বৃহস্পতিবার, ৩১শে জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৬ই শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** এই সরকারের এক্সিট পলিসি চিন্তা করার সময় এসেছে: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য *** জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় সব পদক্ষেপ নেবে নয়াদিল্লি *** ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা চান দেশটির ৩১ বিশিষ্ট নাগরিক *** এক সাপুড়ের প্রাণ নেওয়া সাপকে চিবিয়ে খেলেন আরেক সাপুড়ে *** তিন বাহিনীর প্রধান নিয়োগ রাষ্ট্রপতির হাতে রাখার প্রস্তাব *** ডাকসু নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্যানেল দিচ্ছেন উমামা, যোগদানের আহ্বান ফেসবুকে *** ১৫ই আগস্টের মধ্যে চাকসুর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা *** ‘প্রিয় বন্ধু’ ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের *** আইন ও বিচার বিভাগে পদায়ন বিধিমালা জারি *** এনসিপির অনুরোধে সমাবেশের স্থান পরিবর্তন ছাত্রদলের

সবজির দামে ভোক্তার স্বস্তির পাশাপাশি বাঁচাতে হবে কৃষককেও

সম্পাদকীয়

🕒 প্রকাশ: ০১:৫১ অপরাহ্ন, ৮ই জানুয়ারী ২০২৫

#

ছবি : সংগৃহীত

শীতকালীন সবজির সরবরাহ বাড়ার কারণে কমেছে দাম। কাঁচাবাজারগুলোর সর্বত্রই সবজিতে ভরপুর। ক্রেতা-ভোক্তাদের কিছুটা স্বস্তি মিললেও কৃষকের মাথায় হাত। সার, তেল, বিদ্যুৎ ও কীটনাশকের মূল্য বৃদ্ধির পর ফসল উৎপাদনে খরচ বেড়েছে কয়েক গুণ।চাষীদের উৎপাদন খরচও উঠছে না।

কাঁচা সবজির বাজার বড়ই অদ্ভুত। পণ্যের দাম বেড়ে গেলে ভোক্তারা সংকটে পড়েন। আর দাম কমে গেলে কৃষকরা সংকটে পড়েন। এই দুয়ের সমন্বয়ই পারে উভয় কূলকে রক্ষা করতে। বর্তমানে সারা দেশের বিভিন্ন এলাকার ফুলকপির চাষিরা বিপাকে পড়েছেন। ন্যায্য দাম তো দূরের কথা, তারা প্রতিটি কপি ২ টাকায়ও বিক্রি করতে পারছেন না। তাই কোনো কোনো অঞ্চলের কপি এখন গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আবার কোথাও দেখা যাচ্ছে, কৃষকরা রাস্তায় ফেলে প্রতিবাদ করছে। আবার কোথাও জমিতে কপির পচন ধরছে, অথচ ক্রেতা নেই। লোকসানের বোঝা দিন দিন ভারি হচ্ছে।কৃষকরা আর্তনাদ করছেন। বীজের টাকাও উঠছে না।

এমনও দেখা গেছে, বাজারে কপির ন্যায্যমূল্য না পেয়ে সেগুলো ড্রেনে ফেলে দিচ্ছেন চাষিরা।অথচ  ফুলকপির একটি চারা কিনতেও  দেড় থেকে দুই টাকা খরচ হয়েছে। এরপর চাষ, সার, কীটনাশক এবং শ্রমের মূল্য যোগ করলে উৎপাদন খরচের অঙ্কটা অনেক বড় হয়। অথচ কয়েকদিন আগেও ফুলকপির পাইকারি দাম ছিল ৫০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা। তখন ঢাকার বাজারে ফুলকপি ৭০-৮০ টাকা, বেগুন-৮০, মুলা ৬০ টাকায় বিক্রি হয়। এভাবে বাঁধাকপি, শশা, সিম, বরবটি, পেঁপে, কাঁচামরিচসহ সব ধরনের সবজির দাম কমেছে। এখন যখন দুই টাকায়ও কৃষক একটি ফুলকপি বিক্রি করতে পারছে না, তখনও কিন্তু ঢাকায় ২৫-৩০ টাকায় ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে।

আরো পড়ুন : ৪৩তম বিসিএস : বঞ্চিতদের অপরাধ কী?

কৃষক থেকে ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছাতে কয়েক ধাপে হাতবদল হয়। কৃষক থেকে যায় ব্যাপারীর কাছে, সেখান থেকে আড়তদারের কাছে, তারপর পাইকার থেকে খুচরা বিক্রেতার কাছে। সর্বশেষ ভোক্তার হাতে। এভাবেই প্রতিটি ধাপে দাম বেড়ে কৃষক থেকে ভোক্তা পর্যায়ে কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়।

বর্তমানে সবজির মৌসুম চলছে। এবার উৎপাদনও হয়েছে ভালো। তাই বাজারে সবজির দামে স্বস্তি ফিরে এসেছে। কিন্তু ভোক্তার স্বস্তিই শেষ কথা নয়। উৎপাদক তথা কৃষক যদি তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য না পায়, তাহলে তো দেশের একটা বড় শ্রেণি তার অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। এটাও সত্য যে, কোনো মৌসুমে কৃষক যদি তার পণ্যের ন্যায্যমূল্য না পান, তাহলে পরবর্তী মৌসুমে তারা ওই পণ্যটির চাষ করতে নিরুৎসাহিত হন। জমিতে অন্য কিছু চাষাবাদ করবেন।তখন পরবর্তী বছর আবার সংকট হবে। চাহিদার সাথে জোগানের ঘাটতি দেখা দিবে। বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে, ভোক্তারা সংকটে পড়বে। তাই ফুলকপিসহ শীতকালীন সব সবজির ক্ষেত্রে চাষি যেন তার পণ্যের ন্যায্যমূল্য পান, তা নিশ্চিত করতে হবে। কীভাবে বাজারমূল্য ঠিক রেখে কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা যায়, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সেই উপায় বের করতে হবে।

কৃষক শ্রেণী এ দেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি। তারা যাতে শোষণের শিকার না হন, সেদিকে সরকারকে দৃষ্টি দিতে হবে। পণ্যের সিন্ডিকেটসহ বাজারকে নিয়মের মধ্যে রাখতে হবে। কৃষক ও ভোক্তাদের মধ্যকার দূরত্ব দূর করতে হবে। মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে হবে। তাহলেই কৃষক ও ভোক্তা উভয় পক্ষই লাভবান হবে।

এস/ আই.কে.জে/ 


সবজি

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন