প্রতীকী ছবি
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের সাম্প্রতিক এক গবেষণা জানাচ্ছে, উদ্ভিজ্জ খাবার খেলে স্বাস্থ্য ভালো থাকে। এমনকি দীর্ঘ আয়ু পাওয়ার সম্ভাবনাও বাড়ে। কম বয়স থেকে তো বটেই, মধ্যবয়সে এসে এই অভ্যাস গড়ে তুললেও ফলাফল হয় দারুণ ইতিবাচক।
গত মার্চ মাসে ‘নেচার মেডিসিন’ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, উদ্ভিজ্জ খাবার খেলে বয়সজনিত জটিলতার হার কমে। গবেষণাটির জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল ৭০ বছর বা তার বেশি বয়সী সুস্থ ব্যক্তিদের। অর্থাৎ যাদের দীর্ঘমেয়াদি কোনো শারীরিক বা মানসিক সমস্যা নেই।
৩৯–৬৯ বছর বয়সী ১ লাখ ৫ হাজার ব্যক্তিকে ৩০ বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করেছিলেন গবেষকেরা। মধ্যবয়সে খাদ্যাভ্যাস কীভাবে তাদের পরবর্তী বছরগুলোর সুস্থতাকে প্রভাবিত করেছে, সেটিই দেখা হয়েছে সেই গবেষণায়। খবর সিএনবিসির।
সুস্থ থাকার সম্ভাবনা কতটা
গবেষণায় অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের খাদ্যাভ্যাসের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট স্কোর দেওয়া হয়েছে। এই স্কোর হার্ভার্ডের উদ্ভাবিত অল্টারনেটিভ হেলদি ইটিং ইনডেক্সের সঙ্গে সম্পর্কিত। ‘হার্ভার্ড হেলথ পাবলিশিং’ অনুসারে, যাদের এই স্কোর সবচেয়ে বেশি ছিল, ৭০ বছর বয়সে পৌঁছাতে পৌঁছাতে তাদের সুস্থ থাকার সম্ভাবনা বেড়েছে ৮৬ শতাংশ; ৭৫ বছর বয়সে সুস্থ থাকার সম্ভাবনা বেড়েছে ২ দশমিক ২ গুণ।
বুঝতেই পারছেন, এই অল্টারনেটিভ হেলদি ইটিং ইনডেক্সই দীর্ঘমেয়াদি সুস্থতায় ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে।
কী আছে হার্ভার্ডের এই খাদ্যভ্যাসে
১. ফলমূল
২. সবজি
৩. গোটা শস্য, অর্থাৎ যা রিফাইনড (পরিশোধিত) নয়
৪. লেগিউম, অর্থাৎ শিম, মটর, ছোলা, চানা, মসুর ডাল প্রভৃতি
৫. নানা ধরনের বাদাম
৬. অসম্পৃক্ত স্নেহ পদার্থ, অর্থাৎ যা কক্ষতাপমাত্রায় তরল থাকে। যেমন স্বাস্থ্যকর উদ্ভিজ্জ তেল, মাছের তেল
৭. লো ফ্যাট দুগ্ধজাত খাবার (পরিমিত পরিমাণে)
যে পাঁচ ধরনের খাবার কম খেতে হবে কিংবা বাদ দিতে হবে
১. চিনিমিশ্রিত পানীয়
২. লাল মাংস
৩. ট্রান্স ফ্যাট, যেমন ফাস্টফুড বা বেক করা খাবারে ব্যবহৃত আংশিক হাইড্রোজিনেটেড উদ্ভিজ্জ তেল, মার্জারিন
৪. বাড়তি লবণ, যেমন পাতে লবণ নেওয়া
৫. প্রক্রিয়াজাত মাংস
উদ্ভিজ্জ খাবারই সুস্থতার অন্যতম চাবিকাঠি। এ ধরনের খাবার খেলে দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন রোগ থেকে বাঁচবেন আপনি। সঙ্গে বুঝেশুনে যোগ করতে পারেন পরিমিত পরিমাণ প্রাণীজ খাদ্য। ভবিষ্যতের স্বাস্থ্যকর খাদ্যভ্যাস হতে চলেছে এটাই। এমনটাই জানিয়েছেন হার্ভার্ডের ওই গবেষক দল।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন