ছবি: সংগৃহীত
প্রশান্ত মহাসাগর পাড়ি দিয়ে ইতিহাস গড়েছেন স্কটল্যান্ডের তিন ভাই এউন, জেমি এবং ল্যাকলান ম্যাকলিন। বিশ্বের বৃহত্তম এই মহাসাগরটি তার মাত্র ১৩৯ দিনে বইঠা চালিয়ে দ্রুততম ‘নন-স্টপ আনসাপোর্টেড রো’ সম্পন্ন করেছেন।
এই যাত্রার মাধ্যমে তারা দক্ষিণ আমেরিকা থেকে অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত বইঠাচালিত নৌকার প্রথম সফল দল হিসেবেও রেকর্ড গড়েছেন। খবর সিএনএনের।
সিএনএন জানিয়েছে, পেরুর লিমা থেকে যাত্রা শুরু করে তারা প্রায় ৯ হাজার মাইল অতিক্রম করেন। খাবারের স্বল্পতা, সমুদ্র অসুস্থতা আর প্রবল ঝড়-ঝাপটা মোকাবিলা করে তারা পৌঁছান অস্ট্রেলিয়ার কেয়ার্নসে।
যাত্রাপথে ভয়ংকর এক মুহূর্তে বিশাল ঢেউয়ের ধাক্কায় সাগরে পড়ে গিয়েছিলেন ল্যাকলান। পরে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে ভাই এউন তাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন।
চার মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা বইঠা বেয়ে তীরে পৌঁছানোর পর তারা নিজেদের তৈরি নৌকা ‘রোজ এমিলি’ নিয়ে ব্যাগপাইপ বাজান এবং স্কটল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও ব্রিটেনের পতাকা ওড়ান। মা শিলা এবং পরিবার-পরিজন তাদের অভ্যর্থনা জানান। আনন্দঘন সেই মুহূর্তে ভাই এউন রসিকতা করে বলেন, ‘পিৎজা আর বিয়ার আছে তো? আমরা খুব প্রয়োজন বোধ করছি।’
সিএনএন জানিয়েছে, এই যাত্রায় রাশিয়ার অভিযাত্রী ফেদর কোন্যুখভের রেকর্ডও ভেঙেছেন তিন ভাই। ২০১৪ সালে এককভাবে চিলি থেকে অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত বইঠা বেয়েছিলেন ফেদর।
তবে স্কটিশ তিন ভাইয়ের লক্ষ্য শুধু রেকর্ড গড়া ছিল না। ‘ম্যাকলিন ফাউন্ডেশন’ নামে নিজস্ব একটি দাতব্য সংস্থার মাধ্যমে তারা মাদাগাস্কারে নিরাপদ পানির প্রকল্পে অর্থ সংগ্রহ করছেন।
প্রশান্ত মহাসাগর জয়ের এই অভিযানে তারা ১০ লাখের বেশি পাউন্ড সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছেন, যা দিয়ে ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষের জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে। ইতিমধ্যেই তারা প্রায় ৮৫১ হাজার পাউন্ড সংগ্রহ করেছেন।
এউন জানান, পারিবারিক বন্ধনই তাদের সবচেয়ে বড় শক্তি ছিল। কঠিন পরিস্থিতিতেও তারা ইতিবাচক মনোভাব ধরে রেখেছিলেন। জেমি বলেন ‘আমাদের খোলামেলা যোগাযোগই সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।’
এর আগেও তারা সমুদ্রযাত্রায় বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন। ২০২০ সালে ৩৫ দিনে আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে ৩৫ দিনে তিনটি রেকর্ড স্থাপন করেছিলেন। এবার তারা বিশ্বের সবচেয়ে বড় জলভাগে ঝুঁকি নিয়েই নেমেছিলেন এবং সফল হয়েছেন।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন