শনিবার, ২রা আগস্ট ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৮ই শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** মালিক-ডি ভিলিয়ার্সদের ফাইনাল আজ, খেলা দেখবেন কোথায় *** আমেরিকার বাজারে শুল্ক কমেছে, বাংলাদেশে স্বস্তি *** ফল দেখলেই বুঝবেন, কাজটা ঠিক হয়েছে কী না: খলিলুর রহমান *** ইনার হুইল ক্লাবের উদ্যোগে দরিদ্র ছাত্রীদের জরায়ুমুখের ক্যানসার প্রতিরোধে টিকা দান *** চোরা শিকার রুখতে গন্ডারের শিংয়ে তেজস্ক্রিয় পদার্থ! *** দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না *** বাংলাদেশের জন্য পাল্টা শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশ করল আমেরিকা *** জিম্বাবুয়েকে বিধ্বস্ত করে ফাইনালে বাংলাদেশ *** মেসির কারণেই সেদিন চুপ ছিলেন উরুগুয়ের ফুটবলার *** সাংবাদিক হত্যা মামলার আসামি চেয়ারম্যান পদ ফিরে পাওয়ায় বকশীগঞ্জে বিক্ষোভ

বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস

তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ি

সম্পাদকীয়

🕒 প্রকাশ: ০৭:০৪ অপরাহ্ন, ৩১শে মে ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

৩১শে মে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। তামাক চাষ, তামাকজাত পণ্য উৎপাদন ও ব্যবহার এবং তামাকের বর্জ্য পরিবেশের জন্য কতটা ক্ষতিকর, সে বিষয়ে জনসাধারণ এবং নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এদিনকে বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এ বছর বাংলাদেশে দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ‘তামাক কোম্পানির কূটকৌশল উন্মোচন করি, তামাক ও নিকোটিনমুক্ত বাংলাদেশ গড়ি।’ দিবসটি সরকার, জনস্বাস্থ্য বিষয়ক ও ধূমপনবিরোধী বিভিন্ন সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালন করছে।

তামাক খুব নেশাদায়ক পদার্থ। এতে আগুন দিয়ে সিগারেট, বিড়ি, চুরুট, হুক্কা ও অন্যান্য ধূমপানের সামগ্রী প্রস্তুত করা হয়। ধূমপান ছাড়াও তামাক নানাভাবে ব্যবহার হয়, যেমন চিবিয়ে (জর্দা, যা পানের সাথে খাওয়া হয়), ঠোঁটের ফাঁকে গুঁজে (যেমন গুল), বা নাকে ঠুসে (নস্যি)।

বর্তমানে তামাকজনিত কারণে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী প্রায় ৬০ লাখ মানুষ মারা যান। সেজন্য বিশ্বজুড়ে ২৪ ঘণ্টা বা ১ দিন অন্তত  তামাক সেবনের সব প্রক্রিয়া থেকে বিরত রাখতে উৎসাহিত করার জন্য দিবসটি পালন করা হয়। দিবসটির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হলো মানুষকে তামাক ব্যবহারে  নিরুৎসাহিতকরণ এবং স্বাস্থ্যের ওপর তামাকের নেতিবাচক প্রভাবের ফল জানানো। 

বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ‘প্রগতির জন্য জ্ঞানের’ (প্রজ্ঞা) তথ্যমতে,তামাক চাষ কৃষকের স্বাস্থ্য, মাটির স্বাস্থ্য এবং সার্বিকভাবে গোটা জনস্বাস্থ্য ও পৃথিবীর স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। দীর্ঘমেয়াদে বৈশ্বিক প্রতিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং খাদ্য সংকট সৃষ্টিতেও তামাক ভূমিকা রাখে। তাদের তথ্যে আরো বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান খাদ্য সংকটের পেছনে সংঘাত-যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাবের পাশাপাশি তামাক চাষের একটি প্রভাব রয়েছে।

বর্তমানে পৃথিবীর ১২৫টিরও বেশি দেশের প্রায় ৪ মিলিয়ন হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়। শীর্ষ তামাক উৎপাদনকারী দেশগুলোর অধিকাংশই নিম্ন ও মধ্যম আয়ের। তামাক চাষে ব্যবহৃত মোট জমির পরিমাণের দিক থেকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩তম। বিশ্বের মোট তামাকের ১ দশমিক ৩ শতাংশই উৎপাদিত হয় বাংলাদেশে।

পৃথিবীব্যাপী উৎকৃষ্ট মানের জমি ক্রমবর্ধমান হারে তামাক চাষে ব্যবহৃত হওয়ায় ফসলের জমি ক্রমশ কমছে। এসব জমি খাদ্য ফসল ফলানোর কাজে ব্যবহার করা গেলে লাখ লাখ মানুষের খাদ্য চাহিদা পূরণের পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তার সংকট মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা সম্ভব হতো।

তামাক চাষে প্রায় নয় মাস সময় লাগে। ফলে সেসব জমিতে অন্য ফসল হওয়ার কোনো সুযোগ থাকে না। তামাক চাষ যেহেতু মাটির উর্বরতা কমায়, তাই পরবর্তীকালে ওই জমিতে অন্যান্য ফসল উৎপাদনের ক্ষমতাও কমতে থাকে। এছাড়া একই জমিতে পরপর দুইবার বা এর বেশি ফসল উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হয়।

তামাক চাষ টেকসই খাদ্য নিরাপত্তার জন্য হুমকি। বাংলাদেশে আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ দিনদিন কমে যাচ্ছে। তামাক চাষের কারণে খাদ্যশস্য আবাদের জমি ব্যাপকভাবে হ্রাস পাচ্ছে। এক একর জমিতে তামাক চাষ মানে সেখানে খাদ্যশস্যের জমি আরো কমে যাওয়া। জলবায়ু পরিবর্তন, যুদ্ধ এবং নানাবিধ বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ কারণে বাংলাদেশের জন্য খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি ক্রমশ অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

বাংলাদেশের ৪ কোটিরও বেশি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ অফিস, বাড়ি কিংবা খোলা জায়গায় পরোক্ষ ধূমপানের শিকার, যা স্বাস্থ্যখাতে রোগীর বাড়তি চাপের সৃষ্টি করছে। তামাক চাষের কারণে আবাদযোগ্য জমি, বনভূমি ও মৎস্যক্ষেত্র প্রভৃতি সীমিত প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর ব্যাপক চাপ পড়ছে। তামাক পরিবেশ, জলবায়ু এবং খাদ্য নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। সরকারের উচিত হবে, শক্তিশালী আইন ও কর পদক্ষেপের মাধ্যমে তামাকের আগ্রাসন বন্ধ করা ও নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তোলা।

এইচ.এস/

বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন