ছবি: সংগৃহীত
উভয় পক্ষের ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও প্রাণহানির পর অবশেষে ইরান-ইসরায়েলের ১২ দিনের যুদ্ধ ‘শেষ’ হয়েছে। আমেরিকার উদ্যোগে ও কাতারের মধ্যস্থতায় এ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে।
তবে এ ‘যুদ্ধবিরতিতে’ অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি দীর্ঘ ২০ মাসের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞ চলতে থাকা গাজাকে। এ অবস্থায় গাজাকে এর অন্তর্ভুক্ত করে জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার দাবি করেছে ইসরায়েলি পরিবারগুলো। পাশাপাশি ইসরায়েলের বিরোধী দলগুলোও সরকারের প্রতি একই আহ্বান জানিয়েছে। খবর আল জাজিরা ও বিবিসির।
ইসরায়েলের মধ্য বামপন্থী ডেমোক্র্যাটস পার্টির নেতা ইয়াইর গোলান সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, ইরানের সঙ্গে ঘোষিত ‘যুদ্ধবিরতির’ পর যেন গাজায়ও যুদ্ধবিরতির জন্য সম্মত হয় তারা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা এক পোস্টে গোলান বলেন, ‘এখনই সময় মিশন সম্পূর্ণ করার। সব বন্দীকে ফিরিয়ে আনতে হবে, গাজায় যুদ্ধের ইতি টানতে হবে এবং সেই অভ্যুত্থান একেবারে বন্ধ করতে হবে, যা ইসরায়েলকে দুর্বল, বিভক্ত ও অসহায় করে তুলছে।’
ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটে বিরোধীদলীয় নেতা ও ইয়েশ আতিদ পার্টির প্রধান ইয়াইর লাপিদও একই ধরনের আহ্বান জানিয়েছেন। দেশটির সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েলকে তিনি বলেন, ‘এবং এখন গাজার পালা। সেখানে কাজ শেষ করার সময় এসেছে। বন্দীদের ফিরিয়ে আনতে হবে, যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। ইসরায়েলকে পুনর্গঠনের কাজ শুরু করতে হবে।’
গাজায় আটক ইসরায়েলি নাগরিকদের স্বজনরা তাদের সরকারকে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে গাজায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হাতে জিম্মি প্রিয়জনদের ফেরানোর ব্যবস্থা করতে বলেছেন।
এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি জিম্মিদের পরিবারগুলোর সংগঠন ‘হস্টেজেস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিজ ফোরাম’ বলেছে, ‘যুদ্ধবিরতির এ উদ্যোগে গাজাকেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আমরা সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, তারা যেন অবিলম্বে এমন আলোচনায় বসে, যার মাধ্যমে সব আটক ব্যক্তির মুক্তি নিশ্চিত হবে এবং গাজায় যুদ্ধের অবসান ঘটবে। যদি তারা ইরানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির সমঝোতায় পৌঁছাতে পারে, তাহলে গাজার যুদ্ধও থামানো সম্ভব।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইরানে সফল (তথাকথিত) অভিযান এবং ইরানি জোটের বিরুদ্ধে একটি জোরালো, ধ্বংসাত্মক আঘাতের পর ইসরায়েল যদি আবার গাজার কর্দমাক্ত পরিস্থিতিতে জড়িয়ে পড়ে, তা হবে অকল্পনীয়। এটা সব ধরনের যুক্তি ও ইসরায়েলি স্বার্থের সম্পূর্ণ বিপরীত।
সংগঠনটি বিবৃতিতে আরও বলেছে, ইরানে অভিযান শেষ করেও যদি আটক ব্যক্তিদের মুক্তির এ সুযোগ কাজে লাগানো না হয়, তাহলে তা হবে এক বিশাল কূটনৈতিক ব্যর্থতা। এখন এক ঐতিহাসিক সুযোগ তৈরি হয়েছে আর এ সুযোগ দুই হাতে কাজে লাগানো সরকারের কর্তব্য।
গত ২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবর গাজা থেকে সীমান্ত পেরিয়ে হামাস ইসরায়েলে হামলা চালায়। সেই হামলায় অন্তত ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়। এ ছাড়া হামাস ২৫১ জনকে জিম্মি করে আনে।
এরই মধ্যে কয়েক দফায় বেশ কয়েকজন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়। মারাও গেছেন বেশ কয়েকজন। তবে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুসারে, গাজায় হামাসের হাতে এখনো অন্তত ৫০ জন জিম্মি রয়ে গেছেন। যার মধ্যে ২০ জন এখনো জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে।