শুক্রবার, ৩রা অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৮ই আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** তেহরান থেকে রাজধানী অন্যত্র সরিয়ে নেবে ইরান, নেপথ্যে পানি *** গাজা অভিমুখী নৌবহরে ইসরায়েলি সেনাদের আক্রমণ, ধরে নেওয়া হলো অধিকারকর্মীদের *** ৪৭ দেশের ৪৪৩ স্বেচ্ছাসেবীকে অপহরণ করেছে ইসরায়েল *** মর্ত্য ছেড়ে কৈলাসে ফিরলেন দুর্গতিনাশিনী *** শহিদুল আলমের জাহাজ এখনো আটক হয়নি, দিলেন ভিডিওবার্তা *** পাকিস্তানকে হারিয়ে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ শুরু *** এনসিপিকে শাপলা দিলে মামলা করব না, তবে ইসি দিতে পারে না: মান্না *** শুধু থালাবাটি নয়, এনসিপির জন্য আছে লাউ-বেগুন-কলাসহ ৫০ প্রতীক *** ঝড় উপেক্ষা করে গাজার পথে ফ্লোটিলা, শহিদুল আলমের ভিডিও বার্তা *** ইসরায়েলি সব কূটনীতিককে কলম্বিয়া থেকে বের হয়ে যাওয়ার নির্দেশ প্রেসিডেন্ট পেত্রোর

শরিয়াহ–বিরুদ্ধ হওয়ায় আফগানিস্তানে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ ৬৭৯ বই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৫:২১ অপরাহ্ন, ১৯শে সেপ্টেম্বর ২০২৫

#

কাবুল ইউনিভার্সিটির বাইরে টহলরত এক আফগান সেনা। ছবি: এএফপি

আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে দেশজুড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৭৯টি পাঠ্যপুস্তক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সঙ্গে সঙ্গে এই বইগুলো পড়ানো, ব্যবহার বা উল্লেখ করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের খবরে বলা হয়েছে, উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী জিয়াউর রহমান আরয়ুবি স্বাক্ষরিত এই নির্দেশ আগস্ট মাসের শেষে আফগান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পাঠানো হয়েছে। নথি অনুযায়ী, নিষিদ্ধ বইগুলো ‘নৈতিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও বৈজ্ঞানিক দিক থেকে পর্যালোচনা’ করা হয়েছে। তারপরই নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, বইগুলোর বিষয়বস্তু ‘ইসলামি শরিয়াহর সঙ্গে বিরোধপূর্ণ’, তাই এগুলো নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

নিষিদ্ধ তালিকাটি ৫০ পাতার। এই তালিকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পাঠানোর পাশাপাশি বিকল্প পাঠ্যসূচি ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নতুন পাঠ্যসূচি যেন ‘ইসলামের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ না হয়।’

বই নিষিদ্ধের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ১৮টি কোর্সও বাতিল করা হয়েছে। তালেবান আলেম তালেবান, মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা এবং ইসলামি আইনবিষয়ক পণ্ডিতেরা পর্যালোচনা করে যেসব বাতিল করেছেন সেগুলোর মধ্যে রয়েছে—আফগান সাংবিধানিক আইন, ইসলামি রাজনৈতিক আন্দোলন, সুশাসন, নির্বাচন ব্যবস্থা, আফগান রাজনৈতিক ব্যবস্থা, লিঙ্গ ও উন্নয়ন, মানবাধিকার, গণতন্ত্র, বৈশ্বিকীকরণ ও উন্নয়ন, ধর্মের ইতিহাস, যৌন হয়রানি, নারী এবং গণযোগাযোগে নারীর ভূমিকা, দর্শন এবং নারী অধ্যয়নের মডিউল।

মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, ২০১টি কোর্স ‘সমস্যাযুক্ত’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে এবং বর্তমানে এগুলো ‘পর্যালোচনাধীন।’ এদিকে, কাবুলের একটি সূত্র ইন্ডিপেনডেন্টকে জানিয়েছেন, এতগুলো বই ও রেফারেন্স নিষিদ্ধ করলে দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কার্যত ‘স্থবির হয়ে যাবে।’ কারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এখন নতুন বিকল্প খুঁজতে ও সংগ্রহ করতে হবে, যা সম্পদের বড় ব্যয় দাবি করবে।

কাবুলের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এই ৬৭৯টি বইয়ের কোনো বিকল্প নেই। এগুলো অনেক ক্ষেত্রে মূল পাঠ্যপুস্তক। তালেবান সরকার যদি নিজে নতুন বই না লিখে, তাহলে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এখন এক বড় চ্যালেঞ্জের মুখে।’

কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের বইগুলোর মধ্যে জান আর্ট শোল্টের লেখা ‘Globalization: A Critical Introduction’, শামসালসাদাত জাহেদির ‘International Sustainable Development’, আবদুল রহমান সালিমের ‘Comparative Human Rights’, জাকিয়া আদেলির ‘Political Terminology and International Relations’ এবং নাসরুল্লাহ স্তানিকজাইয়ের ‘Principles of Law’ সহ পশ্চিমা ও মুসলিম পণ্ডিতদের আরও ডজনখানেক বই নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

শিক্ষাবিদ্যা বিভাগের বইগুলোর মধ্যে ব্রুস জে. কোহেনের লেখা ‘Introduction to Sociology’, লুইস এ. কোসারের ‘Masters of Sociological Thought’, আবদুল কায়ুম সাজ্জাদি ‘Political Sociology of Afghanistan’ এবং আবদুল রহমান আলমের লেখা ‘History of Western Philosophy’ বই উল্লেখযোগ্য।

জে.এস/

আফগানিস্তান

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250