মঙ্গলবার, ২১শে অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৫ই কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে প্রধান উপদেষ্টাকে ৬ আন্তর্জাতিক সংগঠনের চিঠি *** জন্ম নিয়েই বাপের সঙ্গে পাল্লা দিয়ো না—এনসিপি নেতাদের গোলাম পরওয়ার *** দীপাবলিতে ভারতীয়দের শুভেচ্ছা জানিয়ে বাংলাদেশি হাইকমিশনের ভিডিও প্রকাশ *** ভারতের সঙ্গে ১০ চুক্তি বাতিলের তথ্য প্রকাশ, যা বললেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা *** ‘জামায়াত ও আ. লীগ মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ’ *** সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত ও আ.লীগের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান *** সংখ্যালঘুদের বিপদে ফেলবেন না, সরকারকে মির্জা ফখরুল *** বড় পুঁজির স্বপ্ন দেখা শ্রীলঙ্কাকে ২০২ রানে থামাল বাংলাদেশ *** সালমান শাহর মৃত্যুর ২৯ বছর পর হত্যা মামলা করার নির্দেশ *** নির্বাচনে সেনা এক লাখ, পুলিশ দেড় লাখ ও ছয় লাখ আনসার মাঠে থাকবে

প্রধান উপদেষ্টাকে ৬ আন্তর্জাতিক সংগঠনের চিঠি

সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত ও আ.লীগের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ১২:১২ পূর্বাহ্ন, ২১শে অক্টোবর ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে সংস্কার এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি মানবাধিকার লঙ্ঘন রোধে ব্যবস্থা নিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ছয়টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা। তাদের চিঠিটি গত রোববার (১৯শে অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।

সংস্থাগুলো হলো সাংবাদিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় নিউইয়র্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে), নাগরিক সমাজের অধিকার রক্ষায় বিশ্ব সংগঠন দক্ষিণ আফ্রিকাভিত্তিক সংস্থা সিভিকাস, থাইল্যান্ডভিত্তিক রোহিঙ্গা নিয়ে নিয়োজিত মানবাধিকার সংগঠন ফোরটিফাই রাইটস, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটস ও টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউট। চিঠিটির হুবহু অনুবাদ পাঠকদের জন্য প্রকাশ করা হলো—

প্রিয় প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস,

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করার জন্য আমাদের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য আপনার প্রতি আমরা গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। জুলাই বিপ্লব ও শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার মৌলিক স্বাধীনতা পুনর্বহাল, আইন সংস্কার, গুম ও অন্যান্য নিপীড়নের তদন্ত করতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে।

২০২৬ সালের নির্বাচনের আগে যে অল্প সময় রয়েছে, সে সময়ে আমরা আপনার প্রতি মানবাধিকার রক্ষার পরিসর বাড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা বিধান এবং ভবিষ্যতে পরিস্থিতির অধঃপতন ঠেকানোর জন্য প্রয়োজনীয় শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানসমূহ নিশ্চিত করতে আহ্বান জানাচ্ছি।

আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন যে নিরাপত্তা খাত এখনো সংস্কার হয়নি এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা জবাবদিহি ও সংস্কার প্রচেষ্টায় সম্পূর্ণভাবে সহযোগিতা করছেন না। অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই বিগত সরকারের অধীনে সংঘটিত গুরুতর নিপীড়নের জন্য বিচার নিশ্চিত করতে আরও পদক্ষেপ নিতে হবে, একই সঙ্গে অবিলম্বে চলমান নির্বিচার গ্রেপ্তার ও আটক বন্ধ করতে হবে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের সদস্যদের বিরুদ্ধে করা সেসব মামলাও রয়েছে, যেগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে হয় এবং গ্রহণযোগ্য তথ্য-প্রমাণের ঘাটতি রয়েছে।

জাতিসংঘে রোহিঙ্গা বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে আপনি উল্লেখ করেছিলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনই এ সংকটের একমাত্র সমাধান এবং জরুরি প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে যারা নতুন এসেছে, তাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের সুযোগ দিতে হবে। রোহিঙ্গা শরণার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারে নিজেদের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার চূড়ান্ত লক্ষ্যের ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছে।

তবে ২০২৩ সালের শেষ পর্যায় থেকে শুরু করে আসা দেড় লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীসহ সব রোহিঙ্গার জন্যই মিয়ানমারের কোনো অংশই এখন স্বেচ্ছায়, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য নিরাপদ নয়।

বাংলাদেশে বসবাসকারী সবার অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষার জন্য আমরা আপনাকে দ্রুত নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি:

জুলাই অভ্যুত্থান চলাকালে এবং বিগত ১৫ বছরে সংঘটিত গুরুতর নিপীড়নের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করুন। এসব অপরাধের মধ্যে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের ঘটনা রয়েছে।

গুম ও নির্যাতনের জন্য মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় র‌্যাব ও ডিজিএফআইয়ের কর্মকর্তাসহ সেনাবাহিনীর বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)।

সেনাবাহিনীর সদস্যদের বিষয়ে বেসামরিক আদালত আইসিটির এখতিয়ারের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনসহ জবাবদিহির এসব প্রচেষ্টায় সেনাবাহিনীর পূর্ণ সহায়তা দেওয়া উচিত। প্রাতিষ্ঠানিক বা রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতানির্বিশেষে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারিক প্রক্রিয়া যেন আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রেখে সম্পন্ন করতে পারে, তা নিশ্চিত করার জন্য আইসিটিকে প্রয়োজনীয় আইনি কাঠামো, সম্পদ ও স্বাধীনতা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

আইসিটির অধীন মামলাগুলোসহ সব ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড প্রদান স্থগিত রাখার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণা দেওয়া উচিত।

অতীতের ধারা ভেঙে ফেলতে এবং মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) বিলুপ্ত করা, ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্সের (ডিজিএফআই) ক্ষমতা সীমিত করাসহ নিরাপত্তা খাত সংস্কার করুন। দায়মুক্তি নিয়ে র‌্যাবের গুরুতর অপরাধ সংঘটনের রেকর্ড প্রতিষ্ঠানটিকে সংস্কারের বাইরে নিয়ে গেছে এবং সামরিক বাহিনীর সব কর্মীকে বেসামরিক আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো থেকে সরিয়ে দেওয়া উচিত।

গুম ও অন্যান্য গুরুতর নিপীড়নে ডিজিএফআইয়ের সম্পৃক্ততা এর ভূমিকা ও ক্ষমতা কেবল সামরিক গোয়েন্দা কাজে সীমিত করার প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরে। একই সঙ্গে এর কার্যক্রম সীমাবদ্ধ ও স্পষ্ট আইনগত ম্যান্ডেট থাকা আবশ্যক।

গুমকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দিন এবং গুমবিষয়ক তদন্ত কমিশনকে তাদের ম্যান্ডেট সম্পূর্ণ করতে সহায়তা দিন। অন্তর্বর্তী সরকারকে খসড়া ‘এনফোর্সড ডিজঅ্যাপিয়ারেন্স প্রিভেনশন অ্যান্ড রেড্রেস অর্ডিন্যান্স’ গ্রহণ করতে হবে, তবে এর আগে নিশ্চিত করতে হবে যে, এটি ‘ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন ফর দ্য প্রোটেকশন অব অল পারসনস ফ্রম এনফোর্সড ডিজঅ্যাপিয়ারেন্স’সহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়েছে এবং এ ধরনের অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড বাদ দেওয়া হয়েছে।

গুমবিষয়ক তদন্ত কমিশন যেন তাদের ম্যান্ডেট সম্পূর্ণ করতে পারে, সে জন্য তাদের পর্যাপ্ত সময় ও সম্পদ পাওয়াটা অন্তর্বর্তী সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে তদন্তে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করতে হবে, যার মধ্যে আটক কেন্দ্রগুলোতে অবাধ প্রবেশের নিশ্চয়তা এবং সব প্রাসঙ্গিক নথি দেখার–লাভের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।

প্যারিস নীতির আলোকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে (এনএইচআরসি) সংস্কার করতে হবে, যাতে এর কার্যকারিতা নিশ্চিত হয় এবং এর কার্যক্রম, সদস্য নির্বাচন ও অর্থায়নে রাজনৈতিক প্রভাব থেকে স্বাধীনতা বজায় থাকে।

