ছবি: সংগৃহীত
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চারদিনের সরকারি সফরে আজ সোমবার (৯ই জুন) সন্ধ্যায় ব্রিটেনের উদ্দেশে দেশ ছেড়েছেন। লন্ডনে ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ এবং প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের সঙ্গে তার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গেও তার বৈঠকের জোরালো সম্ভাবনা আছে।
আগামী বছর এপ্রিলের প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। অন্যদিকে বিএনপি আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে এ নির্বাচন করার দাবিতে অনড় রয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে দলটির শীর্ষনেতার সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার এ বৈঠকের বেশ রাজনৈতিক তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন দলটির কয়েক নেতা।
নির্বাচনের সময়সীমাকে ঘিরে বিএনপি ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার মধ্যে এক ধরনের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এমন পটভূমিতে প্রধান উপদেষ্টার ব্রিটেন সফরকালে তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক হলে সরকারের সঙ্গে বিএনপির দুরত্ব কিছুটা ঘুচবে বলে মনে করেন অনেকে।
প্রধান উপদেষ্টার ব্রিটেনে সফরকে ঘিরে সেখানে বসবাসরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি নিয়ে রাজনীতিতে খুব আলোচনা হচ্ছে। গণমাধ্যমগুলোও এ বিষয়ে গভীর দৃষ্টি রাখছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা সরকারি সফরে ব্রিটেন গিয়ে একটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতার সঙ্গে বৈঠক করলে সরকারপ্রধানের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন আসে কী না, এমন আশংকার কথাও কেউ কেউ বলছেন।
সুখবর ডটকমের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে লন্ডনের একটি সূত্র জানায়, তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের জন্য প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে। বৈঠকটি হতে পারে, এ বিষয়ে বিএনপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা আশাবাদী। তবে বৈঠকের বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। সরকারের পক্ষ থেকে দিনক্ষণ চূড়ান্ত করা হয়নি।
বিএনপির নেতার সঙ্গে বৈঠকের দিনক্ষণ ও স্থানের বিষয়ে সূত্রটি সুখবরকে জানায়, আগামী ১৩ই জুন সকাল ১০টার দিকে বৈঠকটি হতে পারে। তবে স্থান চূড়ান্ত হয়নি বলে সূত্রটি উল্লেখ করে। নিরাপত্তাজনিত কারণে প্রধান উপদেষ্টা লন্ডনে যে হোটেলে অবস্থান করবেন, সেখানে অথবা তৃতীয় কোনো স্থানে এ বৈঠক অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা আছে।
৯ই জুন বিবিসি বাংলার প্রচারিত একটি প্রতিবেদন বলছে, 'ঢাকা ও লন্ডনে বিএনপির সূত্রগুলো দাবি করছে যে, প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকেই তারেক রহমানের সঙ্গে একটি বৈঠকের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশের পর দুই পক্ষ বিষয়টি নিয়ে এখনো আলোচনায় রয়েছে।
তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তারেক রহমান কিংবা বিএনপিরও এ ধরনের একটি বৈঠকের বিষয়ে অনাগ্রহ নেই কিন্তু নির্বাচনের সময়সীমা হিসেবে আগামী বছরের এপ্রিল মাসকে ঘোষণা করে দেওয়ার পর এখন আর ইউনূস-তারেক বৈঠক কিংবা তাদের মধ্যকার আলোচনার প্রয়োজনীয়তা কতটা আছে- সেই প্রশ্নও দলটির ভেতরে আলোচিত হচ্ছে।
আবার শেষ পর্যন্ত উভয়পক্ষ একমত হতে পারলেও বৈঠকটি কোথায় কীভাবে হতে পারে, তা নিয়েও দুই দিকেই নানা ধরনের মত আছে। আবার একটি সরকারি সফরে গিয়ে একটি রাজনৈতিক দলের প্রধানের সাথে বৈঠক- ঠিক হবে কী-না, তাও বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।'
এদিকে, এবারের সফরে রাজা চার্লস মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘কিং চার্লস তৃতীয় হারমনি অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ দেবেন। আগামী বৃহস্পতিবার লন্ডনের সেন্ট জেমস প্যালেসে এক অনুষ্ঠানে এ পুরস্কার দেওয়া করা হবে। মুহাম্মদ ইউনূসের আগামী ১৩ই জুন দেশের উদ্দেশে লন্ডন ত্যাগ করবেন।
এইচ.এস/
খবরটি শেয়ার করুন
