দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
গাজা অভিমুখী ত্রাণবাহী নৌবহরের একটি বাদে বাকি সব জাহাজ আটক করার কথা জানিয়েছে ইসরায়েল। এরপর ফেসবুকে একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন ওই নৌবহরে থাকা বাংলাদেশি আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার (২রা অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ফেসবুকে ওই ভিডিও বার্তায় নিজের শারীরিক অবস্থা কিছুটা খারাপ হওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
‘গ্লোবাল সমুদ্র ফ্লোটিলা’ নামের এই নৌবহরে ৪৪টি জাহাজ ছিল। দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আলোকচিত্রী শহিদুল আলম ওই বহরে থাকা ‘কনশানস্’ নামের একটি জাহাজে যাত্রা করেন। বাংলাদেশ সময় বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে নৌবহর গাজার কাছাকাছি এলাকায় পৌঁছালে ইসরায়েলি সেনারা জাহাজগুলোতে এসে ত্রাণ নিয়ে যাওয়া অধিকারকর্মীদের আটক করতে থাকেন। নৌবহরের ত্রাণবাহী জাহাজসহ অধিকারকর্মীদের ইসরায়েলের আশদোদ বন্দরে নেওয়া হয়।
আজ সন্ধ্যার দিকে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বহরে থাকা একটি বাদে বাকি সব জাহাজ আটক করা হয়েছে।
এর কিছুক্ষণ পর ফেসবুকে ওই ভিডিও বার্তা দেন শহিদুল আলম। ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘সাগর খুবই উত্তাল। এইমাত্র বমি হলো, এখন শুয়ে আছি।’
ভিডিওতে শহিদুল আলম বলেন, ‘বমি করার পরপরই সরাসরি সম্প্রচারে যাওয়াটা স্বাভাবিক নয় বলেই আমার ধারণা। আমি এখন মেঝেতে শুয়ে আছি। তাই আমি বরং ক্যামেরাটাকে ঘুরিয়ে দিচ্ছি। দেখা যাক, এটা কাজ করে কি না। আশা করি, এবার আপনারা দেখতে পাচ্ছেন।’
শহিদুল আলম বলেন, ‘সময়টা বেশ উপযুক্ত। কারণ, আমি এইমাত্র বিবিসিকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছি। সাক্ষাৎকারটি চলাকালে বা এর পরপরই জাহাজটি দুলতে শুরু করে। এ সময় আমি অসুস্থবোধ করছিলাম এবং বমি করার জন্য একটি ব্যাগ খুঁজছিলাম। ভাগ্যক্রমে ঠিক সময়েই একটি ছোট্ট ব্যাগ পেয়ে যাই। তাতে মেঝেটা নোংরা হওয়া থেকে রক্ষা পায়। তবে হ্যাঁ, আমি ঠিক আছি।’
জাহাজে একজন চিকিৎসক তার দেখাশোনা করছেন বলে জানান শহিদুল আলম। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, কেউ আমার ল্যাপটপ ও টেবিলে থাকা অন্যান্য সরঞ্জাম গুছিয়ে রেখেছেন। সব জিনিস মেঝেতে নামিয়ে রাখা হচ্ছে, যাতে সেগুলো পড়ে না যায়। সমুদ্র এখনো খুবই উত্তাল। বাইরে এখনো আলো আছে। আশা করি, আমরা খুব দ্রুত এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠব। আমি ঠিক আছি। এটা একটা ভিন্ন অভিজ্ঞতা বলতে হবে।’
এর কিছু পর তিনি আরেকটি ভিডিও আপলোড দেন নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে। ওই ভিডিওর সঙ্গে তিনি লেখেন, ‘লোকজন জানতে চাইছে আমি কেমন আছি। দুঃখিত, আমি সবাইকে একে একে জবাব দিতে পারছি না। আজ আমি বমি করেছি এবং তারপর পড়ে গিয়েছিলাম, তবে তেমন গুরুতর কিছু হয়নি। জাহাজে ২০ জন ডাক্তার আর নার্স আছেন, তাই চিকিৎসার দিক থেকে আমরা হয়তো যাত্রীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি যত্নে আছি। আমি অবশ্য সেই যত্ন পেয়ে বেশ আনন্দই পেয়েছি। আমার ভাতিজি মৌলি থাকলে বলত আমি নাকি ড্রামা কুইন হচ্ছি।'
খবরটি শেয়ার করুন