এনএইচআরসির স্বাধীনভাবে নিরাপত্তা বাহিনী ও অন্যান্য রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ওঠা নিপীড়নের অভিযোগ স্বাধীনভাবে তদন্ত করার ক্ষমতা থাকতে হবে এবং এর ম্যান্ডেটকে শুধু দেশীয় আইন অনুযায়ী অধিকারগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড অনুযায়ী পরিচালিত করতে হবে।

সাইবার নিরাপত্তা অধ্যাদেশ, ২০২৫ এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও অন্যান্য মৌলিক অধিকার সীমিত করতে ব্যবহৃত নিপীড়নমূলক আইনসমূহ; যার মধ্যে সন্ত্রাসবিরোধী আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন, অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ও দণ্ডবিধির আওতায় ফৌজদারি মানহানি—এসব আইন আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী বাতিল বা সংশোধন করুন।

অন্তর্বর্তী সরকার সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩ বাতিল করলেও এর জায়গায় আনা সাইবার নিরাপত্তা অধ্যাদেশ, ২০২৫ আন্তর্জাতিক মান পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং এতে বিভিন্ন অস্পষ্ট ধারা রয়েছে, যেগুলো রাষ্ট্রের অতিরিক্ত হস্তক্ষেপের গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করেছে।

ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ ও জাতীয় উপাত্ত ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী সংশোধন করুন। কারণ, এগুলোতে রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের জন্য বিরাট ছাড় থাকবে। এসব খসড়া যেন প্রকৃতপক্ষে ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা নিশ্চিত করে এবং রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন ও অযাচিত নজরদারি রোধ করা যায়, সে জন্য এগুলোর সংশোধন করতে হবে। অধ্যাদেশগুলো যেন অধিকারভিত্তিক হয় এবং এতে বিশ্বের সেরা চর্চাগুলোর প্রতিফলন থাকে, তা নিশ্চিত করতে অংশীজনদের সঙ্গে অর্থবহ সংলাপ আবশ্যক।

সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করুন এবং সাংবাদিকদের নির্বিচার গ্রেপ্তার ও আটক থেকে রক্ষা করুন—তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা যা-ই মনে করা হোক না কেন, বিশেষ করে, যেখানে অভিযোগের পক্ষে গ্রহণযোগ্য প্রমাণ নেই অথবা যখন গ্রেপ্তার বা আটকের ঘটনা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বা অন্যান্য অধিকার লঙ্ঘন করে।

আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সাংবাদিকদের রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও সংস্থা এবং এর বাইরের অন্যদের হয়রানি ও সহিংসতা থেকে রক্ষা করার এবং কোনো হামলার ক্ষেত্রে দ্রুত ও স্বাধীন তদন্ত পরিচালনা করার আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা বিষয়ে আন্তর্জাতিক আইনের সামঞ্জস্যপূর্ণ যেসব সুপারিশ গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন করেছে, সেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।

নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও আটক রোধ করুন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বা অন্যান্য মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করে—এমন সব মামলা প্রত্যাহার বা খারিজ করার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার ব্যবস্থা করুন।

অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা–নির্বিশেষে ২০২৪ সালের আগস্টের আগে ও পরে করা ওই ধরনের সব মামলা পর্যালোচনা ও খারিজ করা। এসব মামলার মধ্যে আওয়ামী লীগের সদস্য ও সমর্থক যারা অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকার গ্রহণযোগ্য প্রমাণ ছাড়া দোষী অভিযুক্ত বা আটক রয়েছেন, তাদেরও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের ওপর বিস্তৃত পরিসরে বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করুন। এই আইনের আওতায় সভা, সমাবেশ ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে অতিমাত্রায় সীমিত করা হয়েছে এবং তা শান্তিপূর্ণ কার্যক্রমে যুক্ত আওয়ামী লীগের সদস্য ও সমর্থক হিসেবে বিবেচিত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে ব্যবহার করা হচ্ছে।

২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেওয়া জাতিসংঘের সত্য অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে যেমনটি সুপারিশ করা হয়েছিল, ওই প্রতিবেদনে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ার কথা বলা হয়—অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই রাজনৈতিক দলের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রদান থেকে বিরত থাকতে হবে। এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা প্রকৃত বহুদলীয় গণতন্ত্রে ফেরার পথ বাধাগ্রস্ত করবে এবং বাংলাদেশি ভোটারদের বড় অংশকে কার্যত বঞ্চিত করবে।

