ছবি: সংগৃহীত
স্টেজে গান গাওয়ার সময় মিউজিশিয়ানকে ধাক্কা দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন সংগীতশিল্পী মুজিব পরদেশী। অনেকে মন্তব্য করছেন, মুজিব পরদেশীর মতো সিনিয়র শিল্পীর কাছ থেকে এমন ব্যবহার কাম্য নয়। তবে সংগীতশিল্পী রবি চৌধুরী মনে করেন, বিষয়টি অন্যভাবে না নিয়ে ক্ষমাসুলভ দৃষ্টিতে দেখা উচিত।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, মুজিব পরদেশী যখন তার জনপ্রিয় ‘আমার সোনাবন্ধু রে’ গানটি গাইতে শুরু করেন, তখন সুর মেলাতে পারছিলেন না কি-বোর্ডিস্ট। সে সময় উত্তেজিত হয়ে কি-বোর্ডিস্টের দিকে এগিয়ে গিয়ে তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে নিজেই কি-বোর্ড বাজাতে শুরু করেন মুজিব পরদেশী। ওই ভিডিও শেয়ার করে অনেক মিউজিশিয়ানের নিন্দা জানিয়েছেন।
মুজিব পরদেশীর এমন ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর শিল্পীদের পক্ষ নিয়ে পোস্ট করেন আরেক সংগীতশিল্পী রবি চৌধুরী। ফেসবুকে তিনি লেখেন, ‘আমাদের দেশে মুজিব পরদেশী একজনই। তিনি একধারে সংগীতশিল্পী, সুরকার, সংগীত পরিচালক। সেদিন গানের সঙ্গে কি-বোর্ড ঠিকমতো বাজাতে পারেননি সহকর্মী। হয়তো তার (কি-বোর্ডিস্টের) গানটা তোলা ছিল না। আমারও খারাপ লেগেছে। “আমার সোনা বন্ধুরে” গানটা শোনেননি এমন কোনো লোক আছে কি না আমি জানি না, বিশেষ করে যারা গান পছন্দ করেন। সিনিয়রদের সম্মান দেওয়া শিখুন। মরে গেলে অনেকেই মুজিব পরদেশীকে স্মরণ করবেন। হারালে বুঝবেন উনি কী ছিলেন। যারা এই ভিডিও দিয়ে ভিউ-বাণিজ্যের চেষ্টা করছেন, তাদের বলব, এসব বাণিজ্য বাদ দেন। আমাদের শিল্পীদের নিয়ে বিজনেস করবেন না।’
ফেসবুক লাইভে এসে রবি চৌধুরী জানান, সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তিনি। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে রবি চৌধুরী বলেন, ‘সেদিন অনুষ্ঠানে যখন মুজিব পরদেশী ভাই গান গাইতে উঠলেন প্রথমে তবলা সুরে ছিল না। উনি নিজে গিয়ে সেটা ঠিক করে দেন। সে সময় তাকেও একটু বকা দেন। এরপর যখন গানটা শুরু করলেন, তখন কি-বোর্ডিস্ট সুরটা ঠিকমতো তুলতে পারছিলেন না। পরদেশী ভাই তাকে কয়েকবার বলার পরেও যখন হচ্ছিল না, একটু উত্তেজিত হয়ে সেই কি-বোর্ডিস্টকে ধাক্কা দিয়ে নিজে বাজাতে শুরু করেন। যিনি গিটারে ছিলেন, তিনিও অন্য কর্ড বাজাচ্ছিলেন। পরদেশী ভাই তাকেও বারবার চিৎকার করে বলছিলেন, এটা এফ মেজর হবে। সব মিলিয়ে হয়তো তিনি মেজাজ হারিয়েছেন।’
রবি চৌধুরী আরও বলেন, ‘মানুষের বয়স হয়ে গেলে শিশুর মতো হয়ে যান। ধাক্কা না দিয়ে সুন্দরভাবে মিউজিশিয়ানকে বলে তিনি নিজে বাজিয়ে দেখাতে পারতেন। স্টেজে মাঝে মাঝে আমি এমনটাই করি, সুন্দর করে বুঝিয়ে বলি। মিউজিশিয়ান ভাইদের বলব, বিষয়টি অন্যভাবে নেবেন না। যারা কষ্ট পেয়েছেন তাদের বলছি, মনে কষ্ট রাখবেন না। পরদেশী ভাইকেও বলব, এমন আচরণের জন্য পারলে ক্ষমা চেয়ে নেবেন।’
কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধের অনুরোধ জানিয়ে রবি চৌধুরী বলেন, ‘এটা নিয়ে অনেক কাদা ছোড়াছুড়ি হচ্ছে। এটা করবেন না। কারণ আমরা সবাই এক। এখানে সিনিয়র-জুনিয়রের কোনো বিষয় নয়। মূল বিষয় হচ্ছে আমরা শিল্পীরা, শ্রোতারা সবাই মিলে একটা পরিবারের মতো।'
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন