মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা গত সপ্তাহে দক্ষিণ চীন সাগরের উপর আন্তর্জাতিক আকাশসীমায় চীনা ফাইটার জেট এবং মার্কিন সামরিক বিমানের মধ্যকার সংঘর্ষের পর চীনা সামরিক বিমান এবং জাহাজের আগ্রাসী আচরণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
গত মঙ্গলবার, এ নিয়ে একটি ভিডিওবার্তা প্রকাশ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ভিডিওতে দেখা যায়, গত ২৬ মে মার্কিন বিমান বাহিনি আরসি-১৩৫ এর উপর অহেতুক আক্রমণ চালায় চীনা ফাইটার পাইলট।
তত্ত্বাবধানকারী ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ডের একজন মুখপাত্রের মতে, চীনা বিমানটি মার্কিন বিমানের ৪০০ ফুট (১২২ মিটার) কাছে উড়ছিলো এবং বিমানটির উড্ডয়নপথে বাধার সৃষ্টি করে।
মুখপাত্র জানান যে, মার্কিন বিমানটি আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে দক্ষিণ চীন সাগরে আন্তর্জাতিক আকাশসীমায় নিরাপদ এবং নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছিল, কিন্তু চীনা বিমানটি অহেতুক তার প্রবেশপথে বাধা প্রদান করে।
অন্যদিকে, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং গত বুধবার এই ঘটনার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে বলেন যে, মার্কিন বিমানটি চীনা বিমানের উপর নজরদারি চালাচ্ছিল যাতে চীনের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়ে।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অবিলম্বে এ ধরনের উস্কানিমূলক কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।
দ্য হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক আদালতের রায় অনুযায়ী, দক্ষিণ চীন সাগরের উপর চীনের কোন অংশীদারিত্ব নেই। কিন্তু চীন এ রায় অগ্রাহ্য করেছে।
দক্ষিণ চীন সাগরের উপর চীনসহ অন্যান্যদের দাবিকে চ্যালেঞ্জ করতে সমুদ্রপথে বাণিজ্যের প্রচারের জন্য প্রতি বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ চীন সাগরের উপর তার অভিযান চালায়।
চীন পুরো দক্ষিণ চীন সাগরের উপর তার অধিকার স্থাপনের চেষ্টা করছে। অন্যদিকে ব্রুনাই, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, তাইওয়ান এবং ভিয়েতনাম এ সমুদ্রের কিছু দ্বীপকে তাদের ভূখণ্ডের অংশ হিসেবে দাবি করেছে।
পেন্টাগন জানায় যে, চীন এই সপ্তাহান্তে সিঙ্গাপুরে বার্ষিক নিরাপত্তা ফোরামের প্রতিরক্ষা প্রধানদের মধ্যকার বৈঠকের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে। এতে চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে।
উভয় দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীরা সিঙ্গাপুরের সাংরি-লা সংলাপে অংশ নিবেন। মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন শনিবারে এবং চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জেনারেল লি সাংফু রবিবারে বক্তব্য প্রদান করবেন। বার্ষিক সংলাপ হল সিঙ্গাপুরে আয়োজিত প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা এবং বিশ্লেষকদের একটি অনানুষ্ঠানিক সমাবেশ যা প্রতিরক্ষা নেতাদের মধ্যে পার্শ্ব বৈঠকের সুযোগও তৈরি করে।
মূলত রাজ্যগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ এড়াতে মুক্ত আলোচনার সু্যোগ করে দেয় এই সংলাপ।
২০২১ সাল থেকে, পিআরসি সংলাপে বসার অনুরোধ বারবার প্রত্যাখ্যান করেছে। বারবার বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে সংলাপে বসতে চায় নি পিআরসি।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রও নিশ্চিত করেন যে, চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই নেতা এবার বৈঠকে বসছেন না।
লি মার্চ মাসে তার চীনের গুরুত্বপূর্ণ পদ গ্রহণ করেন।রাশিয়ার প্রধান অস্ত্র রপ্তানিকারক, রোসোবোরোনএক্সপোর্টের কাছ থেকে যুদ্ধ বিমান এবং সরঞ্জাম কেনার জন্য ২০১৮ সাল থেকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার অধীনে রয়েছেন তিনি।
আই.কে.জে/