ছবি - সংগৃহীত
প্রতিবছর ১৬ই অক্টোবর বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে বিশ্ব খাদ্য দিবস। ১৯৪৫ সালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা প্রতিষ্ঠার স্মরণে এই দিনটি পালিত হয়। খাদ্য নিরাপত্তা ও দারিদ্র্য বিমোচনে কাজ করা বিভিন্ন সংস্থা, যেমন- জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিল এই দিনটি ব্যাপকভাবে উদযাপন করে থাকে। ১৯৮১ সাল থেকে প্রতি বছর বিশ্ব খাদ্য দিবস একটি আলাদা প্রতিপাদ্য গ্রহণ করে থাকে। এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘উন্নত জীবন ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য খাদ্যের অধিকার।'
খাদ্য সংকট মোকাবেলা, সংঘাতপূর্ণ এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখা এবং যুদ্ধ ও সংঘাতের অস্ত্র হিসাবে খাদ্যের ব্যবহার বন্ধ করতে ভূমিকা পালন করার জন্য ২০২০ সালে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচিকে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।
বিশ্বজুড়ে প্রায় ৭৮ কোটি মানুষ অনাহার–অর্ধাহারে খাদ্য সংকটে দিন কাটাচ্ছে। আরো ভয়াবহ হলো যে, প্রতি কয়েক সেকেন্ডে ক্ষুধায় একজন করে লোক মারা যাচ্ছে। খাদ্যের ব্যাপক অপচয়ের কারণে প্রায় ৫ কোটি শিশু মৃত্যু ঝুঁকিতে রয়েছে। কিন্তু ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব গড়ার অঙ্গীকার থাকলেও প্রতিবছরই ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েই চলেছে।
বাংলাদেশে স্বাধীনতার পর থেকে গড়ে তিন শতাংশ হারে খাদ্যশষ্যের উৎপাদন বেড়েছে। তারপরও প্রয়োজনের তুলনায় কম। প্রতিবছর ৭০-৮০ লক্ষ টন খাদ্যশস্য (চাল, গম, ভূট্টা) আমদানি করতে হয়। এর সাথে ডাল, তেলবীজ, চিনি, মসলা ও দুগ্ধজাত পণ্য যোগ করা হলে আমদানির পরিমাণ এক লক্ষ টন ছাড়িয়ে যায়। যা টাকার অংকে প্রায় এক লক্ষ কোটি।
বর্তমানে দেশে প্রায় ২২ শতাংশ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। ২০৩০ সালে সবার জন্য খাদ্য ও পুষ্টির নিশ্চয়তা বিধান করতে হলে কৃষিপণ্যের উৎপাদন আরো পাঁচ শতাংশ বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে খাদ্যের অপচয় কমাতে হবে। এটি খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার ক্ষেত্রে বড় বাধা। ফুড ওয়েস্ট ইনডেক্স রিপোর্ট-২০২৪ অনুযায়ী, বাংলাদেশে একজন ব্যক্তি গড়ে ৮২ কেজি খাদ্য অপচয় করছে। অন্যদিকে ভারতে একজন ব্যক্তি গড়ে ৫৫ কেজি, রাশিয়ায় ৩৩ কেজি, যুক্তরাষ্ট্রে ৭৩ কেজি, যুক্তরাজ্যে ৭৬ কেজি খাদ্য অপচয় করছে।
বাংলাদেশ খাদ্য ঘাটতির দেশ হওয়া সত্ত্বেও উন্নত দেশগুলো থেকেও বেশি খাদ্য অপচয় করছে। যা মোটেও কাম্য নয়। সবার জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে খাদ্য অপচয় রোধ করতে হবে।
আই.কে.জে/