শুক্রবার, ৩রা অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৮ই আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** তেহরান থেকে রাজধানী অন্যত্র সরিয়ে নেবে ইরান, নেপথ্যে পানি *** গাজা অভিমুখী নৌবহরে ইসরায়েলি সেনাদের আক্রমণ, ধরে নেওয়া হলো অধিকারকর্মীদের *** ৪৭ দেশের ৪৪৩ স্বেচ্ছাসেবীকে অপহরণ করেছে ইসরায়েল *** মর্ত্য ছেড়ে কৈলাসে ফিরলেন দুর্গতিনাশিনী *** শহিদুল আলমের জাহাজ এখনো আটক হয়নি, দিলেন ভিডিওবার্তা *** পাকিস্তানকে হারিয়ে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ শুরু *** এনসিপিকে শাপলা দিলে মামলা করব না, তবে ইসি দিতে পারে না: মান্না *** শুধু থালাবাটি নয়, এনসিপির জন্য আছে লাউ-বেগুন-কলাসহ ৫০ প্রতীক *** ঝড় উপেক্ষা করে গাজার পথে ফ্লোটিলা, শহিদুল আলমের ভিডিও বার্তা *** ইসরায়েলি সব কূটনীতিককে কলম্বিয়া থেকে বের হয়ে যাওয়ার নির্দেশ প্রেসিডেন্ট পেত্রোর

আধুনিক বাংলা গানের প্রবাদ পুরুষ হেমন্ত মুখোপাধ্যায়

বিনোদন ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৩:৫৯ অপরাহ্ন, ২৬শে সেপ্টেম্বর ২০২৩

#

ছবি-সংগৃহীত

বাংলা সঙ্গীত জগতে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় এক কালজয়ী নাম। আজ গুণী এই শিল্পীর ৩০তম মৃত্যুবার্ষিকী। অসাধারণ সুর আর স্নিগ্ধ ও মোহনীয় কণ্ঠের ছোঁয়ায় তিনি বাংলা সঙ্গীতভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করেছেন, হয়ে উঠেন সঙ্গীতের বরপুত্র, হয়ে আছেন সুরের জাদুকর। 

১৯২০ সালের ১৬ জুন ভারতের কাশীর বেনারসে জন্মেছিলেন বাংলা গানের এই প্রথিতযশা শিল্পী। তার সুরেলা কণ্ঠে রবীন্দ্রসঙ্গীত আর আধুনিক গান আজও গেঁথে আছে প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে। তিনি হিন্দি সঙ্গীত জগতে হেমন্ত কুমার নামে প্রসিদ্ধ। পঞ্চাশ-ষাটের দশককে আধুনিক বাংলা গানের স্বর্ণযুগ মনে করা হয়। আর হেমন্ত মুখোপাধ্যায়কে বলা হয় আধুনিক গানের প্রবাদ পুরুষ।

তার আদি নিবাস ছিল দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার জয়নগরে। তার ছেলেবেলা কেটেছে জয়নগরের বহেডু গ্রামে। চব্বিশ পরগনা থেকে বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে‌ তার পরিবার কলকাতায় চলে যায়। বড় ভাই তারাজ্যোতি ছোটগল্প লিখতেন। হেমন্ত মেজো। বড় ভাই ছাড়া বাকি দুই ভাই তারাজ্যোতি ও অমল মুখোপাধ্যায়। হেমন্তের ছোটভাই অমল মুখোপাধ্যায় গান করতেন। 

হেমন্ত মুখোপাধ্যায় কখনো গান শিখেননি। লোকমুখে শুনে শুনে গান তুলে নিতেন গলায়। টিফিন পিরিয়ডে স্কুলের ক্লাসরুমে বসে গান গাইতেন। একবার সেই গান শুনে ফেলেন অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার। স্কুল থেকে প্রায় বিতাড়িত করে দিয়েছিলেন। পরে বাবা গিয়ে অনেক অনুরোধ করে সামাল দিয়েছিলেন।

শিক্ষাজীবনে হেমন্ত ভবানীপুরের মিত্র ইন্সটিটিউশনে ছিলেন। সেখানেই তার সাথে পরিচয় হয় কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের। হেমন্তকে রেডিওতে নিয়ে গিয়েছিলেন সুভাষ মুখোপাধ্যায়। শৈলেশ দাসগুপ্তের সহায়তায় ১৯৩৫ সালে ১৪ বছর বয়সে রেডিওতে প্রথম গান গাইলেন হেমন্ত।

১৯৩৮ সালে প্রথম রেকর্ড প্রকাশিত হয়। এ সময় তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকৌশল বিদ্যায় অধ্যয়নরত। কিন্তু সুরের নিবিড় টানে সব কিছু হারিয়ে যেতে চায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখাপড়া ছেড়ে দেন হেমন্ত, আর গানই হয়ে ওঠে পরম আরাধনা।

এরপর একে একে প্রকাশিত হতে থাকে তাঁর মৌলিক গানের রেকর্ড। প্রতিটি রেকর্ডই দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় চলচ্চিত্রেও প্লেব্যাক করেছেন, করেছেন সুরযোজনা।

১৯৪৭ সালে ‘অভিযাত্রী’ ছবিতে সংগীত পরিচালনা করে সংগীত পরিচালক হিসেবে তাঁর আত্মপ্রকাশ। সাড়া জাগানো ছবি শাপমোচন, নীল আকাশের নিচে, হারানো সুরসহ অনেক বিখ্যাত ছবির সংগীত পরিচালনা করেছেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়।

হেমন্তকে বাদ দিয়ে আধুনিক বাংলা গানের কথা ভাবাই যায় না। আধুনিক গান ছাড়াও হেমন্ত মুখোপাধ্যায় রবীন্দ্র সংগীত ও রজনীকান্তের গান গেয়েছেন। সঙ্গীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন পুরস্কার-সম্মাননার পাশাপাশি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পেয়েছেন সম্মানসূচক ডিলিট।

আরো পড়ুন: বেগম রোকেয়ার বই অবলম্বনে সিনেমা করেছেন বিদেশী নারী নির্মাতা

হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের অসংখ্য জনপ্রিয় গানের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- পথের ক্লান্তি ভুলে স্নেহ ভরা কোলে তব মাগো, বলো কবে শীতল হবো, ও নদীরে; একটি কথা শুধাই শুধু তোমারে, আয় খুকু আয়, মুছে যাওয়া দিনগুলি আমায় যে পিছু ডাকে, ও আকাশ প্রদীপ জ্বেলোনা, ও বাতাস আঁখি মেলোনা, আমি দূর হতে তোমারেই দেখেছি, আর মুগ্ধ এ চোখে চেয়ে থেকেছি, এই রাত তোমার আমার, মেঘ কালো, আঁধার কালো, আর কলঙ্ক যে কালো ইত্যাদি।

১৯৮৯ সালের ২৬শে সেপ্টেম্বর এই মহান শিল্পী মৃত্যুবরণ করেন। কালজয়ী এই সঙ্গীতব্যক্তিত্ব সঙ্গীতশিল্পী ও সঙ্গীতানুরাগীদের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে চিরভাস্বর হয়ে আছেন। আজও তিনি সুরের জাদুকর হয়েই বেঁচে আছেন বাঙালির হৃদয়ে।

এসি/  আই.কে.জে











হেমন্ত মুখোপাধ্যায় আধুনিক বাংলা গান

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250