ছবি: সংগৃহীত
এখনো বাজারে আম, জাম, কাঁঠাল মিলছে ভরপুর। ফল হিসেবে জাম খুবই উপকারী। খাওয়া শেষে আমরা স্বভাবতই জামের বীজটা ফেলে দিই। তবে জানেন কী, শুধু জাম নয়, এর বীজেরও রয়েছে অনেক উপকারী দিক। ঢাকার ধানমন্ডির গ্যাস্ট্রোলিভার কেয়ারের বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহান জানিয়েছেন জামের বীজের অজানা কিছু গুণ সম্পর্কে।
রক্তে শর্করার ভারসাম্য বজায় রাখে জামের বীজের গুঁড়া। জাম্বোলিন ও অ্যালকালয়েডের মতো দুটি যৌগ রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। এতে করে ইনসুলিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য তাই এই বীজ বেশ কার্যকর।
উচ্চ রক্তচাপ দূর করতে আপনার সঙ্গী হতে পারে জামের বীজ। এই বীজের গুঁড়া মিশিয়ে পানি পান করলে তা উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করবে। এটি হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতেও সাহায্য করে।
বদহজমের সমস্যায় জামের বীজের গুঁড়া খেলে উপকার মেলে। গ্যাস বা অম্বলের সমস্যায় কাজে দেয় জামের বীজের গুঁড়া। বিশেষ করে ডায়রিয়া বা পেট খারাপ হলে এটি সহায়ক। শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে রোজ সকালে জামের বীজের গুঁড়া পানিতে মিশিয়ে খেতে পারেন।
যেহেতু জাম অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট এবং দেহের প্রদাহবিরোধী বৈশিষ্ট্যে সমৃদ্ধ, তাই এটি আমাদের ত্বকের জন্যও বেশ ভালো। মুখের ব্রণ, পিগমেন্টেশন ও কালচে দাগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। শুধু তা–ই নয়, এর গুঁড়া খেলে অকালবার্ধক্য ও নিস্তেজ ত্বক প্রতিরোধ করা যায়। তাই যদি সুস্থ ও উজ্জ্বল ত্বক অর্জন করতে চান, তাহলে জামের বীজের গুঁড়া নিয়মিত খেতে পারেন। আজকাল দেশের খুচরা দোকান ও সুপারশপগুলোয় অহরহ মিলছে জামের বীজের গুঁড়া।
শরীরে যাঁদের অতিরিক্ত মেদ জমে, তারা জামের গুঁড়া পানিতে ভিজিয়ে খেতে পারেন। এতে আঁশের মাত্রা বেশি থাকায় খালি পেটে এটি খেলে ক্ষুধা কমে পেট ভরে যায়। অর্থাৎ এটি অতিরিক্ত খাওয়াও প্রতিরোধ করতে পারে। অন্যদিকে জামে থাকে ভরপুর পটাশিয়াম। তাই হার্টের রোগীদের জন্য ভীষণ উপকারী।
তবে এই পুষ্টিবিদ জানান, সরাসরি জামের বীজ খেয়ে ফেললে পেটের নানাবিধ সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই প্রথমে বীজগুলো ভালোভাবে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রোদে শুকিয়ে নিন। কয়েক দিন রোদে শুকিয়ে নেওয়ার পর বীজগুলোর মিহি পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে।
এরপর বায়ুরোধী বয়ামে সংরক্ষণ করুন। প্রতিদিন সকালে পানিতে ভিজিয়ে খেলে নানা রকম সমস্যা থেকে উত্তরণ পেতে পারেন। তবে আয়ুর্বেদিক গুণাবলিযুক্ত ভেষজ দ্রব্য যে সবার শরীরে মানাবে, তেমনটা না–ও হতে পারে। তাই বীজের গুঁড়া খাওয়ার আগে কোনো চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে বললেন ইসরাত জাহান।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন