‘শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে সেরা বোলিং ফিগার এটাই।’
তো এ সাফল্যের রহস্য কী? কোনো রহস্য-টহস্য নেই। ম্যাচ শেষে ম্যাচসেরার পুরস্কার নিতে এসে তানভীর আত্মবিশ্বাসের কথাই বললেন। তার ভাষায়, ‘প্রথম দুই ওভারে আমি ২২ রান দিয়ে ফেলেছিলাম। তখন অধিনায়ক আমাকে বলেছিলেন, বোলার মার খায়, আবার উইকেটও নেয়। আত্মবিশ্বাস ধরে রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন অধিনায়ক। আমি সেটা মাথায় রেখেই বল করেছি। আলহামদুলিল্লাহ, দলের জয়ে অবদান রাখতে পেরে খুব ভালো লাগছে।’
খবরটি শেয়ার করুন