ফাইল ছবি (সংগৃহীত)
লাগামহীন ডিমের বাজারে অস্থিরতা বেড়েই চলছে। গত এক মাসের ব্যবধানে ডজনে ২০ টাকার বেশি দাম বেড়েছে। এখন ক্রেতাকে এক পিস ডিম কিনতে ১৫ টাকা গুনতে হচ্ছে। দামে সর্বকালের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। ডিম নিয়ে বাজারের পাশাপাশি স্যোসাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ধরনের ট্রল হচ্ছে। মজা করে বলা হচ্ছে, পানির দামে বিক্রি হচ্ছে ডিম। মানে বাজারে এক বোতল মিনারেল পানির দাম পনের টাকা, অন্যদিকে একটি ডিমের দামও পনের টাকা।
এ সময় টক অব দ্য টাউন হলো ডিমের দাম। ডিমের মতো সহজলভ্য প্রোটিন আর ছিল না। কিন্তু বর্তমান সময়ে বাচ্চাদের মুখে প্রোটিন তুলে দেওয়ার আর সুযোগ নেই। সাধারণ মানুষ ডিম কেনার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলেছে। মানুষের প্রাত্যহিক জীবনে ডিম খুবই দরকারি। অল্প দামে ডিম আর ব্রয়লার মুরগি খেতে পারতো।দেশের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের কাছে বহুদিন ধরেই গরু বা খাসির মাংসের দাম নাগালের বাইরে। এখন ডিমের অগ্নিমূল্যর কারণে সেটা খাওয়া যাচ্ছে না। মাছের দামও অস্বাভাবিক বেড়েছে। শাকসবজির দামও চড়া।এ অবস্থায় মানুষ খাবে কি?
সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) সবশেষ তথ্য বলছে, রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খুচরা প্রতি হালি ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫৮-৬০ টাকা, এক সপ্তাহ আগে ছিল ৫৩-৫৫ টাকা। আর একমাস আগে দাম ছিল ৫০-৫২ টাকা হালি। আর দুই -তিন মাস আগে যা ছিল ৪২ -৪৫ টাকা। অথচ সরকার-নির্ধারিত দাম অনুযায়ী, খুচরায় ডিম বিক্রি হওয়ার কথা প্রতি পিস ১১ টাকা ৮৭ পয়সা এবং হালি ৪৭-৪৮ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি পর্যায়ে ডিমের দাম বাড়ায় খুচরাতেও বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে।
বাজারে ডিমের অস্বাভাবিক দামের লাগাম টানতে গত বছর আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। পাশাপাশি বেঁধে দেয়া হয়েছিল প্রতি পিস ডিমের দাম। এতে নিয়ন্ত্রণে আসে বাজার। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আসার পরই একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে ডিমের বাজারে আবারো বেড়েছে অস্থিরতা। বাড়তে বাড়তে দাম এখন আকাশছোঁয়া অবস্থায় চলে গেছে। লাগাম টানতে গত সেপ্টেম্বরে বর্তমান সরকার ডিম আমদানির অনুমতি দেয় এবং উৎপাদক, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে ডিমের দাম বেঁধে দেয়। কিন্তু তাতেও বাজারে দাম কমেনি, স্বস্তি আসেনি।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে ডিমের দাম। কিন্তু সেই সিন্ডিকেট সরকারকে থোড়াই কেয়ার করছে। সিন্ডিকেট কারসাজি করে বিভিন্ন অজুহাতে ডিমের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। মনে হচ্ছে সিন্ডিকেটের কাছে সরকার অসহায়। তারা এতটাই শক্তিশালী, তাদের দৌরাত্ম্যে ঠেকাবে কে?
ওআ/ আই.কে.জে/