রবিবার, ২৭শে জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১২ই শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের যৌক্তিকতা পায়নি পর্যবেক্ষণ দল *** জুলাই আন্দোলনের মূল নায়ক তারেক রহমান: আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী *** মৌলিক সংস্কার না হলে গণতান্ত্রিক উত্তরণ হবে না: বদিউল আলম মজুমদার *** মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের দেখতে বার্ন ইনস্টিটিউটে প্রধান উপদেষ্টা *** জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মূল লক্ষ্য ছিল ‘অভ্যন্তরীণ পরাধীনতামুক্ত’ রাষ্ট্র গঠন: ফরহাদ মজহার *** গন্ডগোল লাগিয়ে নির্বাচনের আয়োজনকে ভন্ডুল করার চেষ্টা চলছে: প্রধান উপদেষ্টা *** জুলাই শহীদ পরিবারের জন্য ৮০৪টি ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্প একনেকে উঠছে রোববার *** চার-পাঁচ দিনের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা: মোস্তফা জামাল *** মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার করবে রাজনৈতিক সরকার: অর্থ উপদেষ্টা *** প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আরও ১৪টি দলের বৈঠক আজ

শিশুদের আবেগ নিয়ন্ত্রণে বিরূপ প্রভাব ফেলছে মোবাইল ফোন!

লাইফস্টাইল ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১১:৪৭ পূর্বাহ্ন, ৫ই জুলাই ২০২৪

#

ছবি : সংগৃহীত

বর্তমানে শিশুদের খেলার প্রধান মাধ্যম মোবাইল। বিভিন্ন ধরনের ডিভাইসে ডিজিটাল গেমে তাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় ব্যয়ে কোনো ক্লান্তি নেই। অভিভাবকদের চাপে কিংবা চোখ রাঙানিতে কেবল গেমস থেকে মুখ তুলতে বাধ্য হয় তারা। এমন পরিস্থিতিতে শিশুদের রাগ বা জেদ নিয়ন্ত্রণে অনেকেই মোবাইল হাতে তুলে দেন। তবে এটি দীর্ঘমেয়াদে শিশুর আবেগ নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

সম্প্রতি এক গবেষণা প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ফ্রন্টিয়ার্স ইন চাইল্ড অ্যান্ড অ্যাডলসেন্ট সাইকিয়াট্রিতে এ সম্পর্কিত একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে বলে জানিয়েছে নিউরোসায়েন্স নিউজ।

প্রতিবেদনে গবেষকরা জানান, শিশুদের শান্ত করতে তার হাতে স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট তুলে দিলে তা তাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতায় বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। কিন্তু মোবাইলের পরিবর্তে অভিভাবকরা যদি আবেগ নিয়ন্ত্রণে সন্তানের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন বা আলোচনা করেন সেটি মানসিক বিকাশে সহায়ক হয়।

মোবাইল ফোনের বিকিরণের কারণে শিশুর চোখে ভয়াবহ সমস্যা দেখা দিচ্ছে। আগে শিশুদের গল্প শুনিয়ে খাবার খাওয়ানো, ঘুম পাড়ানো হতো। কিন্তু আজকাল সেই জায়গা দখল করে নিয়েছে মোবাইল ফোন কিংবা টিভি। ফলে মোবাইল ও ইলেকট্রনিক ডিভাইসে অতিমাত্রায় আসক্ত হয়ে পড়ছে শিশুরা।

তাদের মতে, জীবনের প্রথম কয়েক বছর শিশুরা আত্মনিয়ন্ত্রণের বিষয়ে অনেক কিছু শিখে থাকে। এ সময় বিভিন্ন পরিস্থিতিতে সংবেদনশীল, মানসিক ও আচরণগত প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে তারা জানতে পারে ও শেখার চেষ্টা করে, যা মূলত মা-বাবার সঙ্গে সুন্দর সম্পর্কের মাধ্যমে তৈরি হয়ে থাকে।

