ছবি - সংগৃহীত
বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকা বরাবরই এক থেকে দশের মধ্যে অবস্থান করছে। গত ১৪ই অক্টোবর সোমবার ১৭৩ স্কোর নিয়ে পাঁচ নম্বরে অবস্থান করেছে ঢাকা। ২৪৫ স্কোর নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করেছে ভারতের দিল্লি। ২২৯ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর। ১৯৬ স্কোর নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের কিনশাসা এবং ভারতের আরেক শহর কলকাতা ১৭৪ স্কোর নিয়ে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। তারপরই ঢাকার অবস্থান।
এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) অনুযায়ী, ০১ থেকে ৫০ পর্যন্ত বাতাসের মান খুব ভালো। ৫০ থেকে ১০০ পর্যন্ত বাতাসের মান মোটামুটি ভালো। ১০১ থেকে ১৫০ এর মধ্যে হলে বাতাসের মান ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’, ১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোরকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়। ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়, ৩০১+ একিউআই স্কোরকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতর থাকতে বলা হয়। অন্যদেরকেও বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়।
বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের ৫টি বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে। সেগুলো হলো- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)। ঢাকা মহানগরী দীর্ঘদিন ধরেই বায়ু দূষণে ভুগছে। এখানের বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে বেশি অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়। তবে এবার শীত আসার আগেই ঢাকার বাতাস অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠছে। যা খুবই উদ্বেগজনক।
২০১৯ সালের মার্চ মাসে বিশ্বব্যাংক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের যৌথ প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকার বায়ু দূষণের প্রধান উৎস তিনটি। ঢাকার চারপাশে ইটভাটাগুলোর ধোঁয়া, মাত্রাতিরিক্ত যানবাহনের দূষিত ধোঁয়া, নির্মাণ সাইটের ধুলা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্যমতে, বায়ু দূষণের ফলে স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যানসার ও তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রেমণের হার বেড়ে যায়। শুধু বায়ু দূষণজনিত কারণে প্রতিবছর ৭০ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।
বায়ু দূষণের মহানগরী ঢাকা অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় আছে। এই অবস্থা থেকে ঢাকার মানুষকে স্বাস্থ্যকর পরিবেশে রাখতে হলে সুদূরপ্রসারী সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
আই.কে.জে/