সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। ছবি: সংগৃহীত
চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছেন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তার হঠাৎ বিদেশযাত্রা এবং তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া হত্যা মামলাকে কেন্দ্র করে যে পালিয়ে যাওয়ার গুঞ্জন উঠেছিল, দেশে ফিরে তার অবসান ঘটালেন তিনি।
গতকাল রোববার (৮ই জুন) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে (টিজি-৩৩৯) তিনি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। রাত ১টা ৪৫ মিনিটে হুইলচেয়ারে করে তিনি ইমিগ্রেশন কাউন্টারে যান। প্রায় এক ঘণ্টা পর রাত পৌনে ৩টার দিকে তার ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় এবং রাত ৩টায় তিনি বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।
বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এস এম রাগীব সামাদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হয়েছে এবং তিনি বিমানবন্দর ত্যাগ করেছেন।
গত ৮ই মে রাতে থাই এয়ারওয়েজের টিজি-৩৪০ নম্বর ফ্লাইটে চিকিৎসার জন্য ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন আবদুল হামিদ।
আবদুল হামিদের বিদেশযাত্রা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। অনেকে এটিকে ‘পালিয়ে যাওয়া’ বলে মন্তব্য করেন। যদিও ইমিগ্রেশন ও সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা তখন দাবি করেছিলেন, তার নামে কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল না এবং তিনি চিকিৎসার জন্য যাচ্ছিলেন।
তবু অন্তর্বর্তী সরকার তিনজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে ব্যবস্থা নেয়। তারা হলেন—ইমিগ্রেশন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাহসিনা আরিফ, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. আজহারুল ইসলাম এবং এসবির এটিএসআই মো. সোলায়মান।
২০২৪ সালের আগস্টে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে সহিংসতায় সহস্রাধিক প্রাণহানির ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার দলের লোকজনের বিরুদ্ধে সারাদেশে মামলা হয়। এরই অংশ হিসেবে চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ সদর থানায় আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়, যাতে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের নামও ছিল।
২০১৩ সালের মার্চে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর স্পিকারের দায়িত্বে থাকা আবদুল হামিদ ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২৪শে এপ্রিল, ২০১৩ সালে তিনি ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন এবং পরে ২০১৮ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে ২১তম রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০২৩ সালের ২৪শে এপ্রিল তার রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষ হয় এবং তার স্থলাভিষিক্ত হন মো. সাহাবুদ্দিন।
এইচ.এস/
খবরটি শেয়ার করুন