শনিবার, ১১ই অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৫শে আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** ‘কারা লুঙ্গি তুলে চেক করে মানুষ মেরেছে, তা সবারই জানা’ *** শান্তিতে নোবেলজয়ী মারিয়া মাচাদোকে অভিনন্দন জানালেন ড. ইউনূস *** শনিবার ভোরে দেশে ফিরছেন শহিদুল আলম *** ইসরায়েল থেকে মুক্ত শহিদুল আলম এখন তুরস্কে *** স্বামী নিখোঁজের পর দেবরের সঙ্গে বিয়ে, পরের দিনই হাজির স্বামী! *** সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর শরৎ উৎসব স্থগিত নিয়ে যা জানাল চারুকলা অনুষদ *** গাজায় যুদ্ধবিরতি ‘কার্যকর’, নিজ এলাকায় ফিরছেন ফিলিস্তিনিরা, সরছেন ইসরায়েলি সেনারা *** ট্রাম্প নোবেল শান্তি পুরস্কার না পাওয়ায় যা বলছে হোয়াইট হাউস *** তালেবানের সঙ্গে বৈঠকের পর কাবুলে পূর্ণাঙ্গ দূতাবাস চালুর ঘোষণা দিল্লির *** গুমের ঘটনায় ২৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ন্যায়বিচারের পথে অগ্রগতি: এইচআরডব্লিউ

সিএনএনের বিশ্লেষণে ইউক্রেন পরিস্থিতির জন্য যারা দায়ী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৭:২১ অপরাহ্ন, ৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৫

#

রাশিয়ার হামলায় নিহত ইউক্রেনীয় ও বিদেশি সেনাদের স্মরণে অস্থায়ী একটি মিনারের সামনে দিয়ে দৌড়ে যাচ্ছে এক শিশু। গতকাল ইউক্রেনের কিয়েভ শহরের ইনডিপেনডেন্স স্কয়ারে। ছবি: এএফপি

ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একই অবস্থানে রয়েছেন। তারা উভয়ে ইউক্রেনে শান্তি চান। তারপরও শান্তি আলোচনা ও প্রচেষ্টা বারবার ব্যাহত হচ্ছে। আলোচনা বেগবান না হয়ে বরং নিস্তেজ হয়ে পড়ছে।

এ পরিস্থিতির জন্য ইউরোপকে দায়ী করছেন ইউরোপীয় ও আমেরিকানরা। এদিকে আমেরিকা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট এখন ইউরোপকে আলাদা চোখে দেখছেন। যার কারণে আলাস্কা সম্মেলনের পর তিন সপ্তাহ ধরে ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের প্রচেষ্টা ব্যাহত হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার (৪ঠা সেপ্টেম্বর) এক ফোনকলের মাধ্যমে ইউরোপীয় নেতাদের আরও কিছু করার আহ্বান জানান ট্রাম্প। যদিও যুদ্ধের কূটনৈতিক তৎপরতা আমেরিকান ট্রান্স-আটলান্টিক মিত্রদের কাছ থেকে আসছে। যেকোনো শান্তিচুক্তির মাধ্যমে ইউক্রেনকে রক্ষা করতে নিরাপত্তার নিশ্চয়তার জন্য কাজ করছে তারা।

এদিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার এক দিন পর ইউক্রেন কূটনীতি সর্বশেষ মোড় নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেই সময় ট্রাম্প প্রতিবেদকদের বলেন, তিনি শিগগির পুতিনের সঙ্গে কথা বলার পরিকল্পনা করছেন। তারা মূলত কী করবেন, এ বিষয়ে আলাপ করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে রাশিয়ার ওপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে কি না, এমন প্রশ্ন এড়িয়ে যান তিনি।

গত বুধবার (৩রা সেপ্টেম্বর) ওভাল অফিসে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বলেন, পুতিন পরপর দুবার শান্তি আলোচনা এড়িয়ে গেছেন। যার মধ্যে সর্বশেষ গত শুক্রবার (৫ই সেপ্টেম্বর)  আলোচনায় বসার কথা ছিল। এভাবে আলোচনা এড়িয়ে গিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়ায় ধীরগতিতে এগোচ্ছেন পুতিন। ট্রাম্প আরও বলেন, ‘ইউক্রেন ইস্যুতে তার যেকোনো সিদ্ধান্ত থাকতে পারে। হয়তো তার সিদ্ধান্তে আমরা খুশি হব, নইলে না। আর যদি আমরা অখুশি হই, তাহলে দেখব, কী হয়।’

বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলেন ট্রাম্প। এ সময় আরও কিছু ইউরোপীয় নেতার সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

সেই সময় জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগ করার বিষয়ে আলাপ হয়েছে তাদের। শুধু তা-ই নয়, ইউক্রেন যুদ্ধ চালিয়ে যেতে রাশিয়াকে যারা অর্থের জোগান দিচ্ছে, তাদের ওপর চাপ প্রয়োগের বিষয়ে আলাপ হয়েছে।

কিন্তু এই আলোচনার পর আমেরিকার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠা না হওয়ার জন্য রাশিয়ার চেয়ে ইউরোপীয়রা বেশি দায়ী।

ফোনকলে আলাপের পর হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, এ বিষয়ে ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেছেন, রাশিয়া থেকে আগে ইউরোপকে তেল আমদানি বন্ধ করতে হবে। এটি মূলত ইউক্রেন যুদ্ধ চালিয়ে যেতে অর্থের জোগান দিচ্ছে।

এক হিসাবে দেখা গেছে, গত এক বছরে ইউরোপে তেল রপ্তানি করে ১.১ বিলিয়ন ইউরো আয় করেছে রাশিয়া। আরও বলা হয়, রাশিয়াকে যুদ্ধে অর্থের জোগান দিচ্ছে চীন। এই দেশকে অর্থনৈতিকভাবে চাপে ফেলার জন্য ইউরোপীয় নেতাদের আহ্বান জানান ট্রাম্প।

তিনি আরেকটি বিষয় উল্লেখ করে বলেন, ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়ার হুমকিতে রয়েছে। এর মধ্যে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করছে তারা। একই সময় রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে আমেরিকা ।

ইউক্রেন যুদ্ধে ট্রাম্পের মতো অনেকের বোঝাপড়া রয়েছে। ইউরোপের ওপর ট্রাম্পের চাপ অযৌক্তিক, এমনকি ভণ্ডামিপূর্ণ ছাড়া কিছুই নয়। তবে তিনি চান, রাশিয়ার তেল কেনা নিয়ে চীনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করুক ইউরোপ।

যদিও নিজে চীনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য প্রস্তুত নন। উচ্চ শুল্কের বাণিজ্যযুদ্ধের পর চীনের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা স্থবির হয়ে আছে। চীনের সঙ্গে এই পরিস্থিতিতে কিছু করা মানে ট্রাম্পের জন্য একটি চুক্তির সুযোগ হাতছাড়া হতে পারে।

ইউরোপীয় দেশগুলোর মতো ভারতকে বিবেচনা করছেন ট্রাম্প। এই দেশ ৫০ শতাংশ শুল্কের কবলে পড়েছে। রাশিয়া থেকে তেল আমদানির দায়ে তার ওপর এই শুল্ক আরোপ করা হয়। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ তিন দশক ধরে ভারতকে উদীয়মান এশিয়ান পরাশক্তি চীন থেকে দূরে রাখার প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করেছে।

ট্রাম্পের কৌশল এখানে কাজে আসেনি। কারণ, এই সপ্তাহে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের নিমন্ত্রণে বেইজিং সফরে যান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ সময় পুতিনের সঙ্গেও আলাপ করেন তিনি।

যা হোক, রাশিয়া থেকে তেল কেনা সহজ করার জন্য ইউরোপের ওপর চাপ দেওয়ায় কিছু হবে বলে মনে হয় না। তবে রাশিয়ার ওপর থেকে নির্ভরশীলতা কমানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে তারা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একসময় ইউরোপীয় ইউনিয়নে সবচেয়ে বড় তেল সরবরাহকারী ছিল রাশিয়া। কিন্তু এখন ইউরোপের অনেক দেশ রাশিয়ার তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

জে.এস/

ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়া ইউক্রেন

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250