আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি। ফাইল ছবি
ভারতের আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি ও সংস্থাটির শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মার্কিন আদালতে মামলা হয়েছে। এতে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সঙ্গে আদানি গ্রুপের যেকোনও আলোচনায় এটি প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন ঢাকার জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু এ খবর জানিয়েছে।
বাংলাদেশের উচ্চ আদালত আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে করা এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ চুক্তির বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পরদিনই আমেরিকায় এ মামলা করা হয়। তাদের অভিযোগে বলা হয়েছে, সৌরবিদ্যুৎ সরবরাহের একটি লোভনীয় কাজ পেতে ভারতীয় কর্মকর্তাদের ঘুষ প্রদান করেছেন গৌতম আদানি। এ কারণে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা সরকারের সময়েই আদানি প্রকল্পের চড়ামূল্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে আদানি পাওয়ারের কাছে দাম পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানায় বাংলাদেশের পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (পিডিবি)। আদানি প্রতি মেট্রিক টন কয়লার দাম ৪০০ মার্কিন ডলার দাবি করছিল। বিপিডিবি জানায়, তারা অন্য কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য টনপ্রতি ২৫০ ডলারের কমে কয়লা কিনেছে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন বলেছেন, অন্য চুক্তির মতো টেন্ডার ছাড়াই সম্পন্ন হওয়ায় প্রথম থেকেই আদানি ও শেখ হাসিনা সরকারের মধ্যে করা জ্বালানি চুক্তি নিয়ে বিতর্ক ছিল। তবু অন্তর্বর্তী সরকার ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়ে সংলাপ চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। অবশ্য আমেরিকায় আদানির বিরুদ্ধে মামলা করার পর সংলাপের জায়গা সংকুচিত হতে পারে। উচ্চমূল্যের বিষয়েও তাদের ওপর এখন চাপ প্রয়োগ করতে পারবে বাংলাদেশ।
এদিকে, এই চুক্তি নিয়ে চুপ রয়েছে ভারত সরকার। হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মামলার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুই দেশের সরকারের মধ্যে হওয়া জিটুজি (সরকার টু সরকার) চুক্তির অধীনে বিদ্যুৎ সরবরাহে কোনও হস্তক্ষেপ করেনি দিল্লি। একেবারে বাধ্য না হলে তাদের এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে না বলেই তারা ধারণা করছেন।
আই.কে.জে/