মঙ্গলবার, ২৯শে জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৪ই শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** একাত্তর নিয়ে বক্তব্য, সমালোচনার মুখে আসিফ নজরুলের দুঃখ প্রকাশ *** জুলাই সনদের খসড়ার সঙ্গে ‘মোটামুটি’ একমত বিএনপি *** বিনা অনুমতিতে নূরুল কবীরকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য করা হয়েছে, প্রত্যাহারের অনুরোধ *** জনসংখ্যা বাড়াতে প্রত্যেক শিশুকে বছরে ৬২ হাজার টাকা করে দেবে চীন *** প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হলেন মাহফুজ আনাম, নূরুল কবীরসহ ১২ জন *** ইসরায়েলি দুই মন্ত্রীকে নেদারল্যান্ডসে ঢুকতে দেবে না দেশটির সরকার *** ডাকসু নির্বাচন ৯ই সেপ্টেম্বর *** আর কাউকে প্রতীকী মূল্যে জমি দেবে না সরকার: অর্থ উপদেষ্টা *** প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ৩৪ হাজার শুন্য পদ পূরণে উদ্যোগ *** প্রাথমিক পর্যায়ে ঐকমত্যের খসড়া আজকালের মধ্যে পাবে রাজনৈতিক দলগুলো: আলী রীয়াজ

যে কারণে তিস্তা নদীর গতিপথ বদল

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১০:৩৯ অপরাহ্ন, ৫ই জানুয়ারী ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

তিস্তা নদীর গতিপথ বদলে গিয়েছে অন্তত পাঁচবার। পুরনো গতিপথ বদলে ফেলেছে দুই রাজ্য এবং দুই দেশে বয়ে চলা এই তিস্তা। গতিপথের এই বাঁকবদলের ঘটনা ঘটেছে গত কয়েক মাসের মধ্যে। মনে করা হচ্ছে, গত অক্টোবরে সিকিমে ঘটে যাওয়া হ্রদ-বিপর্যয়ের জেরেই তিস্তার এই গতিপথ বদল।

গত অক্টোবরে সিকিমে হড়পা বানের জেরে দক্ষিণ লোনাক হ্রদ ভেঙে তিস্তা দিয়ে হড়পা বান বয়ে গিয়েছে। তার পরেই ক্রমাগত গতিপথ বদলেছে উত্তরের অন্যতম ‘জীবন-রেখা’ বলে পরিচিত এই নদী। এই গতিপথের বদলের পুরো ছবিটাই ধরা পড়েছে উপগ্রহের মাধ্যমে, যা দেখে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন সেচ দফতর। কারণ, বার কয়েক নদীর গতিপথ বদলের ফলে, উত্তরবঙ্গের সমতলের জীবনযাপন, অর্থনীতির উপরে বড়সড় প্রভাব ডেকে আনবে। এই গতিপথ বদলের কথা সেচ দফতরের তরফে জানানো হয়েছে রাজ্য এবং কেন্দ্রের নদী সংক্রান্ত দফতরে। আপাতত তিস্তায় সেচ দফতর ‘মরফোলজি সার্ভে’, অর্থাৎ, তিস্তার গতিপথ বদলের বৈশিষ্ট্য নিয়ে সমীক্ষা চালাচ্ছে। 

ভৌগোলিক পরিভাষায় বলা যায়, তিস্তা নদীর গতিপথের যে ছবি ধরা পড়েছে, তার সঙ্গে নদীর ভৌগোলিক গঠন মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। এর পরের ধাপ হল, তিস্তা নদীতে সরেজমিনে সমীক্ষা। সে জন্য বিপুল বরাদ্দের প্রয়োজন। সে সমীক্ষা করতে চেয়ে সেচ দফতর প্রস্তাব পাঠিয়েছে কর্তৃপক্ষের কাছে।

সেচ দফতরের উত্তর-পূর্ব বিভাগের মুখ্য বাস্তুকার কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক বলেন, “উপগ্রহ চিত্রের মাধ্যমে পরিষ্কার দেখা গিয়েছে, তিস্তা তার গতিপথ বদলে ফেলছে। 

সিকিম বিপর্যয়ের পরে এই বদল লক্ষ্য করা গিয়েছে। পুরো বিষয়টি আমরা উপর মহলে জানিয়েছি। কারণ, তিস্তা নদী আন্তর্জাতিক। আমরা এ নিয়ে বিস্তারিত সমীক্ষা করতেও প্রস্তাব পাঠিয়েছি।”

কোথায় কোথায় বদলেছে তিস্তা নদীর গতিপথ? সেচ দফতর জানিয়েছে, অজস্র জায়গায় নদী কখনও ডান দিকে, কখনও বাঁ দিকে সরেছে। তবে উল্লেখযোগ্য ভাবে যে জায়গাগুলি থেকে সরেছে, সেগুলিরই ছবি উপগ্রহ ছবিতে ধরা পড়েছে। 

সেবক থেকে সমতলে নামার পরেই বাঁ দিক ঘেঁষে টোটোগাঁও ছুঁয়ে বইত তিস্তা। সিকিমে বিপর্যয়ের পরে, নদী সরে গিয়েছে ডান দিকে, লালটং বস্তির দিকে। তার পরে, সমতলের দিকে আরও কিছুটা এগোলেই গজলডোবা ব্যারাজ। 

সে ব্যারাজের গেট পেরিয়ে মিলনপল্লির কাছে তিস্তা ডান থেকে সরে চলে গিয়েছে বাঁ দিকে এবং অনেকটা দূরে। মালবাজার লাগোয়া এলাকাতেও গতিপথ বদলেছে তিস্তা। এর পরে ধর্মপুর এবং বাকালিতে আবার ডান দিক থেকে বাঁ দিকে সরেছে। চ্যাংমারিতেও নদী সরে গিয়েছে বাঁ দিকে। জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া দোমোহনী থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত নদী গতিপথ বদলেছে।

আরো পড়ুন: অবশেষে মা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন দীপিকা

কেন পথ বদলাচ্ছে নদী? সিকিম থেকে আসা হড়পা বানে নদী পাহাড় থেকে প্রচুর বালি-পাথর বয়ে নিয়ে এসেছে। সমতলে নেমেই নদীর স্রোত ভারী বালি-পাথর নীচে ফেলে রেখে বয়ে গিয়েছে। ফলে, কোথাও এক থেকে দেড় ফুট পলি জমেছে। সে জমা পলিই নদীর প্রবাহকে ধাক্কা দিয়ে অন্য পাশে সরিয়ে দিয়েছে।

নদীর এই গতিপথ বদলে বর্ষা বা অন্য কোনও কারণে নতুন নতুন এলাকায়, অর্থাৎ, যে দিকে নদী সরেছে সেখানে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা রয়েছে। বহু চাষের জমির নদীগর্ভে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আবার অন্য দিকে, যে এলাকা থেকে নদী সরে গেল সেখানে পলি জমা উর্বরা জমিতে নদী রেখে যাবে শস্য ভান্ডার।

নদীর এই গতিপথের বদলে যাওয়া রূপ দেখতে আসবে ‘আরআরআই’ তথা ‘রিভার রিসার্চ ইনস্টিটিউট’। এই বদল শেষ পর্যন্ত কতটা স্থায়ী হবে তা দেখতে পেশাদার কোনও বিশেষজ্ঞ সংস্থার সাহায্যও নিতে পারে সেচ দফতর।

এসি/ আই.কে.জে/

তিস্তা নদী

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন