ফাইল ছবি (সংগৃহীত)
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়িতে গ্যাসের সংকট তীব্র আকার ধারণ করছে। যদিও শীতকালে গ্যাস সংকট বাড়ে, কিন্তু এ বছর শীতের আগেই নাকাল রাজধানীবাসী। ঢাকার অধিকাংশ বাড়িতে ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চুলা জ্বলছে না। কোথাও সকাল সাতটা থেকে বিকেল তিনটা, আবার কোথাও সকাল ছয়টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত গ্যাসের চুলাই জ্বলে না। কর্মজীবী মানুষের রান্না প্রায় বন্ধ থাকে। খাবারের জন্য অনেককেই হোটেলের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এতে স্বল্প আয়ের মানুষের সংকট আরো বেড়ে যাচ্ছে। স্বল্প আয়ের মানুষদের রাত জেগে রান্না করে দিনের বেলায় কেরোসিনের স্টোভ কিংবা সিলিন্ডারের চুলা গরম করে খেতে হচ্ছে। নিম্ন আয়ের মানুষজন মাটির চুলাও ব্যবহার করছে। শুধু স্বচ্ছল পরিবারগুলো সিলিন্ডার গ্যাস কিংবা বৈদ্যুতিক চুলা ব্যবহার করে রান্নার কাজ করছে।
পেট্রোবাংলার সূত্র মতে, ঢাকা শহরে এখন গ্যাসের চাহিদা প্রায় সাড়ে তিন হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। কিন্তু সরবরাহ আছে দুই থেকে আড়াই হাজার ঘনফুট। ফলে প্রতিদিনই ঘাটতি থাকে এক থেকে দেড় হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। চাহিদা ও সরবরাহকেই দায়ী করছে কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের অধীন ৫টি গ্যাস ক্ষেত্রের উৎপাদন ক্ষমতা ৮৫১ মিলিয়ন ঘনফুট কিন্তু উৎপাদন করতে পারছে ৫৫১ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। একইভাবে সিলেটে ৫টি গ্যাস ফিল্ড থেকে পাওয়া যাচ্ছে ১২৮ মিলিয়ন ঘনফুট। বাপেক্সের অধীনে ৮টি গ্যাস ফিল্ডের উৎপাদন ক্ষমতা ১৪৫ মিলিয়ন ঘনফুট কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে ১২৮ মিলিয়ন ঘনফুট। আইসি-এর অধীনে চার গ্যাস ক্ষেত্রের উৎপাদন ক্ষমতা ১৬১৫ মিলিয়ন, কিন্তু একইভাবে পাওয়া যাচ্ছে ১০২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। আর এলএনজি আসার কথা ১১০০ মিলিয়ন, পাওয়া যাচ্ছ মাত্র ৩৭৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস।
ঢাকায় সাধারণত শীতকালে গ্যাস সংকট তীব্র হয়। কিন্তু এ বছর শীতের আগেই মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। সরকার বলছে ঘাটতি মেটাতে রেশনিং করা ছাড়া এই মুহূর্তে বিকল্প কোনো উপায় নেই। কিন্তু গ্যাস না থাকলেও গ্যাসের বিল কম নেয়া হচ্ছে না বরং প্রতিবছরই বিল বেড়েই চলেছে। গ্যাস সংকটে নিম্ন ও স্বল্প আয়ের মানুষের দৈনন্দিন জীবনে নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে। রাজধানীবাসী দ্রুত এই সংকটের সমাধান চায়।
আই.কে.জে/