‘ভগবান পালিয়ে গেছে’ নাটকের দৃশ্য- ছবি: সংগৃহীত
সময়ের স্রোতধারা বেয়ে প্রতিষ্ঠার এক যুগ পূর্ণ করেছে বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় নাট্যদল বাতিঘর। ২০১১ সালের ১১ জুন একঝাঁক তরুণ নাট্যকর্মী নতুন কিছু করার দীপ্ত প্রত্যয় নিয়ে শুরু করেছিল তাদের পথচলা। দীর্ঘ ১২ বছরের পথ চলায় বাতিঘরের পালকে যুক্ত হয়েছে নানা রকম সাফল্য। মঞ্চ নাটক প্রিয় দর্শকদের উপহার দিয়েছে বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় পরিবেশনা।
বাতিঘর বিভিন্ন সময়ে মঞ্চে এনেছে বিবিধ বিষয়নির্ভর ১৫ টি প্রযোজনা। মঞ্চ পাড়ায় এগুলো হয়েছে আলোচিত সমালোচিত। বাতিঘরের প্রায় প্রতিটি প্রদর্শনীতে দেখা গেছে দর্শকদের উপচে পরা ভীড়। সাফল্যের সে উৎযাপনে বাতিঘর মঞ্চে এনেছে তাদের আরেকটি নতুন নাটক 'ভগবান পালিয়ে গেছে' । এ নাটকটির রচনা ও নির্দেশনা দিচ্ছেন মুক্তনীল।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে নাটকটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হবে। পরদিন শুক্রবার সন্ধ্যায় একই মিলনায়তনে এই নাটকের দ্বিতীয় মঞ্চায়ন হবে।
এই প্রসঙ্গে নাট্যকার ও নির্দেশক মুক্তনীল বলেন, “ভগবান পালিয়ে গেছে আসলে আক্ষরিক অর্থে ভগবানের পলায়ন নয়। এটা আমার আমি’র পলায়ন। দিনে দিনে আমরা সবাই যাকে হারিয়ে ফেলছি। আমাদের সত্ত্বা, বিবেচনা, মানবিকতা সর্বোপরি আমাদের বিবেক।”
বাতিঘরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্বাস পুঁজি করে মানুষ এগিয়েছে সাফল্যের চূড়ায়। তেমনি তলিয়ে গেছে অতল অন্ধকার গব্বরে। বিজ্ঞান যখন প্রত্যন্ত অঞ্চলে আলোর স্ফুরণ পৌঁছে দিয়েছে। তখনো বিশ্বাসীরা তাদের স্বীয়শক্তিতে অন্ধত্বের চরমে মুখ থুবড়ে পড়ছে। ধর্মবিশ্বাস এরমধ্যে দুর্দান্ত প্রতাপে এগিয়ে। যেহেতু মানুষের আশ্রয় প্রয়োজন, ধর্মের কাছে এসে তারা সেই আশ্রয় গ্রহণ করে। খেলার আরম্ভটা হয় সেখান থেকে।
শাস্ত্র অনুযায়ী ঈশ্বরের কোনো রূপ নেই, কিন্তু তার ইচ্ছে আছে। অর্থাৎ ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টিকে এভাবেও ব্যাখ্যা করা যায়, আপনার ভেতরে একটা সত্ত্বা আছে, যাকে আপনি দেখতে পান না। কিন্তু সে প্রতিনিয়ত আপনাকে দেখছে। এই সবকিছু করতে গিয়ে আপনি নিশ্চয়ই অনুভব করেন যে আপনার গভীরে একজন ‘আমি’ বসবাস করে। আপনার বাহ্যিক আচরণের হয়ত অনেক কিছুর সাথেই রয়েছে সেই আমি'র দ্বন্দ্ব। ভেতরের সেই চরম অনুভূতিশীল মানবিক যে সত্ত্বা প্রতিমুহূর্তে আপনাকে দেখে যাচ্ছে, তাকেই আমি (লেখক) বলছি ভগবান। যে চোখ দিয়ে দেখছে না, দেখছে বিবেক দিয়ে। বিবেকের কণ্ঠস্বরই হচ্ছে ভগবানের কণ্ঠস্বর।
আরো পড়ুন: ঈদে ভিন্ন বুবলীকে দেখার অপেক্ষায়
প্রযোজনাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন সাদ্দাম রহমান, ফয়সাল মাহমুদ, সঞ্জয় গোস্বামী, নুছরাত ইমাম বুলটি, ইয়াসির আরাফাত, সুইটি হোড়, সুমন স্মরণ, মৃধা অয়োমী প্রমুখ। পলাশ হেনড্রি সেনের আলোক পরিকল্পনায় মঞ্চ পরিকল্পনা করেছেন চারু পিন্টু। ফেরদৌসি আকতারের পোশাক পরিকল্পনায় কোরিওগ্রাফি করেছেন শিশির সরকার।
এম/