ছবি: সংগৃহীত
ইরান ও ইসরায়েলকে নিয়ে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু মাত্র একদিনের ব্যবধানে উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলায় সেই ঘোষণার কার্যকারিতা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। এরই মধ্যে হোয়াইট হাউসের সাউথ লনে সংবাদমাধ্যমের সামনে ট্রাম্পের অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার ও প্রকাশ্য ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ—এ সংকট পরিস্থিতিতে তার গভীর হতাশা ও রাগকে স্পষ্ট করেছে। খবর বিবিসির।
ট্রাম্প সাধারণত তার রাগ প্রকাশ করেন ট্রুথ সোশ্যালের মতো প্ল্যাটফর্মে। সাংবাদিকদের সামনে তিনি সচরাচর ‘ডিলমেকার’ ইমেজ ধরে রাখেন। তবে আজ মঙ্গলবার (২৪শে জুন) সকালে তিনি বলেন, ‘আমরা এখন এমন দুই দেশের মুখোমুখি, যারা এতদিন ধরে যুদ্ধ করে আসছে যে, তারা নিজেরাও জানে না কী করছে।’
এ বাক্যের শেষাংশে তিনি এমন এক শব্দ ব্যবহার করেন, যা আমেরিকার প্রেসিডেন্টের মুখে সচরাচর শোনা যায় না। বিশ্লেষকদের মতে, এটি শুধু কূটনৈতিক হতাশা নয়, বরং তার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈদেশিক সাফল্য হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার আশঙ্কার প্রকাশ।
ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইরান ও ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে যাবে। ইসরায়েল আনুষ্ঠানিক সম্মতি জানালেও পরে ইরান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া এবং ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়ায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ট্রাম্প একপর্যায়ে বলেন, ‘আমি পছন্দ করিনি, যুদ্ধবিরতির পর ইসরায়েল সরাসরি হামলা চালাল।’ তিনি ইসরায়েলকে হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘ইসরায়েল, বোমা ফেলো না। এটা করলে তা হবে একটি বড় লঙ্ঘন।’
মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ থামানো ট্রাম্পের জন্য কেবল কূটনৈতিক সাফল্য নয়, ভবিষ্যৎ নির্বাচনের আগে বড় রাজনৈতিক পুঁজিও বটে। গাজা, ইউক্রেন, কঙ্গো বা ভারত-পাকিস্তান প্রসঙ্গে শান্তির কৃতিত্ব দাবি করলেও ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ থামানো হলে সেটি হতো সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ অর্জন। তাই বর্তমান সংঘাত থামাতে না পারলে তা ট্রাম্পের জন্য বিশ্বাসযোগ্যতা ও নেতৃত্বের প্রশ্নে বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
ট্রাম্পের আজকের প্রকাশ্য রাগ, অশ্রাব্য ভাষা ও হতাশা কেবল রাজনৈতিক নাটকের অংশ নয়, বরং এটি বোঝায়, তিনি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারায় নিজেও চাপের মধ্যে আছেন। যেসব কূটনৈতিক সাফল্য দিয়ে তিনি নির্বাচনী প্রচারে যেতে চাচ্ছিলেন, সেই ‘শান্তি’ এখন ক্রমশ ভেঙে পড়ছে।
খবরটি শেয়ার করুন