বৃহস্পতিবার, ৩১শে জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৬ই শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** এই সরকারের এক্সিট পলিসি চিন্তা করার সময় এসেছে: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য *** জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় সব পদক্ষেপ নেবে নয়াদিল্লি *** ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা চান দেশটির ৩১ বিশিষ্ট নাগরিক *** এক সাপুড়ের প্রাণ নেওয়া সাপকে চিবিয়ে খেলেন আরেক সাপুড়ে *** তিন বাহিনীর প্রধান নিয়োগ রাষ্ট্রপতির হাতে রাখার প্রস্তাব *** ডাকসু নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্যানেল দিচ্ছেন উমামা, যোগদানের আহ্বান ফেসবুকে *** ১৫ই আগস্টের মধ্যে চাকসুর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা *** ‘প্রিয় বন্ধু’ ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের *** আইন ও বিচার বিভাগে পদায়ন বিধিমালা জারি *** এনসিপির অনুরোধে সমাবেশের স্থান পরিবর্তন ছাত্রদলের

যাত্রী ছাউনিগুলোর সঠিক ব্যবহারে উদ্যোগ নিতে হবে সিটি করপোরেশনকে

সম্পাদকীয়

🕒 প্রকাশ: ০২:২৬ অপরাহ্ন, ২১শে জানুয়ারী ২০২৫

#

ছবি - সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকা ক্রমান্বয়ে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ঢাকা এখন বায়ু দূষণ, শব্দ দূষণ, পরিবেশ দূষণের শহর হিসেবে পরিচিত। এই রাজধানীতে বসবাসের জন্য প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ নতুন করে যোগ হচ্ছে। কিন্তু সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে নাগরিক সেবা তেমন বাড়েনি। সেবা বাড়ানোর লক্ষ্যে ঢাকা সিটিকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হলেও নাগরিক সুবিধা তেমন বৃদ্ধি পায়নি।

রাজধানীতে এখন প্রায় আড়াই কোটি মানুষ বসবাস করেন। এর মধ্যে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ গণপরিবহণে যাতায়াত করেন। পুরুষের পাশাপাশি লাখ লাখ কর্মজীবী নারীও প্রতিদিন গণপরিবহণে যাতায়াত করেন। কিন্তু তাদের  বাসের জন্য অপেক্ষা করার মতো মানসম্মত কোনো যাত্রী ছাউনি নেই। বাসের জন্য যাত্রীরা অপেক্ষা করবেন যাত্রী ছাউনিতে, এটাই ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু বাস্তব চিত্র হলো ঠিক তার উল্টো। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে যাত্রী ছাউনিগুলো পরিণত হয়েছে ময়লার ভাগাড় কিংবা মলমূত্র ত্যাগের স্থানে। কোথাও কোথাও এইসব স্থানে পাগল, ভবঘুরে, মাদকসেবীদের আড্ডার দেখা মেলে। এছাড়া অধিকাংশ যাত্রী ছাউনির একটি স্থান দখল করে দোকানপাট দেয়া হয়েছে। যাত্রী ছাউনিগুলোতে এমন একটা আতঙ্কের পরিবেশ বিরাজ করে যে, সেখানে অধিকাংশ যাত্রীরাই ভয়ে যেতে চায় না। ফলে যাত্রী ছাউনির এই সেবা থেকে নাগরিকরা বঞ্চিত হচ্ছেন।

রাজধানীতে গণপরিবহনের জন্য নির্ধারিত স্থান ‘বাস-বে' আছে। যেখানে বাস থামবে, যাত্রীরা ওঠানামা করবে। কোটি কোটি টাকা খরচ করে দুই সিটি করপোরেশন এই  বাস-বে নির্মাণ করলেও সেটি কোনো কাজে আসছে না। বাসগুলো যত্রতত্র থামছে, কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছে না। সড়কের মধ্যেই ধাক্কাধাক্কি করে যাত্রীদের বাসে উঠতে হচ্ছে। শুধু বাস-বে নয়, যাত্রী ছাউনিগুলোও তদারকির অভাবে দখল হয়ে যাচ্ছে। টোকাই ও নেশাগ্রস্তরা লোহা দিয়ে বানানো সিটগুলোও খুলে নিয়ে যাচ্ছে। এমন হযবরল অবস্থার কারণে যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন।

রাজধানীর ব্যস্ততম সড়কের কোথাও নির্ধারিত বাস-বেতে কোনো বাস থামে না। বাসগুলো বাস-বের আগে কিংবা পরে প্রধান সড়কের ওপরেই গাড়ি থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা করছে। ফলে যাত্রীরাও নির্ধারিত যাত্রী ছাউনির বদলে মূল সড়ক থেকেই বাসে ওঠানামা করতে বাধ্য হচ্ছে। অধিকাংশ সময়েই যাত্রীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলন্ত বাসেই ওঠানামা করছে। যার ফলে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে।

রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে গত কয়েক বছরে প্রায় একশটি নতুন যাত্রী ছাউনি নির্মিত হয়েছে। আর পুরোনো ছাউনিগুলোও সংস্কার করা হয়েছে। বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটি প্রণীত বিভিন্ন পথে চলা বাসের রুট অনুযায়ী এসব যাত্রী ছাউনি তৈরি করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, বাসের রুট বাড়লে ছাউনির সংখ্যাও বাড়বে। এছাড়া সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ বিমানবন্দর সড়কের দুই পাশে দৃষ্টিনন্দন ১২টি যাত্রী ছাউনি নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি যাত্রী ছাউনিতে বাস-বে আছে, কিন্তু সেখানেও কোনো বাস দাঁড়ায় না। কোনো ট্রাফিক পুলিশও বাসগুলোকে যাত্রী ছাউনিতে দাঁড়াতে বাধ্য করছে না।

গণপরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যাত্রী ছাউনি নির্মাণ করেই সিটি করপোরেশন দায়িত্ব শেষ করছে। এগুলোর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে কোনো তদারকি কার্যক্রম নেই। এটি ব্যবহারে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। যাত্রী ছাউনি যদি সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামত করা হয় আর যাত্রীদের ব্যবহার নিশ্চিত করা যায় তবেই মানুষ সুফল পাবে।

আই.কে.জে/ 

যাত্রী ছাউনি

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন