শনিবার, ১১ই অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৫শে আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** ইরানের ওপর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার কবলে বাংলাদেশমুখী এলপিজির জাহাজ *** চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনকে নিয়ে গুজব, যা বললেন ছেলে জয় *** ফ্যাসিস্ট বুদ্ধিজীবীরা সব সময় ধর্ম পালনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা করেন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা *** বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি প্রদর্শনসংক্রান্ত অনুচ্ছেদ সংবিধান থেকে বিলুপ্তি চায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন *** ‘কারা লুঙ্গি তুলে চেক করে মানুষ মেরেছে, তা সবারই জানা’ *** শান্তিতে নোবেলজয়ী মারিয়া মাচাদোকে অভিনন্দন জানালেন ড. ইউনূস *** শনিবার ভোরে দেশে ফিরছেন শহিদুল আলম *** ইসরায়েল থেকে মুক্ত শহিদুল আলম এখন তুরস্কে *** স্বামী নিখোঁজের পর দেবরের সঙ্গে বিয়ে, পরের দিনই হাজির স্বামী! *** সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর শরৎ উৎসব স্থগিত নিয়ে যা জানাল চারুকলা অনুষদ

আওয়ামী লীগের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাচ্ছে আমেরিকা, ইউরোপের আপত্তি শরিয়া শাসনে!

বিশেষ প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ১০:১৪ অপরাহ্ন, ১০ই অক্টোবর ২০২৫

#

ফাইল ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি আমেরিকা সফর করে দেশে ফিরে চুপচাপ হয়ে গেছেন। হঠাৎ আওয়ামী লীগের জন্য আমেরিকা নতুনভাবে মায়াকান্না করছে। ইতিমধ্যে দেশের রাজনীতিতে যে নানারকম শূন্যতা তৈরি হয়েছে, এর পরিপ্রেক্ষিতে আমেরিকা যে স্বার্থগুলো পূরণ করতে চাচ্ছে, সেগুলো পূরণ ও সংরক্ষণ করা একেবারে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এ জন্য আওয়ামী লীগকে ছলে-বলে-কৌশলে সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করানো ও রাজনীতির মূল ধারায় ফিরিয়ে আনার জন্য গত তিন মাস ধরে নানা রকম চেষ্টা এবং তদবির চালিয়ে যাচ্ছে আমেরিকা। এই লক্ষ্যে দেশে রহস্যজনক বহু বৈঠক গোপনে হচ্ছে। এমন অভিমত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

তাদের দাবি, এক বছর আগেও আমেরিকার যে দৃষ্টিভঙ্গি ছিল আওয়ামী লীগের প্রতি, সেখানে সম্প্রতি কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। একাধিক রাজনীতিবিদ সুখবর ডটকমকে বলেন, দেশে বহু বৈঠক গোপনে হচ্ছে, যা দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারাও জানেন না। আবার শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কিছুদিন ধরে ধারাবাহিকভাবে আনুষ্ঠানিক বৈঠকও করছেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা। আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিদেশি কূটনীতিকদের তৎপরতা বেড়েছে। তারা কখনো আনুষ্ঠানিকভাবে, কখনো গোপনে রাজনীতিবিদদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। এসব বৈঠক ঘিরে রাজনীতির মাঠে নানা জিজ্ঞাসার জন্ম হচ্ছে।

সুইডেন, নরওয়ে, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূতেরা প্রায় দুই ঘণ্টা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা ও দলটির সাবেক সরকারের মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর রাজধানীর গুলশানের বাড়িতে দেখা করেন। অনেকে বলছেন, সেখানে আলোচনা হয়েছে কীভাবে আওয়ামী লীগকে একত্রিত ও শক্তিশালী করে রাজনীতিতে  ফিরিয়ে আনা যায়, কীভাবে আগামী সংসদ নির্বাচনে দলটির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নেতৃত্বে রেখে, নাকি তাকে দূরে রেখে অপেক্ষাকৃত স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কোনো নেতার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন হবে, সেই চেষ্টা করছেন পশ্চিমা কয়েকটি দেশের কূটনীতিকেরা।

আওয়ামী লীগের জন্য আমেরিকা হঠাৎ কেন মায়াকান্না করছে—এমন প্রশ্ন তুলেছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক গোলাম মাওলা রনি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রায় সবাই জানেন যে, ২০২৪ সালের ৫ই আগস্টে আওয়ামী লীগের ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পেছনে আমেরিকার হাত ছিল। এটাকে কেউ ডিপ স্টেট পলিসি বলছেন; কেউ ডোনাল্ড লু, পিটার হাসের কারসাজি বলছেন; কেউ এটাকে মৃদু সেনা অভ্যুত্থান বলছেন। আর অনেকেই সেনাবাহিনী, জনতা, ছাত্র— সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা বলছেন।' প্রধান উপদেষ্টা সম্প্রতি আমেরিকা ভ্রমণ করে দেশে ফিরে চুপচাপ হয়ে গেছেন বলেও তার দাবি।

তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে রাজনীতিতে নানারকম শূন্যতা তৈরি হয়েছে। সেই শূন্যতার পরিপ্রেক্ষিতে একটা ভালো নির্বাচন এবং আমেরিকা যে স্বার্থগুলো চাচ্ছে, সেই স্বার্থগুলো সংরক্ষণ করা একেবারে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এ জন্য আওয়ামী লীগকে ছলে-বলে-কৌশলে নির্বাচনে আনার জন্য, রাজনীতির মূলধারায় ফিরিয়ে আনার জন্য গত তিন মাস ধরে নানা রকম চেষ্টা এবং তদবির তারা চালিয়ে যাচ্ছে আমেরিকা। আওয়ামী লীগ পতনের পর দলটির প্রায় সব লোক মূল্যায়ন করার চেষ্টা করছেন যে, এটি কীভাবে হলো এবং এই ঘটনার সঙ্গে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে, আমলাতন্ত্রে, মিলিটারিতে কারা কারা জড়িত এবং সেভাবে তারা রাজনীতিতে ফেরার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’

রনি বলেন, বাংলাদেশে বহু বৈঠক গোপনে হচ্ছে। আমরা যে জিনিসগুলো দৃশ্যমান দেখেছি, যেগুলো অস্বাভাবিক; যেমন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে প্রধান বিচারপতির সাক্ষাৎ, সেনাপ্রধানের সঙ্গে বিএনপির মহাসচিবের সাক্ষাৎ—এই বিষয়গুলো অস্বাভাবিক। বিদেশি কূটনীতিবিদদের সঙ্গে প্রধান বিচারপতির সাক্ষাৎ, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সাক্ষাৎ, বাংলাদেশ থেকে উড়ে গিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ; আবার ড. ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের সাক্ষাৎ; এই বিষয়গুলো রাজনীতির জন্য অস্বাভাবিক এবং এই অস্বাভাবিকতা তখনই ঘটে, যখন কেউ অস্বাভাবিক কিছু করতে চায়।’

রনি বলেন, ‘আমেরিকা প্রয়োজনে যেকোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির সঙ্গে, সেটা একদিন আগে যাদের জঙ্গি বলেছে, একদিন আগে যাকে ফাঁসি দেওয়া হয়, তার স্ত্রী বা তার সন্তানের সঙ্গে তার পরদিন একই টেবিলে বসে তারা খেতে পারে। তাদের কাছে এটা কোনো ব্যাপার নয়। আওয়ামী লীগ তো জানে যে অতীতে আমেরিকান পলিসি এবং ভারতের যে পলিসি, সে পলিসি অনুযায়ী শেখ হাসিনা কীভাবে বিরোধী দলকে হ্যান্ডল করেছে। এটা শেখ হাসিনা ভালো করে জানেন। যেমন—২০১৮ সালে শেখ হাসিনাকে আইনগতভাবে শক্তিশালী করার জন্য সব রাজনৈতিক দলকে একত্রিত করে নির্বাচনে যে আনা হলো, এটার পেছনে আমেরিকার একটা পলিসি ছিল।’

সম্প্রতি ঢাকায় নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হ্যাকন আরাল্ড গুলব্রানসেন, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস লিনাস রাগনার উইকস এবং ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিক্স মলার আওয়ামী লীগের নেতা সাবের চৌধুরীর সঙ্গে তার গুলশানের বাড়িতে বৈঠক করেন। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে অত্যন্ত গোপনীয়তায় চলে এ বৈঠক। এ নিয়ে রাজনীতি চলছে তুমুল আলোচনা। বিষয়টিকে অনেকে দেখছেন, 'আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের রাষ্ট্রদূতদের আলাপ' হিসেবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান মনে করেন, দেশে ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলোর সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড থেকে সৃষ্ট বৈশ্বিক উদ্বেগের কারণে ইউরোপ আওয়ামী লীগকে কোনো ফর্মে ফেরত আনার ইঙ্গিত বহন করছে রাষ্ট্রদূতদের ওই বৈঠক।

তিনি বলেন, ইউরোপের এই রাষ্ট্রদূতেরা এমন এক সময় বৈঠকটি করলেন, যখন এটা প্রায় নিশ্চিত যে আওয়ামী লীগ আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। প্রধান উপদেষ্টা সম্প্রতি বিদেশি সাংবাদিক মেহেদি হাসানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন। এখন ইউরোপের এই রাষ্ট্রদূতেরা কি এ বিষয়ে রাজি হচ্ছেন না? তারা কি চাচ্ছেন ভিন্ন কিছু হোক? দেশে সাংবিধানিকভাবে ধর্মীয় রাজনীতি করে এ ধরনের দল নিয়ে পশ্চিমাদের খুব বেশি সমস্যা আছে বলে জানা যায় না। বরং তারা এ ধরনের দলগুলোকে সহায়তা দেওয়ার পক্ষে, কারণ তারা দেখাতে চায় সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে ইসলামী রাজনীতি হতে পারে। এটা দেওয়া হলে কট্টরপন্থীদের ক্ষমতা দখল করার রাজনীতি থেকে সরিয়ে রাখা যায়।'

তিনি বলেন, 'এ ব্যাপারে ইউরোপ সম্ভবত পুরোপুরি একমত নয়। তারা জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের ব্যাপারে খুব ইতিবাচক ধারণা রাখে বলে মনে হয় না। এ জন্য ইউরোপকে খুব বেশি দায়ী করা যাবে না। দল দুটি ক্ষমতায় এলে শরিয়া আইন কায়েম করবে। সাংবিধানিক রাজনীতি করে শরিয়া কায়েম করার কথা বললে এই প্রশ্ন উত্থাপিত হয় যে এই দলগুলো গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে খাপসই কি না? জামায়াতের নেতৃত্বে যদি একটা ইসলামী মোর্চা হয়, তাহলে দেশে বিকল্প শক্তিটা তারাই হবে, যারা ইসলামী শরিয়া কায়েম করবে। বিষয়টিতে পশ্চিমাদের হয়তো আপত্তি আছে। ইউরোপের আপত্তিই বেশি আমেরিকার চেয়ে। সেই প্রেক্ষাপটে তারা হয়তো ভাবছে একটা রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ।'

এদিকে সাবের হোসেনের বাসায় কূটনীতিকদের বৈঠক নিয়ে বিএনপি কোনো চিন্তা করে না বলে মন্তব্য করেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘কূটনীতিকেরা কার বাসায় বৈঠক করবেন, সেটা নিয়ে বিএনপি চিন্তা করে না। কতজন কত জায়গায় মিটিং করবেন, এ ব্যাপারে বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য নেই। কারও বাসায় বৈঠক করলে রাজনীতিতে কিছু আসে যায় না। কেউ জানে না, এমনও অনেক মিটিং হচ্ছে। এগুলোর কোনো গুরুত্ব নেই আমাদের কাছে। দেশের জনগণ কী চায়, সেটিই বড় বিষয়। বাংলাদেশের জনগণের সিদ্ধান্তই গুরুত্বপূর্ণ।’

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সন্দেহ, জামায়াত এখন ‘আওয়ামী লীগের সাথে’ কাজ করছে। এখন আবার তারা স্বরূপে বেরিয়েছে এবং আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন চাচ্ছে, ভারতের সাথে ভালো সম্পর্ক চাচ্ছে। বরাবরই আমার মনে হয়েছে, দলটি আওয়ামী লীগকে সন্তুষ্ট করার জন্য কাজ করছে। তারা এ দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে শহীদ জিয়াউর রহমানের কাছ থেকে। তারা নিষিদ্ধ দল ছিল। শহীদ জিয়া তাদেরকে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছেন।'

আওয়ামী লীগ

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

ইরানের ওপর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার কবলে বাংলাদেশমুখী এলপিজির জাহাজ

🕒 প্রকাশ: ০২:২৩ পূর্বাহ্ন, ১১ই অক্টোবর ২০২৫

বাড়ি না থাকুক, বেঁচে থাকা তো যাবে

🕒 প্রকাশ: ০১:৪৭ পূর্বাহ্ন, ১১ই অক্টোবর ২০২৫

চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনকে নিয়ে গুজব, যা বললেন ছেলে জয়

🕒 প্রকাশ: ০১:৩৬ পূর্বাহ্ন, ১১ই অক্টোবর ২০২৫

ফ্যাসিস্ট বুদ্ধিজীবীরা সব সময় ধর্ম পালনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা করেন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

🕒 প্রকাশ: ০১:২৯ পূর্বাহ্ন, ১১ই অক্টোবর ২০২৫

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি প্রদর্শনসংক্রান্ত অনুচ্ছেদ সংবিধান থেকে বিলুপ্তি চায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন

🕒 প্রকাশ: ০১:২৩ পূর্বাহ্ন, ১১ই অক্টোবর ২০২৫

Footer Up 970x250