হাঙ্গেরি ও কানাডার গবেষক দলটি জানান, বিভিন্ন ডিজিটাল ডিভাইস শিশুদের এমন আচরণ ঠেকানোর জন্য যে একেবারেই কার্যকর নয়, সেটি সবাইকে বোঝাতে পারলে তা মানসিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতা উভয় ক্ষেত্রের জন্য ইতিবাচক হবে।

ইউনিসেফের তথ্য অনুসারে, বিশ্বে প্রতি তিনজন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর একজন শিশু। প্রতিদিন ১ লাখ ৭৫ হাজার অর্থাত্ প্রতি আধা সেকেন্ডে একজন শিশু নতুন করে ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ২৫ শতাংশের বয়সই ১০ বছরের কম। ফেসবুকসহ সবধরনের সোশ্যাল মিডিয়ার ৯০ শতাংশ ব্যবহারকারীর বয়সই ১৮ থেকে ২৯-এর মধ্যে। বাংলাদেশেও ইন্টারনেট প্রসারের মধ্য দিয়ে প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে বিপুলসংখ্যক ব্যবহারকারী, যাতে রয়েছে শিশুরাও। বিটিআরসির ২০১৬ সালের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী ছেলেমেয়েদের প্রায় ৩ দশমিক ৫ শতাংশ নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহার করে, যার বড় একটা অংশই যুক্ত থাকে নানা ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া সাইটে।

হাঙ্গেরির ইওটভোস লোরান্ড ইউনিভার্সিটির গবেষক ড. ভেরোনিকা কনক বলেন, গবেষণার মাধ্যমে আমরা অভিভাবকদের এটি দেখাতে চেয়েছি, শিশুর আবেগ নিয়ন্ত্রণে ডিভাইসের ব্যবহার নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এটি ভবিষ্যতে রাগ নিয়ন্ত্রণ সক্ষমতাকে আরো দুর্বল করে তুলবে।

আরো পড়ুন : বৃষ্টিতে ছাতা নাকি রেইনকোট, কোনটি ব্যবহার করবেন?

কানাডার ইউনিভার্সিটি ডি শেরব্রুকের অধ্যাপক ক্যারোলিন ফিটজপ্যাট্রিক বলেন, আমরা প্রায়ই দেখি, সন্তানের মন খারাপ হলে মা-বাবারা তাদের মনোযোগ অন্যদিকে সরাতে তাদের হাতে ট্যাবলেট বা স্মার্টফোন তুলে দেন। শিশুরা ডিজিটাল কনটেন্টে সহজেই আকৃষ্ট হয়, যা তাদের বদমেজাজ বন্ধ করার সহজ একটি উপায়। আর স্বল্পমেয়াদে এটি ভালোই কাজে আসে।

তিনি জানান, বিভিন্ন ডিজিটাল ডিভাইস যে বদমেজাজ নিরাময়ের জন্য অনুপযুক্ত হাতিয়ার, সে বিষয়ে মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি পেলে শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতা দুই-ই উপকৃত হবে।

গবেষণাটির জন্য ২০২০ সালে একটি মূল্যায়ন ও এর এক বছর পর একটি ফলোআপ পরিচালনা করেছিলেন গবেষকরা। এজন্য দুই থেকে পাঁচ বছর বয়সী তিন শতাধিকের বেশি শিশুর বাবা-মা একটি প্রশ্নমালার উত্তর দিয়েছেন, যেখানে শিশু ও মা-বাবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যবহারের বিষয়টি মূল্যায়ন করা হয়েছে।

গবেষণায় দেখা যায়, মা-বাবারা শিশুর আবেগ নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে তাদের ডিজিটাল ডিভাইসের ব্যবহারের প্রবণতা বাড়িয়ে দিলে এর এক বছর পর গিয়ে দেখা যায়, তাদের রাগ ও হতাশা নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা অনেক কমে গেছে। এছাড়া যাদের বেশি সময় ডিভাইস দেওয়া হয়েছে তারা পরবর্তী সময়েও সেভাবে রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি।
এস/  আই.কে.জে

মোবাইল ফোন

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন