মঙ্গলবার, ২১শে অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৬ই কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে প্রধান উপদেষ্টাকে ৬ আন্তর্জাতিক সংগঠনের চিঠি *** জন্ম নিয়েই বাপের সঙ্গে পাল্লা দিয়ো না—এনসিপি নেতাদের গোলাম পরওয়ার *** দীপাবলিতে ভারতীয়দের শুভেচ্ছা জানিয়ে বাংলাদেশি হাইকমিশনের ভিডিও প্রকাশ *** ভারতের সঙ্গে ১০ চুক্তি বাতিলের তথ্য প্রকাশ, যা বললেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা *** ‘জামায়াত ও আ. লীগ মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ’ *** সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত ও আ.লীগের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান *** সংখ্যালঘুদের বিপদে ফেলবেন না, সরকারকে মির্জা ফখরুল *** বড় পুঁজির স্বপ্ন দেখা শ্রীলঙ্কাকে ২০২ রানে থামাল বাংলাদেশ *** সালমান শাহর মৃত্যুর ২৯ বছর পর হত্যা মামলা করার নির্দেশ *** নির্বাচনে সেনা এক লাখ, পুলিশ দেড় লাখ ও ছয় লাখ আনসার মাঠে থাকবে

পাঠ্যবই নিয়ে অনিশ্চয়তা অচিরেই দূর করতে হবে

উপ-সম্পাদকীয়

🕒 প্রকাশ: ০৩:৩৯ অপরাহ্ন, ২রা জানুয়ারী ২০২৫

#

ছবি - সংগৃহীত

প্রতি বছর বই উৎসবের মধ্য দিয়ে শুরু হয় নতুন শিক্ষাবর্ষ। দেশের প্রতিটি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়া হয়। নতুন বইয়ের ঘ্রাণ ও পাঠদান শুরু করতে অপেক্ষায় ছিল প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের প্রায় সাড়ে ৪ কোটি শিক্ষার্থী। কিন্তু  এই বছর বই উৎসব হয়নি। দেশের অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়া সম্ভব হয়নি। এখনো অধিকাংশ বই ছাপানো বাকি রয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) তথ্য মতে, প্রাথমিকের প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৫ কোটি বই ছাপানোর কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া বাকি সাত শ্রেণির মধ্যে কয়েকটি শ্রেণির আংশিক বই ছাপানোর  কাজ এখনও চলমান রয়েছে। এবার স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর জন্য ৪০ কোটি বিনামূল্যের বই ছাপানোর কথা রয়েছে। এতে সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত  অর্ধেক বই ছাপানোর কাজ শেষ হলেও আরও অর্ধেক বই ছাপানো বাকি রয়েছে। ফলে বছরের শুরুতেই বেশির ভাগ শিক্ষার্থী বই হাতে পাবে না।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কারণে নতুন শিক্ষাবর্ষের বইয়ের কার্যক্রম তিন মাস দেরিতে শুরু হয়। এরপর শিক্ষা কারিকুলামে আনা হয় ব্যাপক পরিবর্তন। নতুন শিক্ষাক্রমের পরিবর্তে এবার পাঠ্যপুস্তকে স্থান পেয়েছে ২০১২ সালে প্রণীত সৃজনশীল কারিকুলাম। এতে পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জনের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সমন্বয় কমিটি গঠন করা হলেও সেটি কয়েকদিন পর বাতিল করা হয়, আবার নতুনভাবে করা হয়। এসব কারণে বই ছাপানোর কাজ দেরিতে শুরু করতে হয়।

সাধারণত ডিসেম্বর  মাসের  মধ্যে নতুন শিক্ষাবর্ষের সব বই ছাপার কাজ শেষ হয়ে থাকে। অথচ এবার বেশকিছু শ্রেণির বই ছাপা তখনো শুরুই হয়নি। এছাড়া বই ছাপানোর জন্য বাজারে হঠাৎ কাগজের কৃত্রিম  সংকট তৈরি হয়।  অনেকের মতে,সরকারের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী কাগজের কৃত্রিম সংকট তৈরি  করেছে। যাতে করে বেশি মুনাফা করতে পারে। ফলে শিক্ষার্থীরা সব শ্রেণিতে কবে বই পাবে, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। নির্ধারিত সময়ে পাঠ্যবই প্রাপ্তি নিয়ে এবার যেসব জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে, এর দায় জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এড়াতে পারে না।

কয়েক বছর ধরে মানসম্মত ও নির্ভুল পাঠ্যবই প্রণয়ন যেন একটি অসাধ্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে। ভুলে ভরা পাঠ্যপুস্তক নিয়ে অতীতে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিল। পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন, মুদ্রণ ও বিতরণের পুরো প্রক্রিয়ায় হযবরল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল। এবারও সেসব বিষয় থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। ইতোমধ্যে পাঠ্য বই নিয়ে অনেক সমালোচনা শুরু হয়ে। প্রতি বছর সিলেবাস পরিবর্তন করলে ছাত্রদের মনোজগতে বিরূপ প্রভাব পড়ে। এই সমস্যা থেকে উত্তরণে স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নেয়া দরকার।

আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় শিক্ষা খাত নিয়ে হযবরল ব্যবস্থা মোটেও কাম্য নয়। মানসম্মত ও ত্রুটিমুক্ত বই সময়মতো শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিতে হবে। নইলে তাদের দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করতে জটিলতা সৃষ্টি হবে। বেশ কয়েক বছর ধরে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে। বিভিন্ন গণমাধ্যম বলছে, এবার সবার বই পেতে মার্চ-এপ্রিল মাস লেগে যাবে। তাহলে তো শিক্ষার্থীদের শিক্ষাকার্য মারাত্মক ক্ষতি হবে। এই সমস্যা সমাধানে সরকারকে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অচিরেই পাঠ্য বই নিয়ে অনিশ্চয়তা দূর করতে হবে।

আই.কে.জে/

পাঠ্যবই

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250