ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রাম টেস্টে ইনিংস ও ১০৬ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় পেল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল । এ জয়ে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে (১-১) সমতায় ফিরলেন টাইগাররা।
দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথমটি হয় সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। সিলেট স্টেডিয়ামে ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের মতো তুলনামূলক দুর্বল দলের বিপক্ষে ৩ উইকেটে হেরে সমালোচনার মুখে পড়েন টাইগাররা।
চট্টগ্রামের সাগরিকায় সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে মেহেদি হাসান মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্য এবং সাদমান ইসলাম অনিকের সেঞ্চুরি আর তাইজুল ইসলামের অবিশ্বাস্য বোলিংয়ে ইনিংস ও ১০৬ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় পায় বাংলাদেশ। এ জয়ে সিরিজে ১-১ সমতায় ফিরলেন স্বাগতিকরা।
চট্টগ্রামে শেষ টেস্টে মেহেদি হাসান মিরাজ ব্যাট হাতে অবিশ্বাস্য লড়াই করেন। দলের স্বীকৃত ব্যাটসম্যান আউট হয়ে যাওয়ার পর বোলারদের নিয়ে লড়াই করে দলকে বড় লিড উপহার দেওয়ার পাশাপাশি ৫ বছর টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন। তিনি ১১টি চার আর এক ছক্কায় ১০৪ রানের ইনিংস খেলেন।
শুধু তাই নয়, ব্যাট হাতে লড়াই শেষ করে বল হাতেও দ্যুুতি ছড়ান মিরাজ। তার স্পিন বোলিংয়ে বিভ্রান্ত হয়ে একের পর এক সাজঘরে ফেরেন জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা। দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি ২১ ওভার বল করে মাত্র ৩২ রান খরচ করে ৫ উইকেট শিকার করেন। তার অলরাউন্ড নৈপুণ্যে দুইদিন হাতে রেখেই ইনিংস ব্যবধানে জয় পায় বাংলাদেশ।
দলের জয়ে অবদান রয়েছে ওপেনার সাদমান ইসলাম অনিকেরও। তিনি পাঁচ বছর পর টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি হাঁকান। তার ১২০ রানের ইনিংসটি ১৬টি চার আর ১টি ছক্কায় সাজানো।
প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়েকে ২২৭ রানে গুঁড়িয়ে দিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম। তিনি ৬ উইকেট শিকার করেন। দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যাটে বলে অবদান রাখেন তাইজুল।
মিরাজের সঙ্গে অষ্টম উইকেটে গড়েনে ৬৩ রানের জুটি। ব্যাট হাতে ২০ রান করার পর বল হাতে দ্বিতীয় ইনিংসে শিকার করেন ৩ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৭ রানের ব্যবধানে জিম্বাবুয়ের প্রথম সারির ২ ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে ফিরিয়ে দলকে জয়ের স্বপ্ন দেখান তাইজুল। চট্টগ্রাম টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে জয়ে ৯ উইকেট শিকারের পাশাপাশি ২০ রান করেন তাইজুল।
চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে জিম্বাবুয়ে।
প্রথম ইনিংসে সেন উইলিয়ামস (৬৭) ও নিক ওয়েলচের (৫৪) জোড়া ফিফটিতে ভর করে ২২৭ রানে অলআউট হয় জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশ দলের হয়ে ২৭.১ ওভারে ৬০ রান খরচ করে ৬ উইকেট শিকার করেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম।
জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে ওপেনার সাদমান ইসলাম অনিক ও মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান মেহেদি হাসান মিরাজের জোড়া সেঞ্চুরিতে ভর করে ৪৪৪ রান করে বাংলাদেশ। দলের হয়ে ১৬টি চার আর এক ছক্কায় সর্বোচ্চ ১২০ রান করেন সাদমান ইসলাম অনিক।
নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পতনের পর লেজের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে লড়াই করে দলকে বড় লিড উপহার দেওয়ার পাশাপাশি টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করেন মিরাজ। তার ১০৪ রানের ইনিংসটি ১১টি চার আর একটি ছক্কায় সাজানো।
৪১ রান করেন পেস বোলার তানজিম হাসান সাকিব। ৪০ রান করেন সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। ৩৯ রান করেন ২০২২ সালের জুনের পর টেস্টে ফেরা এনামুল হক বিজয়। ৩৩ রান করেন মুমিনুল হক সৌরভ।
২১৭ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে তাইজুল ইসলাম ও মেহেদি হাসান মিরাজের ঘুর্ণি বলে বিভ্রান্ত হয়ে ৪৬.২ ওভারে মাত্র ১১১ রানে অলআউট হয় জিম্বাবুয়ে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেন ওপেনার বেন কারান। বাংলাদেশ দলের হয়ে ৫ উইকেট নেন মিরাজ। ৩ উইকেট নেন তাইজুল।
এইচ.এস/
খবরটি শেয়ার করুন