শনিবার, ২৮শে জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৩ই আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** সাকিবকে ছাড়িয়ে বহুদূর যেতে চান তাইজুল *** আমেরিকার সঙ্গে আলোচনার কোনো পরিকল্পনা নেই: ইরান *** যুদ্ধের পর এ যেন এক নতুন ইরান, জনগণের মতো বদলে গেছে সরকারও *** লঙ্কায় স্পিন ভেলকিতে সাকিবের রেকর্ডে ভাগ বসালেন তাইজুল *** মূল সমাপ্তি ও বাদ পড়া দৃশ্য নিয়ে আজ মুক্তি পাচ্ছে ‘শোলে’ *** সাইপ্রাসে যে কারণে বিপুল জমি কিনছেন ইসরায়েলিরা *** চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনাল বিদেশিদের ইজারা না দেওয়ার দাবিতে রোডমার্চ শুরু *** অনুকূল পরিবেশে বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়ে কাজ করতে প্রস্তুত ভারত: রণধীর জয়সওয়াল *** মালয়েশিয়ায় ৩৬ বাংলাদেশি যে অভিযোগে গ্রেপ্তার *** সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব: প্রধান উপদেষ্টা

যুদ্ধের পর এ যেন এক নতুন ইরান, জনগণের মতো বদলে গেছে সরকারও

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৮:৪২ অপরাহ্ন, ২৭শে জুন ২০২৫

#

যুদ্ধের পর গত ২৫শে জুন তেহরানের আদাজি মনুমেন্টের সামনে বসে আছেন এক যুগল। ছবি: ইরান ইন্টারন্যাশনাল

ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধ অবসানের পর ইরানি শাসকগোষ্ঠী ও রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম দেশজুড়ে একটি জাতীয় ঐক্যের বিরল প্রদর্শন উদ্‌যাপন করছে। তবে বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেছেন, এ শান্ত আবরণ শিগগির গভীর সামাজিক অস্থিরতায় রূপ নিতে পারে।

ইরান ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার (২৬শে জুন) প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান সারাদেশের মানুষ, এমনকি রাজনৈতিক বন্দীদেরও যুদ্ধকালীন সংযম প্রদর্শনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তুলনামূলকভাবে একজন মধ্যপন্থী নেতা হিসেবে তিনি জনগণের প্রশংসা করেছেন। কারণ, সরকার সাধারণ নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হলেও তারা রাস্তায় নামেননি, ক্ষোভ প্রকাশ করেননি।

তবে ইরান সমাজবিজ্ঞান সমিতির সভাপতি সাঈদ মোইদফার সতর্ক করে বলেছেন, ‘যদি সরকার জনগণের সঙ্গে বাড়তে থাকা দূরত্ব ঘোচাতে পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে যুদ্ধ শেষ হওয়াটা শান্তি নয়, বরং নতুন সামাজিক সংকটের সূচনা হতে পারে।’

আরেকটি বিষয় হলো—যুদ্ধবিরতির পর ইরানের ইসলামিক মতাদর্শের ভাষা এক পাশে সরিয়ে এখন জাতীয় পরিচয়ের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। শিরোনামগুলো এখন ‘ইরান’ শব্দ দিয়ে শুরু হচ্ছে, ‘ইসলাম’ শব্দটি এর পেছনে পড়ে গেছে। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সাম্প্রতিক ভাষণে ‘ইসলামিক ইরান’ শব্দযুগলটি মাত্র একবার ব্যবহার করা হয়েছে, তাও সেটি প্রসঙ্গহীনভাবে।

রাষ্ট্রীয় ও সংস্কারপন্থী সংবাদমাধ্যমগুলো এ পরিবর্তনকে প্রতিধ্বনিত করেছে। দৈনিক ‘এতেমাদ’ ও ‘আরমান মেল্লি’ তাদের প্রথম পাতায় জাতীয় সংহতির প্রশংসা করেছে এবং ঐক্যের আহ্বান জানানো বিশিষ্ট নাগরিকদের তুলে ধরেছে।

এক প্রতীকী আয়োজন হিসেবে তেহরান সিম্ফনি অর্কেস্ট্রা ‘ও ইরান’ দেশাত্মবোধক সংগীত পরিবেশন করেছে তেহরানের আজাদি মনুমেন্টের নিচে। বেশ কিছু শিল্পী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব পূর্বনির্ধারিত সাক্ষাৎকারে দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রশংসা করেছেন। ‘এতেমাদ’ পুরো এক পৃষ্ঠাজুড়ে তাদের ছবি প্রকাশ করেছে।

এ ঐক্যের আহ্বানের পেছনে সরকারের পক্ষ থেকে একধরনের দায়বোধও দেখা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে, যেন সরকার এখন জনগণের কাছে ঋণী। সংস্কারপন্থী সমাজবিজ্ঞানী হামিদ রেজা জালাইপুর বলেন, ‘যুদ্ধ শেষে জনগণকে পুরস্কৃত করা সরকারের দায়িত্ব, যাতে জাতীয় ঐক্য শক্তিশালী হয়।’

এমনকি কিছু রক্ষণশীলও একই সুরে কথা বলছেন। এক সাবেক সম্পাদক স্বীকার করেছেন, এখন সরকারের পালা—যুদ্ধের সময় জনগণের সহনশীলতার প্রতিদান দেওয়ার।

এদিকে সংসদ সদস্যরা এখন নতুন বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে তৎপর। তারা সর্বসম্মতিক্রমে জাতিসংঘ পারমাণবিক সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা বন্ধের প্রস্তাব পাস করেছে, যেন ‘বিপ্লবী অবস্থান’ ধরে রাখতে পারেন।

জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির সদস্য আহমদ বখশায়েশ বলেছেন, সরকারকে অর্থনীতি ও পররাষ্ট্রনীতি নতুনভাবে সাজাতে হবে। কমিটির আরেক সদস্য বেনাম সাঈদিও সরকারবিরোধীদের সঙ্গে পুনর্মিলনের আহ্বান জানিয়েছেন।

ইরান

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন