ছবি: সংগৃহীত
ভবিষ্যতের কথা ভাবলেই কি তা সত্যি হয়ে যায়? এ প্রশ্ন অনেকের মনে এলেও উত্তরটা মোটেও জাদুবিদ্যার মতো নয়—বলেছেন নিউরোসায়েন্টিস্ট সাবিনা ব্রেনান। সম্প্রতি প্রকাশিত তার বই ‘দ্য নিউরোসায়েন্স অব ম্যানিফেস্টিং’-এ তিনি জানিয়েছেন, ‘ম্যানিফেস্টেশন’ বা মনে মনে ভবিষ্যতের ছবি কল্পনা করার অভ্যাস আমাদের মস্তিষ্কে বাস্তব পরিবর্তন আনতে পারে।
সাবিনা ব্যাখ্যা করেন, ‘দ্য সিক্রেট’ নামে জনপ্রিয় একটি বই থেকে ম্যানিফেস্টেশনের ধারণা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এ ধারণা থেকে অনেকে বলতে শুরু করেন, আপনি যা চান—ভালোবাসার সম্পর্ক, চাকরি বা সাফল্য—তা শুধু কল্পনা করলেই মিলে যেতে পারে। কেউ কেউ এটিকে ‘জগৎকে বার্তা পাঠানো’ বা ‘কোয়ান্টাম শক্তি’ দিয়ে ব্যাখ্যা করতে চান। কিন্তু বিজ্ঞানসম্মতভাবে এগুলো ভিত্তিহীন।
তবে সাবিনা মত দিয়েছেন, ভবিষ্যৎ অনেক সময় কল্পনার সঙ্গে মিলে যাওয়ার পেছনে রয়েছে বাস্তব মনস্তাত্ত্বিক ও স্নায়ুবৈজ্ঞানিক ভিত্তি। তার মতে, ম্যানিফেস্টেশন মানে শুধু মনে মনে ভাবা নয়; বরং একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যকে কল্পনা করে সেই অনুযায়ী প্রতিদিনের আচরণ ও মনোভাব গঠন করা। 'নিউ-সায়েন্টিস্টকে’ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আইরিশ নিউরোসায়েন্টিস্ট সাবিনা ব্রেনান এসব কথা বলেন।
এ প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ হলো স্বয়ং-সহানুভূতি। অর্থাৎ, নিজের ভুল বা দুর্বলতার জন্য নিজেকে কঠোরভাবে দোষারোপ না করে সহানুভূতির সঙ্গে বোঝা। গবেষণায় দেখা গেছে, এতে মস্তিষ্কের অ্যামিগডালায় চাপ কমে, যা উদ্বেগ ও মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে।
এরপর আসে ভিশন বোর্ড বা ভবিষ্যতের চিত্রাঙ্কন। এটি আমাদের মস্তিষ্কের স্যালিয়েন্স নেটওয়ার্ক সক্রিয় করে, যার মাধ্যমে আমরা লক্ষ্যভিত্তিক তথ্যকে বেশি গুরুত্ব দিই এবং উপযুক্ত সুযোগগুলো চিনতে পারি। সাবিনা বলেন, ‘মস্তিষ্ক সবকিছু দেখে না, যা আপনার দরকার সেটা বেছে নেয়। তাই আপনি যা খুঁজছেন, তা আগে থেকে চিহ্নিত করলে মস্তিষ্কও সেটি চিনে নিতে পারে।’
তিনি ম্যানিফেস্টেশনের সঙ্গে সিবিটি বা কগনিটিভ বিহেভিয়ারাল থেরাপির মিলও তুলে ধরেন। সিবিটি যেমন চিন্তাভাবনার পরিবর্তনে আচরণ বদলায়, তেমনি ম্যানিফেস্টেশন সচেতন চিন্তার মাধ্যমে অভ্যাস গড়ে তোলে।
এইচ.এস/
খবরটি শেয়ার করুন