নাগরিক সমাজের সংস্থাগুলোর তহবিল ও কার্যক্রমের ওপর আরোপিত বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করুন এবং এনজিওবিষয়ক ব্যুরো সংস্কার করুন। এনজিওবিষয়ক ব্যুরো অতীতে নাগরিক সমাজের সংস্থাগুলোর ওপর নজরদারি ও হয়রানি করার জন্য রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে এসেছে। এগুলোর মধ্যে প্রকল্প ও আন্তর্জাতিক তহবিলের অনুমোদন বিলম্ব বা বাতিল করার মতো বিষয় রয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের জরুরি ভিত্তিতে এনজিওবিষয়ক ব্যুরো এবং বিদেশি অনুদান (স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রমে) রেগুলেশন আইন পর্যালোচনা ও সংস্কার করা উচিত, যাতে বিধিনিষেধ ছাড়া আন্তর্জাতিক তহবিল প্রাপ্তি বা অন্য ধরনের অতিরিক্ত নজরদারির অধীনে না থেকে নাগরিক সমাজ স্বাধীনভাবে কার্যক্রম চালাতে পারে।

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জোরপূর্বক প্রত্যাবাসন থেকে রক্ষা করুন এবং তাদের চলাফেরা, জীবিকা ও শিক্ষার স্বাধীনতার ওপর আরোপিত বিধিনিষেধ কমিয়ে দিন। ২০২৩ সালের শেষ দিক থেকে এখন পর্যন্ত পালিয়ে আসা দেড় লাখের বেশি রোহিঙ্গাসহ বাংলাদেশে থাকা ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গার কারও জন্য রাখাইন রাজ্যসহ মিয়ানমারের কোনো অংশ বর্তমানে স্বেচ্ছায়, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য নিরাপদ নয়। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি পরিস্থিতি এমন অবস্থায় থাকা পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের জোর করে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন ঠেকানোর আহ্বান জানাচ্ছি।

এ ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের শরণার্থীশিবিরে চলাফেরা, জীবিকার সুযোগ ও আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় প্রবেশের ওপর আরোপিত বিধিনিষেধ কমানো উচিত। যখন অনুদান কমে যাচ্ছে, এমন সময়ে শরণার্থীশিবিরের পরিস্থিতি উন্নয়ন, ত্রাণের ওপর নির্ভরতা কমানো ও শরণার্থীদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার জন্য এসব সুযোগ আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

বাংলাদেশ বা মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের (আইসিসি) চলমান তদন্তে সম্পূর্ণভাবে সহযোগিতা করুন, যার মধ্যে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে অবস্থানরত কোনো ব্যক্তি/ব্যক্তিবর্গকে আইসিসি চাইলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা এবং এই আদালতের কাছে হস্তান্তরের মতো বিষয় রয়েছে।

বিনীত,

সিভিকাস

কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস

ফোরটিফাই রাইটস

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটস

টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউট।

আওয়ামী লীগ আন্তর্জাতিক সংগঠন

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

ইরানের সঙ্গে সব ক্ষেত্রে সম্পর্ক জোরদার করতে প্রস্তুত রাশিয়া

🕒 প্রকাশ: ০৩:১৬ পূর্বাহ্ন, ২১শে অক্টোবর ২০২৫

সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে প্রধান উপদেষ্টাকে ৬ আন্তর্জাতিক সংগঠনের চিঠি

🕒 প্রকাশ: ০২:৩২ পূর্বাহ্ন, ২১শে অক্টোবর ২০২৫

জন্ম নিয়েই বাপের সঙ্গে পাল্লা দিয়ো না—এনসিপি নেতাদের গোলাম পরওয়ার

🕒 প্রকাশ: ০১:০৫ পূর্বাহ্ন, ২১শে অক্টোবর ২০২৫

দীপাবলিতে ভারতীয়দের শুভেচ্ছা জানিয়ে বাংলাদেশি হাইকমিশনের ভিডিও প্রকাশ

🕒 প্রকাশ: ১২:৪৯ পূর্বাহ্ন, ২১শে অক্টোবর ২০২৫

ভারতের সঙ্গে ১০ চুক্তি বাতিলের তথ্য প্রকাশ, যা বললেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

🕒 প্রকাশ: ১২:৪১ পূর্বাহ্ন, ২১শে অক্টোবর ২০২৫

Footer Up 970x250