রবিবার, ৮ই জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৪শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নির্বাচন নিয়ে কথা বলা সেনাবাহিনীর যৌক্তিক অধিকার

উপ-সম্পাদকীয়

🕒 প্রকাশ: ০৭:৩৯ অপরাহ্ন, ২৪শে মে ২০২৫

#

ইনসানিয়াত বিপ্লবের চেয়ারম্যান ইমাম হায়াত। ছবি: সংগৃহীত

মেজবাহ উদ্দিন

দেশের জনগণকে কয়েকটি রাজনৈতিক বিদ্যমান বাস্তবতা ও ‘লিগ্যাল ইস্যু’ মেনে নেওয়া উচিত। যেমন- বর্তমানে দেশে যেই সরকার (অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার) আছে, সেটা কোনো নির্বাচিত সরকার নয়। অনির্বাচিত সরকার। অর্থাৎ, এ মুহূর্তে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচিত সরকার নেই, এটাই হলো ‘ফ্যাক্ট’।

আরেকটা ‘ফ্যাক্ট’ হলো ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার ভারতে চলে যাওয়ার পরের বাংলাদেশ। ক্ষমতাচ্যুত হয়ে তার দেশত্যাগের পর ৫ই থেকে ৮ই আগস্ট (২০২৪ সাল) তিনদিন পর্যন্ত দেশে একটা ‘পাওয়ার ভ্যাকুয়াম’,বা নেতৃত্ব শূন্যতা তৈরি হয়। দেশ তখন সরকারহীন অবস্থায় ছিল। সেই অভিভাবকহীন অবস্থায় রাষ্ট্র যার হাতে যায়, তার নাম সেনাবাহিনী।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তখন যথেষ্ট ‘ম্যাচিউরিটি’ ও ‘ইন্টিগ্রিটির’ পরিচয় দিয়ে সেই ‘পাওয়ার ভ্যাকিউম’কে নিজেরা পূরণ না করে একটা ‘ডেমোক্রেটিক প্রসেসের’ দিকে যাওয়ার পথ, অর্থাৎ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার আসার পথ করে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের মাধ্যমে। মূলত সেনাবাহিনীই অন্তর্বর্তী সরকারের মূল নিয়োগকারী, সেনাবাহিনী চেয়েছে বলেই একটা অন্তর্বর্তী সরকারের এক্সিস্টেন্স আমরা দেখছি, না হলে ৫ই আগস্টের পর সেনা শাসনই ইমিন্যান্ট ছিল।

তাই যারা এ তর্ক করেন যে, নির্বাচন কবে হবে- এটা সেনাবাহিনীর বিষয় না বা সেনাবাহিনী কেন এ ব্যাপারে মতামত দেয়, তাদের বুঝতে হবে যে, তাদের এ তর্ক প্রযোজ্য হতো যদি দেশে একটা নির্বাচিত সরকার থাকতো। কিন্তু দেশে তো আর কোনো নির্বাচিত সরকার নেই এখন। এ অন্তর্বর্তী সরকারকেও সেনাবাহিনীই ‘পাওয়ার ভ্যাকুয়াম সিচুয়েশনে’ নিজেরা ক্ষমতা না নিয়ে শপথ নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে যেনো ‘ডেমোক্রেটিক্যালি পাওয়ার অব ট্রানজিশন’ নিশ্চিত হয়।

তাই সেনাবাহিনীর অবশ্যই যৌক্তিক, ‘লিগ্যাল রাইটস’ আছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কথা বলার। সেনাবাহিনী নির্বাচন জলদি চাচ্ছে, এটা একটা গুড সাইন। এর মানে হলো তারা ‘ডেমোক্রেটিক ট্রান্সিশন এনশিউর’ করে তাদের মূল কাজে ফেরত যেতে চায়।

যারা ‘সেনাবাহিনী বনাম অন্তর্বর্তী সরকার’- এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চান, তারা রাষ্ট্রের চরম ক্ষতি বয়ে আনবেন। তাদের এ আকাঙ্ক্ষা সফল হলে বাংলাদেশকে পাকিস্তানের মতো ‘লং টার্ম ইনস্ট্যাবিলিটি’র দিকে নিয়ে যাবে। একটা রাষ্ট্রের সরকারও যখন ব্যর্থ হয়, তখন সেনাবাহিনীই শেষ আশ্রয় হয়ে দাঁড়ায়, এমতাবস্থায় সেনাবাহিনীর উপরই আস্থা রাখতে হয়।

সেনাবাহিনী নির্বাচন নিয়ে, করিডর নিয়ে, মব নিয়ে যা বলেছে, তা খুবই ‘সেন্স মেইক’ করে। জামায়াত-শিবির, সমন্বয়ক ও তাদের নিবন্ধন নিতে অক্ষম সরকারি দল, কিছু অপরিপক্ক ভিও ব্যবসায়ী ইউটিউবার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যে ‘প্রপাগাণ্ডা’ ছড়িয়ে বেড়ান, তা কোনো সুস্থ ‘সেন্স মেইক’ করে না।

এসব বাস্তবতা মেনে নিতে পারলে খুব দ্রুত ‘ট্রান্সিশন অফ পাওয়ার’ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। নির্বাচনের ক্রেডিবিলিটর ক্ষেত্রে ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ-এর (নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল) প্রস্তাবনা অনুযায়ী সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ তত্বাবধানে ডিজিটাল ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন কন্ডাক্ট করতে হবে। অন্যথায় আরো আন্তর্জাতিক পুরুস্কারজয়ী ব্যক্তিকে উপদেষ্টা বানিয়েও কোনো লাভ হবে না।

লেখক: স্পেন প্রবাসী।

আরএইচ/

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের বর্তমান পরিস্থিতি

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন