ছবি: সংগৃহীত
পেশায় গুপ্তচর। বিপদে পড়লে হাতের কাছে যা মেলে, তাই দিয়ে তৈরি করে ফেলেন জটিল সব যন্ত্র। আর সেসব যন্ত্র দিয়ে বড় বড় সব কাজ করে ফেলেন—তিনি ম্যাকগাইভার।
বিশ্বজুড়ে সাড়া ফেলেছিল টিভি সিরিজ ম্যাকগাইভার। ১৯৮৫ সালের ২৯শে সেপ্টেম্বর সিরিজটি প্রচারে আনে এবিসি নেটওয়ার্ক। সাত বছর পর ১৯৯২ সালের ২১শে মে সিরিজটির প্রচার শেষ হয়। তথ্যসূত্র: রিমাইন্ড ম্যাগাজিন, আরডিঅ্যান্ডারসন ডটকম।
নব্বই দশকে বাংলাদেশে ধারাবাহিকটি প্রচার করে বিটিভি, এরপর ‘আঙ্গাস ম্যাকগাইভার’ চরিত্রটিকে আপন করে নেয় শিশু–কিশোরেরা। নব্বই দশকে বাংলাদেশে দেদার বিক্রি হতো ম্যাকগাইভারের ছবিসংবলিত খাতা আর ভিউকার্ড, স্টিকার। ম্যাকগাইভার হওয়ার স্বপ্ন দেখত শিশু–কিশোরেরা।
ম্যাকগাইভার প্রচারের চার দশক পূর্ণ হয়েছে গত ২৯শে সেপ্টেম্বর। ‘ম্যাকগাইভার’ চরিত্রটিকে প্রাণ দিয়েছেন মার্কিন অভিনেতা রিচার্ড ডিন অ্যান্ডারসন। তবে ম্যাকগাইভার নামেই দর্শক তাকে চেনেন বেশি। ১৯৮৫ সালে ম্যাকগাইভার সিরিজে নাম লেখান অ্যান্ডারসন।
এর আগে টেলিভিশন সোপ অপেরা জেনারেল হসপিটাল–এ ড. জেফ ওয়েবার চরিত্র করে খ্যাতি পান। ১৯৯২ পর্যন্ত ম্যাকগাইভার সিরিজে কাজ করেন। ১৯৯৭ সালে আরেক মার্কিন টিভি সিরিজ স্টারগেট এসজি-১–এ কাজ শুরু করেন অ্যান্ডারসন। ২০০৭ সাল পর্যন্ত স্টারগেট এসজি-১-এ কাজ করেছেন তিনি।
সর্বশেষ ২০১৩ সালে মার্কিন টেলিভিশন সিটকম ডোন্ট ট্রাস্ট দ্য বি—ইন অ্যাপার্টমেন্ট টোয়েন্টি থ্রির একটি পর্বে তাকে দেখা গেছে। এরপর তাকে আর অভিনয়ে দেখা যায়নি। তখন মেয়ে ওয়াইলির বয়স ১৫ বছর।
মূলত মেয়েকে সময় দিতেই অভিনয় ছেড়েছেন তিনি। নিজের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে অ্যান্ডারসন লেখেন, ‘যতটা সম্ভব ওয়াইলির পাশে থাকার পরিকল্পনা করেছি।’
তখন তার বয়স ছিল ৬৪ বছর। শরীরও খুব একটা সায় দিচ্ছিল না। ম্যাকগাইভার–এ নিজেই নিজের স্টান্ট করেছেন, এর প্রভাবে দীর্ঘ মেয়াদে পা, হাঁটু ও পিঠের ব্যথায় ভুগতেন; এর মধ্যে হৃদ্যন্ত্রে স্টেন্টও পরাতে হয়েছিল। শারীরিক অসুস্থতার মধ্যে টানা শুটিংয়ের ধকল সহ্য করতে পারছিলেন না।
অভিনয় ছাড়ার এত বছর পরও কাজের প্রস্তাব পান অ্যান্ডারসন। তবে আর ফিরবেন না, এমন সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন এ অভিনেতা।
৭৫ বছর বয়সী অ্যান্ডারসন বর্তমানে ক্যালিফোর্নিয়ার মালিবু শহরে নিজের বাড়িতে বাস করছেন। মাঝেমধ্যে জন্মস্থান মিনেসোটার মিনিয়াপলিসেও থাকেন। মেয়ে ওয়াইলিও বড় হয়েছেন, কয়েক মাস আগে ২৭ বছর পূর্ণ করেছেন। ওয়াইলি পরিচালক ও প্রযোজক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
মেয়ে ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালোবাসেন অ্যান্ডারসন। অভিনয় ছাড়লেও ভক্তরা তাকে মনে রেখেছেন। ফ্রান্স, জার্মানিসহ বেশ কয়েকটি দেশে ‘ফ্যান মিট’–এ অংশ নেন।
২০২৪ সালের এপ্রিলে ফ্রান্সে এক আয়োজনে ম্যাকগাইভার–এ কাজের অভিজ্ঞতার কথা বলেছিলেন তিনি। বর্তমানে সমাজকর্মী ও পরিবেশকর্মী হিসেবেও সক্রিয়। ঘুরতেও ভালোবাসেন অ্যান্ডারসন।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন