ছবি: সংগৃহীত
দেশের বিভিন্ন এলাকার নারী নির্যাতনের ঘটনায় সরকার এক ধরনের ‘নীরব’ ভূমিকা পালন করছে এবং সরকারের এই ‘চুপ’ থাকার কারণে একটি নির্দিষ্ট মতাদর্শের মানুষ ক্রমাগত এসব হয়রানিমূলক কর্মকাণ্ড করার সাহস পাচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। অবশ্য সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, তারা কখনোই এসব ঘটনায় ‘নীরবতা’ পালন করেনি।
নারীদের হয়রানি বা নিপীড়নের ব্যাপারে শুধু যে সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, তা নয়; দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ‘অবস্থান’ নিয়েও মানুষের মনে কিছু প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলোও দাবি করছে, তারা কখনও ‘নীরব’ থাকেনি।
এসব প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে নারীদের সঙ্গে যেসব নেতিবাচক বিষয় ঘটছে, তার কোনোটার সঙ্গেই আমরা অপরিচিত নই।’
তিনি বলেন, ‘এই ধরনের ঘটনা সবসময়ই ঘটে। রাস্তায় হাঁটলে একটা না একটা মন্তব্য জীবনে শুনতে হয়েছে। কিন্তু আমাদের সরকারের অবস্থান হলো, নারীর প্রতি কোনো ধরনের সহিংসতা বা কোনো প্রকার অশোভন-অগ্রহণযোগ্য আচরণ সিরিয়াসলি দেখে।’
সরকার যে সরব, তার উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘শেরপুরে নারীদের ফুটবল খেলতে বাধা দেওয়ার ঘটনায় আমরা বলেছি যে, এটা মানা যাবে না, ফুটবল খেলতে দিতেই হবে... মেয়েদের সিগারেট খাওয়া নিয়ে যা হলো, তা নিয়েও সরকার মোটেও নরম অবস্থানে নেই।’ তিনি বিবিসি বাংলাকে এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টাকে সরকারের ‘নীরবতার’ প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘চুপ কিভাবে থাকল? একটি মেয়েকে বলা হলো, তার গায়ে ওড়না নেই। তারপর অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হলো... বিষয়টা হলো, আইনশৃঙ্খলার যে পরিমাণ উত্তরণ ঘটার কথা, তা ঘটেনি। এটি তো বাস্তব কথা। এখানে সমস্যা রয়ে গেছে।’
তিনি মনে করেন, ‘বিষয়গুলোর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হচ্ছে না। আগে থেকেই যদি সবাইকে ওই বার্তা দিতে পারতাম যে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যথেষ্ট পরিমাণ শক্ত, তাহলে মানুষ দ্বিতীয়বার চিন্তা করত।’
তিনি জানান, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রথম থেকেই বলছে যে, মব জাস্টিস, মোরাল পুলিশিং মেনে নেব না। তারপরও ঘটনাগুলো ঘটছে এবং আমরা তা স্বীকারও করছি।’
তিনি বলেন, ‘একটি বিষয়ে বিভিন্ন গোষ্ঠীর ভিন্ন ভিন্ন মতামত থাকতেই পারে। কিন্তু কোনো গোষ্ঠী তার মতামত অন্য গোষ্ঠীর ওপর চাপিয়ে দিতে পারবে না, নারীর ওপর তো পারবেই না।’
এইচ.এস/
খবরটি শেয়ার করুন